আমড়া খেলে রুচি বাড়ে, ভালো থাকে ত্বকও
টক-মিষ্টি স্বাদের বারোমাসি ফল আমড়া। সবাই কম-বেশি আমড়া খেতে পছন্দ করেন। আকারে ছোট হলেও পুষ্টিগুণে ঠাসা এ ফলটি। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যে কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে সহজেই।
শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে আমড়া। ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতেও সাহায্য করে এটি। আমড়া কাঁচা খাওয়ার পাশাপাশি সুস্বাদু আচার, চাটনি ও জেলি তৈরি করা যায়। অনেকে তরকারি হিসেবে রান্না করে খান।
আমড়ার পুষ্টিগুণ
প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়ায় ১ দশমিক ১ গ্রাম প্রোটিন, ১৫ গ্রাম শ্বেতসার, শূন্য দশমিক ১০ গ্রাম স্নেহ জাতীয় পদার্থ এবং ৮০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন আছে। এছাড়াও আছে ০.২৮ মিলিগ্রাম থায়ামিন, ০.০৪ মিলিগ্রাম রিবোফ্লাভিন, ৯২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ৫৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৩.৯ মিলিগ্রাম লৌহ।
আমড়ার খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালোরি। খনিজ পদার্থ বা মিনারেলসের পরিমাণ ০.৬ গ্রাম। এই ফলে প্রায় ৯০%-ই পানি, ৪-৫% কার্বোহাইড্রেট ও সামান্য প্রোটিন থাকে।
জেনে নিন আমড়া উপকারিতা—
ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর করে
সুস্থতার জন্য ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা অনেক। শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিলে তা হাড়ের বিভিন্ন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, পাশাপাশি দাঁতের সমস্যা, মাংস পেশীর খিঁচুনিসহ অনেক রোগের কারণ হতে পারে। নিয়মিত আমড়া খেলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হয়।
ত্বকের সুরক্ষায়
সুস্থ ও সুন্দর ত্বক সবারই প্রত্যাশা। তবে ত্বকের কোনো না কোনো সমস্যা লেগেই থাকে অনেকের। বিশেষ করে ব্রণের সমস্যা থাকে প্রায় সবারই। ত্বক থেকে ব্রণ দূর করতে এবং উজ্জ্বলতা বাড়াতে কাজ করে আমড়া। এ ফলে আছে প্রচুর ভিটামিন সি। এই ভিটামিন ত্বক ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে। পাশাপাশি দূর করে ব্রণও।
রক্তস্বল্পতা দূর করে
রক্তস্বল্পতা এড়াতে কিংবা এ সমস্যা দূর করতে নিয়মিত আমড়া খান। কারণ আমড়ায় আছে প্রচুর আয়রন যা রক্তস্বল্পতা রোধে সাহায্য করে। এটি আমাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতেও সাহায্য করে।
হজমের সমস্যা দূর করে
বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ে অনেকে সমস্যায় ভুগে থাকেন। নিয়মিত আমড়া খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। এই ফলে আছে বিভিন্ন দ্রবণীয় ফাইবার, এটি পাকস্থলীর কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যা থেকে বাঁচতে নিয়মিত আমড়া খান।
রুচি বাড়ায়
যেকোনো অসুস্থতায় খাবারের রুচি অনেকটাই চলে যায়। সেক্ষেত্রে রোগীকে আমড়া খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এটি মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। আমড়া খেলে অরুচি অনেকটাই কেটে যায় এবং খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে।