বর্ষা মৌসুমে ঘরের দেয়ালে নোনা ধরে। বৃষ্টি শেষ হয়ে কড়া রোদ হলেই দেয়ালের পলেস্তার ফুলে ওঠে। এরপর ধীরে ধীরে ঝরে পড়ে। এমন সমস্যায় কমবেশি সবাইকে ভুগতে হয়।
তাই নিয়মিত বাড়িঘরের যত্ন নেওয়ার সময় এটাও খেয়াল রাখতে হবে, যাতে ড্যাম্প না ধরে। কয়েকটি বিষয়ে একটু খেয়াল রাখলে ড্যাম্প ধরার মতো সমস্যা থেকে অচিরেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
বিজ্ঞাপন
ড্যাম্প রোধে যা করবেন
১. ঘরের দেয়ালের কোথাও ড্যাম্প ধরলে, সেখানে কেন ড্যাম্প ধরছে সেটা দেখুন। বেসিন বা বাথরুমের পানি নিষ্কাশনে কোনও সমস্যা থাকলে এর পার্শ্ববর্তী দেওয়ালে ড্যাম্প হতে পারে। কোনও জায়গা থেকে অনবরত পানি চুঁইয়ে পড়ে দেওয়াল ভিজে যাচ্ছে কি না, সেটাও খেয়াল রাখুন।
বিজ্ঞাপন
২. ঘরের ভেন্টিলেশন ঠিক মতো হওয়া দরকার। না হলে তা থেকেও পানি চুঁইয়ে পড়ে দেওয়ালে ড্যাম্প ধরতে পারে। বর্ষার মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই এই বিষয়টি ঠিক করে নিন।
৩. অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বাড়ির ছাদে ফাটল ধরেছে, সেখান থেকে পানি চুঁইয়ে পড়ছে। এর ফলেও ড্যাম্প ধরতে পারে। এ রকম হলে ফাটলটি মেরামত করে নিন।
৪. অনেক সময়ই বেশ কিছু আসবাব আমরা দেয়ালে লাগিয়ে রাখি। দীর্ঘদিন একই জায়গায় দেয়ালে আসবাব লাগানো থাকলেও ড্যাম্প ধরতে পারে। তাই আসবাবটি যদি ছোটখাটো হয়, তাহলে মাঝেমাঝে জায়গা পরিবর্তন করতে পারেন।
৫. নিয়মিত ঘরে আলো-বাতাস আসতে দিন। কারণ ঘর বন্ধ থাকলেই আর্দ্রতা জমে ড্যাম্প ধরার প্রবণতা বাড়ে।
৬. ঘরের দেওয়ালে যেখানে ড্যাম্প ধরেছে, সেখানে ‘মোল্ড রেজিস্ট কালার’ বা জিপসাম প্লাস্টার ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে দেওয়ালটি অনেক দিন ভাল থাকবে।
৭. ড্যাম্প ধরা দেওয়ালে সাদা শ্যাওলা হলে নিয়মিত ভিনিগার স্প্রে করুন আর শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভি’র নতুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পরছে বিশ্বজুড়ে। কোভিড-১৯ এর মতো এই ভাইরাসটিও চীনে প্রথম শনাক্ত করা হয়। এরপর জাপানেও এইচএমপিভি ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এবং বাংলাদেশেরও এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। যদিও আমাদের দেশে এইচএমপিভি আক্রান্ত ব্যক্তিদের পরিস্থিতি তেমন গুরুতর নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। করোনার মতোই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকলে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হলে জটিলতা বাড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই আগে থেকেই এই ভাইরাস সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে যারা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদের জানতে হবে এবং সচেতন গতে হবে। কারা এইচএমপিভির কবলে পড়ার ঝুঁকিতে বেশি রয়েছেন এবং কীভাবে রক্ষা পেতে পারেন তা ব্যাখ্যা করেছেন ভারতীয় চিকিৎসক আশিস নন্দী। যারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন- ১. নবজাতক এবং শিশু: শিশুরা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য রোগ সহ এইচএমপিভিতেও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার উচ্চঝুঁকিতে থাকে। জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য সমস্যা এইচএমপিভি’তে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ। বিশেষ করে নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম নেওয়া অর্থাৎ, প্রিম্যাচিউর বাচ্চারা হাইপোক্সিয়া এবং পানিশূন্যতার ঝুঁকিতে থাকে। ২. বয়স্ক: বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। তাই বৃদ্ধরাও উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন। এইচএমপিভি সিওপিডি বা হার্টফেইলরের সম্ভাবনাকে এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। ৩. গুরুতর রোগাক্রান্ত: হাঁপানি, ডায়াবেটিস, দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার রোগীরা এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হলে দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়বে। এমন ব্যক্তিদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুতই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ৪.অপুষ্টি: অপুষ্টি মূলত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে না উঠতে পারার মূল কারণ। যে সকল মানুষরা ঠিকমতো খাবার খেতে পারেন না তারা অপুষ্টির শিকার। তাই সুবিধাবঞ্চিত এবং দরিদ্র পরিবারের সদস্যরাও তাই এই রোগে আক্রান্ত হলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।
এইচএমপিভি ভাইরাস অতি ভয়ানক রূপ নেওয়ার আগেই একে প্রতিহত করতে হবে। প্রাথমিক লক্ষণ ধরা পড়লেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। রোগ নির্ণয় হলে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলেও মাস্ক ব্যবহারসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। এছাড়া যদিও এখনো এইচএমপিভির টিকা আবিষ্কার হয়নি, তবে অবশ্যই টিকা আবিষ্কার হলে আগে উচ্চঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের টিকা সরবরাহ করতে হবে।
ডায়াবেটিস অর্থাৎ সুগার রোগ আজ খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে। যেকোন একটি পরিবারের দু-একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অতি সাধারণ ঘটনা। তবে ডায়াবেটিসকে সাধারণ কোন রোগ মনে করার কোন কারণ নেই। অযত্ন কিংবা বেখেয়ালে হতে পারে মারাত্মক কিছু। নিয়মিত ব্যায়াম আর খাবারের প্রতি সচেতন হলে রোগীরা একদম সুস্থ থাকে।
খাদ্যাভ্যাস এবং সামগ্রিক জীবনযাত্রার কারণে ডায়াবেটিস অর্থাৎ সুগার রোগ আজ খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে। ডায়াবেটিসে খাবারের বিশেষ যত্ন নেওয়া দরকার। খাবারের তারতম্যের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব দ্রুতই বেড়ে যায়। ফলে এর প্রভাব পড়ে পুরো শরীরে। তাই বিশেষজ্ঞরা ডায়াবেটিস রোগীদের খাবারের বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন।
আজ আমরা ডায়াবেটিস রোগীদের এমনই একটি খাবার 'ডাল' নিয়ে কিছু তথ্য জানাবো। তাহলে আসুন জেনে নিই কোন ডাল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী এবং কোন ডাল এড়িয়ে চলা ভালো।
ডায়াবেটিস রোগীদের যেসব ডাল এড়িয়ে চলতে হবে
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস হলে প্রায় সব ডালই খাওয়া যেতে পারে। তবে তা খেতে হবে সঠিক পরিমাণে। কিছু ডাল রয়েছে যা খাওয়ার ফলে বিভিন্ন কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে খারাপ প্রভাব পড়ে। তার মধ্যে কালো ছোলার ডাল, রাজমা এবং সাদা ছোলা অন্যতম। এগুলো সহজে হজম হয় না ফলে পেট ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। কালো ছোলার ডাল অতিরিক্ত খেলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে পারে। এগুলোতে থাকা উচ্চ ক্যালোরির ফলে রক্তে শর্করার মাত্রাও বাড়তে পারে।
সুগারের সমস্যায় এই ডালগুলো খুবই উপকারী
কালো ছোলার ডাল বাদে অন্য সব ডাল সীমিত পরিমাণে খেলে সমস্যা নেই। তবে কিছু ডাল আছে যেগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে মুগ, ছোলার ডাল। প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিনের মতো পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান এই সব ডালে পাওয়া যায়। যা শুধু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নয় সকলের স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই উপকারী।
প্রায় সময়ই আমাদের মনে হঠাৎ কোনো খাবার খাওয়ার ইচ্ছা জাগে। খাবার যে শুধু ক্ষুধা লাগলেই খায় বা খেতে ইচ্ছা হয়, তেমনটা হয়। অনেক সময় রসনা তৃপ্তির জন্যও বিভিন্ন মুখরোচক খাবার খাওয়া হয়। তবে হঠাৎ কোনো খাবার খাওয়ার ইচ্ছা এমনি এমনি নাও হতে পারে। শরীরের কোনো উপাদানের ঘাটতি হলে, সেই সংকেত দেয় আমাদের জিহ্বা।
