ব্রেইনে পানি জমে মাথা বড় হওয়ার রোগের নাম হাইড্রোকেফালাস। এ রোগে আক্রান্ত রোগীরা সাধারণত দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসেন। এর ফলে বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি। সঠিক সময়ে হাসপাতালে না আসায় স্বাভাবিক জীবনেও ফিরতে পারছেন না অধিকাংশ রোগী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জন্মের পর বা উপসর্গ দেখেই চিকিৎসা শুরু করলে অর্ধেকের বেশি রোগীই সুস্থ হতে পারে।
আগারগাঁওয়ের নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে গত এক বছরে চিকিৎসা নিয়েছেন সাড়ে তিন শর বেশি রোগী। শেষ পাঁচ বছরে এসেছে সাড়ে ১৮‘শ রোগী। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেরিতে হাসপাতালে আসায় চিকিৎসা দিলেও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারছে না অধিকাংশ রোগী।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, দেশে প্রতি বছর জন্ম হওয়া ৩০ লাখ শিশুর মধ্যে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ হাজার শিশু হাইড্রোকেফালাসে আক্রান্ত হয়। যাদের ৫০ থেকে ৬০ ভাগকে সঠিক সময়ে চিকিৎসা দিতে পারলে স্বাভাবিক জীবনে নিয়ে আসা সম্ভব।
মস্তিষ্কের জন্মগত ত্রুটি, মাতৃগর্ভে জীবাণু সংক্রমণ, আঘাতজনিত কারণ, মস্তিষ্কের পানি প্রবাহের রাস্তায় টিউমারসহ নানা কারণেই মাথার ওজন শরীরের ওজনের চেয়ে বেড়ে দ্বিগুণ বা তিন গুণ হয়। চিকিৎসা না করলে এসব রোগীদের অধিকাংশেরই চোখে ত্রুটি, চলাচলে সমস্যা, মেধাবিকাশ বাধাগ্রস্ত এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
কর্মব্যস্তময় আমাদের জীবন। সারা দিনের পরিশ্রম ও ঘরে-বাইরে সামাল দিতে গিয়ে আমরা ক্লান্ত। এসব ব্যস্তার মাঝে মুখের কিছুটা যত্ন নেয়া হলেও একেবারেই নেয়া হয় না চুলের যত্ন। সপ্তাহ কিংবা মাসে একবারও নিয়ম করে স্যালনে যাওয়ার অবসর হয় না। কিংবা সময় সুযোগ হলে তা অনেকের জন্য ব্যয় সাপেক্ষ। নিত্যদিনের সকল চাহিদার ভিড়ে স্যালনে অনেকেরই যাওয়া হয়ে ওঠে না। কারও আবার স্যালনের কেমিক্যাল চুলে ভীষণভাবে প্রভাব ফেলে। সারা সপ্তাহে চাকরি-বাকরির পর অথবা ঘরকন্যা করার পর সপ্তাহে অন্তত এক ঘণ্টা রাখুন নিজের জন্য।
চাইলেই ঘরোয়া কিছু উপকরণ দিয়ে স্যালনের মতোই স্পা বাড়িতে করে ফেলা যায় নিমিষে। রুক্ষ চুল সহজেই হবে মসৃণ-ঝলমলে। সত্যি বলতে সপ্তাহ জুড়ে রোদ, জল, ধুলোর আক্রমণে চুলের যে দুরবস্থা হয়, তা অন্তত কিছুটা পুষিয়ে নিতে সপ্তাহের যেকোন দিন কিংবা ছুটির দিনটিকে কাজে লাগাতে পারেন।
ঘরে বসে হেয়ার স্পা করতে যে যে উপকরণ প্রয়োজন
১) যেকোন নারকেল, অলিভ বা কাঠবাদামের তেল।
২) চুলের যেকোনও ভাল স্পা ক্রিম। হাতের নাগালে ক্রিম না থাকলে কলা হাতে মেখে কিংবা ব্লেন্ড করে নিতে পারেন।
ধাপে ধাপে চুলে স্পা করবেন কীভাবে?
