দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে চাইলে
দুশ্চিন্তা কিংবা উদ্বেগ হালকাভাবে দেখার মতো সমস্যা নয়। ঘরে ও বাইরে সকলেই কোন না কোন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। এই দুশ্চিন্তা থেকেই দেখা দেয় উচ্চ রক্তচাপ, ঘাড়ে ব্যাথা, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া ও অনিয়মিত হওয়ার মত সমস্যাগুলো।
শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই ১৮ বছরের বেশি মানুষের মাঝে অন্তত ৪০ মিনিয়ন অ্যাংজাইটি তথা উদ্বেগজনিত সমস্যায় আক্রান্ত। এক্ষেত্রে বর্তমান সময়ের বিভিন্ন টেকনোলজিরও অবদান আছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিনিয়ত বেড়ে চলা এই সমস্যাটিতে সবচেয়ে বেশি ভুগতে দেখা যায় অফিসে কর্মরতদের। বিভিন্ন ধরনের কাজের চাপ, ডেডলাইনের চাপসহ পারিপার্শ্বিক নানা কারণে উদ্বেগের মাত্রা বেড়ে যায় অনেকখানি।
এই সমস্যাকে দ্রুততম সময়ের মাঝে নিয়ন্ত্রণে ও কমিয়ে আনার জন্য কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলু বের করেছে ১০ মিনিটের কার্যকরি একটি পদ্ধতি। মোট ৮২ জন স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে করা হয় এই পরীক্ষাটি, যেখানে সবারই অ্যাংজাইটি বা উদ্বেগজনিত সমস্যা ছিল।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলুর গবেষক মেনগ্রান জু জানান, স্বেচ্ছাসেবীদের ১৫ মিনিটের কম্পিউটার বেসড একটি কাজ করতে দেওয়া হয়। যার জন্য তাদের নিরবচ্ছিন্ন মনোযোগের প্রয়োজন ছিল এবং এটা থেকে দেখা গেছে যে তারা ঠিক কতটুকু সময় পর্যন্ত তাদের মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন।
এরপর স্বেচ্ছাসেবীদের দুইটি সমানভাগে ভাগ করা হয়। এক ভাগকে দশ মিনিটের জন্য শ্বাসপ্রশ্বাসের এক্সারসাইজ বা মেডিটেশন করতে দেওয়া হয় এবং অন্য ভাগকে ১০ মিনিটের জন্য দ্য হবিট বইটির অডিও শুনতে দেওয়া হয়। দেখা গেছে যারা শ্বাসপ্রশ্বাসের মেডিটেশন করেছিল তাদের উদ্বেগের মাত্রা কমে গিয়েছে লক্ষণীয় মাত্রায়।
এই পরীক্ষা থেকে জু শ্বাসপ্রশ্বাসের মেডিটেশনের তিনটি মূল উপকারিতা বের করতে পেরেছেন। দশ মিনিট শ্বাসপ্রশ্বাসের মেডিটেশন করা হলে কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়, মস্তিষ্ক তখন শুধুমাত্র সেই কাজের দিকেই লম্বা সময় মনোযোগ ধরে রাখতে পারে এবং মাথায় অন্য চিন্তা ও দুশ্চিন্তা কম কাজ করে।
শ্বাসপ্রশ্বাসের মেডিটেশন করার জন্য চেয়ারে পিঠ সোজা করে বসে নাকের সাহায্যে জোরে ও ধীরে শ্বাস গ্রহণ করতে হবে ৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে। এরপর শ্বাস ৫ সেকেন্ডের জন্য ধরে রেখে ছাড়তে হবে ১০ সেকেন্ড সময় নিয়ে। এই সাইকেলের পুনরাবৃত্তি করতে হবে ১০ মিনিট পর্যন্ত।
জু পরামর্শ দেন, অফিসে কোন একটি কাজ শেষ হওয়ার পরপরই অল্প সময়ের ব্রেক নিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাসের মেডিটেশন করে নিতে। এতে করে পরবর্তীতে কাজের উদ্যম পাওয়ার পাশাপাশি নিজেকেও চাঙ্গা মনে হবে।