লো ব্লাড সুগার থেকে মানসিক চাপ, এমনকি নারীদের পিরিয়ডের কারণেও ক্রেভিং অর্থাৎ, নির্দিষ্ট কোনো খাবার খাওয়ার বা পান করার ইচ্ছা জাগতে পারে। কোন খাবার খাওয়ার বাসনা কোন সমস্যার কারণে হতে পারে, জেনে নিন-
লো ব্লাড সুগার: শ্বেতসার সম্পন্ন খাবার যেমন রুটি, পাস্তা জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা জাগার মানে হলো, রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার ঘাটতি রয়েছে। দীর্ঘসময় শ্বেতসার খাওয়া না হলে এমনটা হতে পারে। হঠাৎ রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করা কমে গেলে স্টার্চজাতীয় খাবার খেতে ইচ্ছা করে। সেক্ষেত্রে আস্ত বীজ ও শস্যজাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত। শস্যজাতীয় খাবারে ফাইবার অর্থাৎ, তন্তুজাতীয় উপাদানের আধিক্য থাকে। এছাড়া এসব উপাদান হজম হতেও সময় লাগে, তাই অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। শস্যজাতীয় খাবার অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান ভরপুর।
মানসিক চাপ: গবেষকদের মতে, যখন মানুষ মানসিক চাপে থাকে, তখন কর্টিসোল নামক হরমোন নিঃসৃত হয়। এর ফলে মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা তীব্র হয়। এরকম হলে চিনি বা মিষ্টি খাওয়া উচিত নয়। কারণ তাতে হঠাৎ রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে যায় আবার ভেঙেও যায়। এরফলে মেজাজ খারাপ হওয়া এবং ক্লান্ত বোধ হতে পারে। তাই মিষ্টি খাওয়ার চাহিদা মেটাতে ফল, দই বা ঠান্ডা দই খেতে পারেন। ফল বা দই একটি চমৎকার নাস্তা। দইয়ে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে যা হাড়ের জন্য ভালো। অন্যদিকে, বেরি বা ফলে রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে।
তৃপ্তির অভাব: গরম, সুস্বাদু কোনো পেট ভরিয়ে কিছু খেতে ইচ্ছে করলে মিষি্ট আলু বা মসুর ডাল খাবারে রাখতে পারেন। মসুর ডালে প্রোটিন, ফাইবার থাকায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখে এবং বার বার ক্ষুধা লাগার সমস্যা কমিয়ে আনে। মিষি্ট আলুও ফাইবার আর ভিটামিন ‘এ’-এর ভালো উৎস। তাই এই খাবার গুলো অনেকক্ষণ পেট ভরা রেখে তৃপ্তি আনে।
এর বিকল্প হতে পারে উচ্চ আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় খাবার। ক্ষুধা মেটাতে আর তৃপ্তি প্রদানে ডিম, মাছ, মুরগীর মাংসও ভালো কাজ করে।
পিরিয়ড সাইকেল: নারীদের ক্ষেত্রে, মানসিক চাপে থাকলে মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতে ইচ্ছে করে। বিশেষ করে চকলেট খাবার খেতে ইচ্ছা হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি হয়। গবেষণাতেও দেখা গেছে নারীদের পিরিয়ড চলাকলে সাধারণত চকলেট, মিষ্টি, নোনতা খাবার ইচ্ছা বেশি হয়। সেক্ষেত্রে চকলেট বা বাদাম বা নারকেল দুধ খাওয়া যেতে পারে। চিনিবিহীন বা কম চিনিযুক্ত চকলেট দুধও পান করা যেতে পারে। বাদাম আর বীজ খেলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণ হয়।
পিপাসা: অনেকের ক্ষেত্রে শুধু খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে পানীয় পানের ইচ্ছাও জাগতে দেখা যায়। মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অংশ ক্ষুধা-তেষ্টা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই অনেক সময় পর্যাপ্ত পানি পান না করার কারণে খাবারের সাথে সাথে পানীয় পানের ইচ্ছাও জাগে। তাই যদি কখনো ক্ষুধা বোধ হয় কিন্তু কি খাবেন ভেবে পান না, তখন এক গ্লাস পানি পান করুন। পানি পানের পর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে দেখুন সমস্যার সমাধান হয় কিনা।
