ওষুধ ছাড়াই গ্যাস্ট্রিক সারানোর ঘরোয়া উপায়
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় কমবেশি সবাই ভোগেন। আর এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মুঠো মুঠো ওষুধে ভরসা রাখেন সবাই! আর এ অভ্যাসের কারণে অজান্তেই নিজের ক্ষতি করছেন অনেকেই।
কারণ নিয়মিত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেলে লিভার-কিডনিসহ শরীরের অভ্যন্তরীণ নানা অঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কারণে কঠিন রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। তাহলে গ্যাস্ট্রিক সারানোর উপায় কী?
চাইলে কিন্তু খুব সহজেই ঘরে থাকা কিছু উপাদানেই এই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। এজন্য ভরসা রাখুন রান্নাঘরের কয়েকটি উপাদানে।
পুদিনা পাতার চা
পুদিনা পাতার চা গ্যাস ও ফোলাভাব দূর করার একটি পুরোনো প্রতিকার। এতে থাকা মেন্থল পাচনতন্ত্রের পেশীগুলোকে শিথিল করে (যা গ্যাসের উত্তরণ ঘটায়)।
খাওয়ার পর পরই এক কাপ পুদিনা চা পান করলে গ্যাসের কারণে পেটের ফোলাভাব ও অস্বস্তি দ্রুত কমে যায়।
আপেল সিডার ভিনেগার
আপেল সিডার ভিনেগার হজমশক্তি বাড়াতে পারে। এতে থাকা এনজাইম সহজেই খাদ্য ভাঙতে পারে ও পাচনতন্ত্রে উৎপাদিত গ্যাসের পরিমাণ কমায়।
এজন্য খাওয়ার আগে এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার পানিতে মিশিয়ে পান করলে ফোলাভাব ও অস্বস্তি কমবে দ্রুত।
আদা
আদায় প্রাকৃতিক প্রদাহ বিরোধী ও পাচনতন্ত্রের পেশীগুলোকে শিথিল করার ক্ষমতা আছে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগলে এক কাপ আদা চা পান করলে মুহূর্তেই স্বস্তি মিলবে।
দারুচিনি
এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ দারুচিনির পাউডার মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। এটি খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যায় আরাম পাওয়া যায়। পাউডার খেতে অস্বস্তি লাগলে ৪-৫ টুকরা দারুচিনি দুই কাপ পানিতে জ্বাল দিয়ে নির্যাসসহ পানিটা খেতে পারেন।
পেঁপে
পেঁপেতে থাকা প্যাপেইন অ্যানজাইম আমাদের হজমপ্রক্রিয়াকে সহজতর করে। ফলে অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা হতে পারে না। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে রাখতে পারেন দুই-এক টুকরা পেঁপে।
অ্যাসিডিটির সমস্যা যদি প্রতিদিনই হয় এবং সেটা গুরুতর পর্যায়ের হয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সব ঘরোয়া উপাদান সবার জন্য নয়। উদাহরণস্বরূপ, আপনার যদি পেঁপে খেলে অ্যালার্জি দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই পেঁপে খাবেন না। মনে রাখবেন, এসব ঘরোয়া উপাদান কিংবা ওষুধ আমাদের অ্যাসিডিটি থেকে সাময়িক মুক্তি দিতে পারে। এই অস্বস্তিদায়ক সমস্যা থেকে সত্যিকারের মুক্তি পেতে চাইলে লাইফস্টাইল এবং ডায়েটে পরিবর্তন আনার কোনো বিকল্প নেই।
একবারে অনেক না খেয়ে কিছুক্ষণ পরপর অল্প অল্প করে খান, পেট খালি রাখবেন না। প্রয়োজন অনুযায়ী বিশুদ্ধ পানি পান করুন। পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। ভাজাপোড়া কিংবা অতিরিক্ত তেল মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস যদি ছাড়তে না পারেন, যতই ঘরোয়া দাওয়াই কিংবা ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন না কেন, অ্যাসিডিটি ঘুরেফিরে আপনার পিছু ছাড়বে না। সচেতনতার চেয়ে বড় দাওয়াই আর নেই।