মাঝরাতের ক্ষুধা মেটাতে কী খাবেন?
আমরা রাত জেগে বিভিন্ন কাজ করি বা অফিসের নাইট শিফট করি তাদের অনেকেরই কাজের মাঝে ক্ষুধা লাগে। আর এতে করে আমরা বেশিরভাগ সময় স্বাস্থ্যকর খাবারের বাইরে যেয়ে অন্যান্য খাবার খেয়ে থাকি। মোট কথা হাতের সামনে যা পাই তাই খাই। তবে রাতের খিদে ডেকে আনতে পারে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা।
খাবার হজম না হওয়া
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাওয়া সেরে নেওয়া উচিত। তাহলে খাবার হজম করার যথেষ্ট সময় পায় পাকস্থলী। এতে ঘুমও ভালো হয়। তবে মাঝরাতে খাবার খেলে পাকস্থলীর নতুন করে কাজ শুরু করতে হয়। এতে পাকস্থলী খাবার হজম করার জন্য যথেষ্ট সময় পায় না।
ঘুমের ব্যাঘাত
একে তো রাত জেগে নিদ্রা চক্র ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে, সেই সঙ্গে অসময়ে খাবার খাওয়া শরীরের জন্য ডেকে আনছে নতুন চ্যালেঞ্জ। রাত জেগে যাঁরা খান, তাঁদের ঘুমাতেও দেরি হয়। এতে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে শরীর যেমন অসুস্থ হয়ে যায়, তেমনি উদ্ভট স্বপ্ন দেখার প্রবণতাও বাড়ে।
মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি
রাত জেগে নিয়মিত কাজ করা মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। প্রাকৃতিকভাবে সূর্যাস্তের পরের সময়টা বিশ্রামের জন্য বরাদ্দ। সেই সময় একা জেগে থাকা কিংবা রাত জেগে কাজ করলে শরীর ও মনে খারাপ প্রভাব পড়ে। একসময় সেটি হতাশা ও বিষণ্ণতা তৈরি করতে পারে।
ওজন বেড়ে যাওয়া
রাতে শরীরের বিপাকপ্রক্রিয়া স্বাভাবিকের চেয়ে ধীরগতিতে কাজ করে। দিনের বেলায় যত সহজে ক্যালরি খরচ হয়, রাতে তা সম্ভব হয় না। রাতে যেহেতু শরীরের ওপর বিশেষ কোনো চাপ পড়ে না, তাই তখন খাবার সহজে হজম হয় না। যে কারণে ওজনও দ্রুত বেড়ে যায়।
তাই মাঝরাতে খাবার খাওয়ার খারাপ প্রভাব পড়ে শরীরে। মাঝরাতে খেলে হলে এমন কিছু খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে যাতে শরীরে খারাপ প্রভাব না পড়ে।
১. কলা: শুধুই স্বাস্থ্য নয় মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কলা উপকারী। এতে মেলাটোনিন হরমোন ক্ষরিত হয় যা আমাদের তাড়াতাড়ি ঘুমাতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান। একটি কলা টুকরো টুকরো করে কেটে তাতে সামান্য আমন্ড বাটার যোগ করতে পারেন।
২. ডিম: সেদ্ধ করা ডিম আপনি যে কোন সময় খেতে পারেন। চাইলে এগ সালাদ বানিয়েও খেতে পারেন।
যদি কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকে তবে ডিমের শুধু সাদা অংশটি খাওয়া উচিত। এতে ভিটামিন, প্রোটিন এবং ফ্যাট থাকে।
৩. বাদাম: হাতের কাছে বাদামের একটি কৌটো রেখে দিন। তাতে চিনা বাদাম, কাঠ বাদাম, আমন্ড এগুলো রাখুন। যে সময় ক্ষুধা পাবে তখনই আপনি এক মুঠো করে এগুলো খেতে পারেন।
এতে প্রোটিন, ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রতিদিন দেড় আউন্স করে বাদাম খেলে কোলেস্টেরল এবং ফ্যাট থাকবে নিয়ন্ত্রণে। তার ফলে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমে যাবে। তবে সেই বাদাম যেন নুনযুক্ত না হয়।