সৌন্দর্যচর্চায় থানকুনিপাতা
থানকুনি আমাদের অতি পরিচিত এক ভেষজ উদ্ভিদ। খেতের আইল, পুকুরপাড় বা জলার ধারে হরহামেশাই বেড়ে উঠতে দেখা যায় অসাধারণ ওষধিগুণসম্পন্ন এই উদ্ভিদকে। থানকুনির বৈজ্ঞানিক নাম Centella Asiatica। অঞ্চলভেদে থানকুনিকে অনেকে আদাগুনগুনি, টেয়ামানিক, আদামনি, ঢোলামনি নামেও চিনে থাকবেন। ক্ষত সারাতে, পেটের অসুখ ভালো করতে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে থানকুনিপাতার ব্যবহার হয়ে আসছে সেই প্রাচীনকাল থেকে। তবে এর পাশাপাশি সৌন্দর্যচর্চায়ও কিন্তু এই থানকুনিপাতা দারুণ এক উপাদান।
১. ত্বকের সতেজতায়
থানকুনি পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর উচ্চ মানের অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। তাই থানকুনি পাতার নির্যাসসমৃদ্ধ সৌন্দর্যপণ্য ক্লান্ত ভাব দূর করে আমাদের ত্বককে সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে। থানকুনির অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি (প্রদাহরোধী) উপাদান ব্রণের বিস্তৃতি কমায়। শুধু তা-ই নয়, ব্রণের দাগ দূর করতে থানকুনির নির্যাস দারুণ উপকারী।
২.হজম শক্তি
হজম শক্তি বাড়াতে পারে থানকুনি পাতা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, থানকুনি পাতায় উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ যাতে ঠিক মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখে।
৩. পেটের সমস্যা
আলসার এগজিমা, হাঁপানি, চুলকানি ও অন্যান্য চর্মরোগ সারাতে থানকুনি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত থানকুনির রস খেলে ত্বক ও চুল সুন্দর থাকে। জ্বর পেটের পিড়া, আমাশয়য়, আলসার, বাতের বাথা বিভিন্ন অসুখের ওষুধ হিসেবে এটির ব্যাবহার রয়েছে।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ভিটামিন সি যুক্ত থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে বাড়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। থানকুনি পাতায় উপস্থিত অ্যামিনো অ্যাসিড, বেটা ক্যারোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ফাইটোকেমিকাল ত্বকের ভেতর থেকে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে।
৫. স্নায়ুতন্ত্র
থানকুনি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। সংবহনতন্ত্রের স্থায়ীভাবে স্ফীত ও বর্ধিত শিরা কমাতে সহায়তা করে। থানকুনি পাতা চামড়া মসৃণ করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে পুণর্গঠনে সাহায্য করে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে থানকুনির ব্যবহার
প্রতিদিন এক গ্লাস দুধে ৫ থেকে ৬ চা চামচ থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে খেলে চেহারায় লাবণ্য দেখা দিবে। একই সঙ্গে আত্মবিশ্বাসও বাড়বে। সকালে খালি পেটে থানকুনি পাতার রস খেলে যেমন উপকার মিলবে, তেমনই কাঁচা থানকুনি পাতা চিবিয়ে খেলেও সমান উপকার পাওয়া যাবে।