গ্রিন টি নাকি ব্ল্যাক কফি: ওজন হ্রাসে কোনটি ভালো?
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে, গ্রিন টি এবং ব্ল্যাক কফি দুটিই পছন্দসই পানীয়। উভয় পানীয়ই প্রচলিত চা এবং দুধ কফির চেয়ে ভাল বলে বিবেচিত হয়। কারণ ক্যালোরি কম থাকায় সহজেই ওজন হ্রাস করে।
গ্রিন টি এবং ব্ল্যাক কফি উভয়ই স্বল্প ক্যালোরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। যা বিপাক ক্রিয়া ভালো রাখে এবং ফ্যাট-বার্নিং প্রক্রিয়া বাড়িয়ে দ্রুত ওজন হ্রাস করতে পারে। তবে দীর্ঘদিনের বিতর্ক রয়েছে যে, ওজন হ্রাস এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ভাল কোনটি? চলুন জেনে নেয়া যাক কোনটি সবচেয়ে ভালো-
ওজন হ্রাসের জন্য গ্রিন টি
গ্রিন টি ওজন হ্রাসকারীদের প্রিয় পানীয়। এই পানীয়টি কেবল ওজন হ্রাস করার জন্যই পরিচিত নয় এটির অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। গ্রিন টির উপকারিতা ক্যাফিন এবং ক্যাটচিনের উপস্থিতির (এক ধরণের ফ্ল্যাভোনয়েড) কারণে। ক্যাটিচিন এক ধরণের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। যা দেহের অতিরিক্ত মেদ ভেঙে ফেলতে পারে।
ওজন হ্রাস ছাড়াও উচ্চ কোলেস্টেরল, হার্টের সমস্যা এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভোগা ব্যাক্তিদের জন্যও গ্রিন টি ভালো। চায়ের পুষ্টি সমৃদ্ধ উপাদান আলঝাইমার রোগের ঝুঁকিও হ্রাস করে। চায়ের মধ্যে ভিটামিন বি, ফোলেট, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে। যা ঐতিহ্যবাহী দুধের চায়ে অনুপস্থিত।
ওজন হ্রাসের জন্য ব্ল্যাক কফি
ব্ল্যাক কফি খুব জনপ্রিয় একটি পানীয়। এটি অনেকেই ওজন হ্রাসের জন্য পছন্দ করেন। ব্ল্যাক কফি ঐতিহ্যবাহী দুধ কফির চেয়ে ভাল কারণ এটি চিনি এবং ক্রিম দিয়ে তৈরি হয় না। গ্রিন টির মতো কফিতেও রয়েছে ক্যাফিন যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। ব্ল্যাক কফি বিপাক ক্রিয়াকলাপ বাড়িয়ে তোলে যা ক্ষুধা দমন করতে পারে।
ব্ল্যাক কফি খাওয়ার উপকারিতা কেবল ওজন হ্রাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এই পানীয়টিতে বেশ কয়েকটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন বি ২, বি ৩, বি ৫, ম্যাঙ্গানিজ, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় পুষ্টি রয়েছে। নিয়মিত ব্ল্যাক কফি পান করলে স্মৃতি এবং কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
কোনটি ভালো?
বিজ্ঞান অনুসারে উভয় পানীয়ই ওজন হ্রাস ও ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। কারণ ওজন হ্রাস করার ক্ষেত্রে দুটোই সমান। সামগ্রিক স্বাস্থ্য সুবিধার উপর ভিত্তি করে তুলনা করলে গ্রিন টি বেশি ভালো। কারণ চা পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পুষ্টি থাকে যা অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তবে গ্রিন টি বা ব্ল্যাক কফি যেটাই বেছে নিন সেগুলো পরিমিতভাবে গ্রহণ করুন। যে কোনো পানীয় অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
কোনো পানীয়ই একদিনে ২ কাপের বেশি গ্রহণ করা উচিত নয়। দিনের বেলায় অতিরিক্ত ক্যাফিন গ্রহণ ঘুমের চক্রকে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এমনকি হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও, ওজন হ্রাস করার জন্য শুধুমাত্র ডায়েট খুব বেশি কাজে দেয় না। দ্রুত ওজন হ্রাস করার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ব্যায়াম এবং সময়মতো ঘুমানো অতন্ত্য জরুরি।