মানুষের শরীরে সোডিয়ামঘাটতি সহ বিভিন্ন কারণে খাওয়ার পর তৃপ্তি বোধ না করার সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন উপাদানের অভাবজনিত কারণে মানুষ ভিন্ন ভিন্ন খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হতে পারে।ফল, দই, ডিম এবং বীজ ও শস্য খাবার এধরনের আকাঙ্ক্ষা মেটাতে সাহায্য করতে পারে। তবে বেশি গুরুতর পরিস্থিতিতে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বর্তমানে আমরা এমন এক পর্যায়ে আছি যেখানে আমরা যখন কারও সঙ্গে কথা বলি প্রায়শই অনুভব করি যে তারা আসলে শুনছেই না। আবেগের প্রতি যথাযথ মনোযোগের অভাব কিংবা ক্রমাগত নেতিবাচকতা ও বিভিন্ন কারণে খুব সহজেই সম্পর্কগুলো ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যায়। এই বৈশিষ্ট্যগুলো আপনার এবং অন্যদের মধ্যে অজান্তেই তৈরি হতে পারে। আসুন মনোবিজ্ঞানের মতে সম্পর্কের ৭টি লক্ষণের দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া যাক, যেসব লক্ষণের কারণে মানুষ সম্পর্কে দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
সঙ্গীর প্রতি অমনোযোগী
দুজন কথা বলার সময় যখন কেউ একজন অমনোযোগী হয়, তখন অন্যজন অপমানিত বোধ করতে পারে। মনে হতে পারে সে মূল্যহীন। একসঙ্গে থাকার পরও যখন কেউ ফোন স্ক্রলিং কিংবা অন্য কোন কাজে ব্যস্ত থাকে এতে ক্রমাগত দূরত্ব সৃষ্টি হয়। সত্যিই এমন পরিস্থিতিতে সম্পর্ক তৈরি হওয়া কঠিন। কেউ আপনার প্রতি যত্নশীল, আপনার খেয়াল রাখছে মানুষ সাধারণত এটাই পছন্দ করে। সঙ্গীর প্রতি আপনার মনোযোগ দিন এতে সঙ্গী নিজেকে মূল্যবান ভাবতে শেখে।
আবেগহীন মনোভাব
যদি একজন ব্যক্তি তার অনুভূতি গোপন রাখে বা নিজের আবেগকে যথাযথভাবে প্রকাশ করতে পারে না, তাহলে অন্য ব্যক্তির সাথে কোন সম্পর্ক তৈরি হয় না। দুজনের আবেগ অনুভূতি সঠিকভাবে প্রকাশ পেলে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস বাড়ে, তৈরি হয় ঘনিষ্ঠতা। অন্যথায়, এটি কেবল বন্ধুত্বের বন্ধনে পরিণত হতে পারে।
অতিরিক্ত ঈর্ষা
সামান্য ঈর্ষা স্বাভাবিক হতে পারে, কিন্তু যখন তা চরম আকার ধারণ করে, তখন তা অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণমূলক হয়ে ওঠে। সঙ্গী কোথায় আছে এবং তারা কার সাথে সময় কাটাচ্ছে তা নিয়ে ক্রমাগত প্রশ্ন সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। সঙ্গীর প্রতি ঈর্ষাও ভালোবাসার প্রতিফলন। তবে, অতিরিক্ত ঈর্ষা নিরাপত্তাহীনতা অবিশ্বাসের লক্ষণ। যেকোনো সম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস। সম্পর্কে বিশ্বাস না থাকলে তা সহজেই ভেঙে পড়ে।
নেতিবাচকতা পোষণ
যখন একজন ব্যক্তি সবসময় খারাপ আশা করে বা সবকিছুকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে, তখন তার চারপাশে থাকা মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। যারা কঠিন সময়েও ইতিবাচক থাকে, প্রিয়জনকে দূরে না সরিয়ে কাছে টানে মানুষ এমন লোকদের পছন্দ করে।
যোগাযোগে অদক্ষ
এমন মনে হতে পারে যে একজন ব্যক্তি যদি কথোপকথন চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হন বা সঠিকভাবে যোগাযোগ স্থাপন করতে না পারে তবে সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য এবং একে অপরকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য কথা বলা প্রয়োজন। দুজনের অবস্থা সুখ-দুঃখ ভাগ করে না নিলে সত্যিকারের মানসিক সংযোগ ঘটে না।। সুন্দর সম্পর্কের জন্য ভালো যোগাযোগ খুবই নিয়ামক।
লক্ষ্যহীন মনোভাব
যে ব্যক্তি লক্ষ্যহীন তিনি সহজেই সঙ্গীর কাছে মূল্যহীন হতে পারে। জীবনে কোনও দিকনির্দেশনা না থাকলে মানুষ খুব কমই সফলতা অর্জন করে।। মানুষ উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পন্ন ব্যক্তি বা পরিশ্রমী ব্যক্তিদের প্রতি আগ্রহী হয়। সঙ্গীর সঙ্গে জীবনের উদ্দেশ্য ভাগ করে নেওয়া, কর্মপরকিল্পনা ঠিক করার মাধ্যমে সম্পর্ক অটুট থাকে।
অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ
অনেকেই মনে করে সঙ্গীকে অতিরিক্ত চাপে রাখলে তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। যখন কাউকে চাপে রাখা হয় তখন সুস্থ আলোচনা এবং আপোষের কোনও সুযোগ থাকে না। মানুষ সাধারণত অতিরিক্ত চাপের প্রতি বিরক্ত বোধ করে। মানুষ নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। একটি সম্পর্ক এমন হওয়া উচিত নয়, যাতে শুধুমাত্র সম্পর্ক টিকে রাখার জন্য আপনাকে প্রতিনিয়ত মানষিক চাপে থাকতে হয়।