১. প্রথমে বড় দাঁতের চিরুনি দিয়ে শুকনো চুলের জট ছাড়িয়ে নিন।
২. তারপর পছন্দ মতো যে কোনও তেল হালকা গরম করে মাথার ত্বক এবং চুলে মেখে নিন। চুলের ডগা ফাটার সমস্যা থাকলে সেই অংশে তেল মাখুন ভাল করে। অন্তত আধ ঘণ্টা তেল মেখে রাখুন।
৩. এবার চিরুনি দিয়ে সিঁথি ভাগ করে স্পা ক্রিম মেখে নিন। যদি স্পা ক্রিমের পরিবর্তে কলা মাখতে চান তা হলে কলা ভাল করে মেখে কিংবা ব্লেন্ড করে একটি ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিয়ে মাথায় মেখে নিন।
৪. অন্তত মিনিট ২০ শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন। শাওয়ার ক্যাপ না থাকলে তোয়ালেও ব্যবহার করতে পারেন।
৫. বাড়িতে যদি ভেপার নেওয়ার যন্ত্র থাকে, তা দিয়ে চুলে গরম জলের ভাপ নিন। অন্যথায় গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে, নিংড়ে নিয়ে তা মাথায় মুড়িয়ে রাখতে পারেন।
৬. আরও আধ ঘণ্টা পর হালকা গরম পানিতে মাথা ধুয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন। প্রয়োজনে বার দুয়েক শ্যাম্পু করতে হবে।
৭. সব শেষে কন্ডিশনার দিতে ভুলবেন না। মিনিট পাঁচেক মাথায় কন্ডিশনার রেখে, তার পর ধুয়ে ফেলুন।
৮. মাথা ঘষে ঘষে মুছবেন না। তোয়ালেতে মাথার পানি টেনে নিলে তারপর সিরাম মাখতে পারেন।
করোনা মহামারির পর বিশ্বে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দ্য হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)। চলতি জানুয়ারির শুরুতে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনে প্রথম এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর জাপানে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এখন এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব মালয়েশিয়া ও ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি বাংলাদেশেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা গেছে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ধাঁচের এই ভাইরাসে এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। ভাইরাসটি করোনার মতোই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা এই ভাইরাস নিয়ে এখনও কোনো সতর্কতা জারি করেনি।
তবে এই ভাইরাস প্রতিরোধে এখন থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে যাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাদের সচেতন থাকা জরুরি। বয়সের তারতম্যের কারণে এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে বলে জানাচ্ছেন ভারতীয় চিকিৎসক আশিস নন্দী। এইচএমপিভি থেকে যাদের ঝুঁকি বেশি, তিনি তাদের চারটি ভাগে ভাগ করেছেন।
১। শিশু এবং বালক-বালিকা
চিকিৎসকের মতে, এদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা যেহেতু পরিণত হয়নি, তাই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ফুসফুসে সংক্রমিত হয় এমন যেকোনও ভাইরাসের মতোই হবে এইচএমপিভির উপসর্গ। জ্বর, কাঁশি, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া। খুব ছোট শিশুদের হাইপক্সিয়া এবং ডিহাইড্রেশনও হতে পারে।
২। বয়স্করা
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে রোগপ্রতিরোধ শক্তিও দুর্বল হয়। ফলে যেকোন সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতাও কমে যায়। সিওপিডির বা হার্ট ফেলের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে এইচএমপিভি।
৩। কোমর্বিডিটি থাকলে
শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস থাকলে বা এমন যেকোনও রোগ, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়, তা থাকলে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা কমবে।
এর কারণে রোগের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, নতুন কোনও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। অন্যান্য রোগীর তুলনায় তাদের সুস্থ হতে বেশি সময় লাগতে পারে।
৪। অপুষ্টির সমস্যা থাকলে
পুষ্টির অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের ২০২৪ এর তথ্য অনুযায়ী, না খেতে পাওয়া জনগণের সংখ্যার মাপকাঠিতে ১২৭ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৪তম। পাশাপাশি দেশের জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে।
কীভাবে সতর্ক হবেন?
ইতিহাস পর্যালোচনা করলেই দেখা যায় যুগে যুগে মানুষ বিভিন্ন রোগের সম্মুখীন হয়েছে । তবে সতর্ক থাকলে তার প্রভাব অনেকটাই এড়ানো যায়। কমানো যায় শারীরিক ক্ষতিও। চিকিৎসক নন্দী বলছেন, চিকিৎসা সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয়ের পাশাপাশি জীবনযাত্রারও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
১। টিকা: এইচএমপিভি ভাইরাসের জন্য এখনও কোন টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। তবে, ভবিষ্যতে তেমন টিকা আবিষ্কার হলে তা নিয়ে নেওয়া উচিত।
২। চিকিৎসা: চিকিৎসক নন্দীর মতে, মোনোক্লোনার অ্যান্টিবডিজ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা রক্ষা করতে সাহায্য করে।
৩। পরীক্ষা: উপসর্গ দেখলে এইচএমপিভির পরীক্ষা করতে হবে।
৪। অসুখের যত্ন: যাদের ডায়াবটিস বা শ্বাসকষ্ট রয়েছে, তারা প্রতিনিয়ত নিজেদের শরীরের দিকে খেয়াল রাখুন। দরকার হলে যত্ন নিন।
৫। জীবনযাত্রা রদ-বদল: নিয়মিত হাত ধোয়া, মুখে-নাকে হাত না দেওয়া, মাস্কের ব্যবহার এবং যতটা সম্ভব জমায়েত এড়িয়ে চলা।
ডিম খেলে পুষ্টি বাড়ে। প্রতিনিয়ত এ কথা শুনেই আমরা বড় হই। প্রতিদিন অন্তত একটি হলেও সিদ্ধ ডিম খাওয়া প্রয়োজন। প্রতিদিন দুটো সিদ্ধ ডিম খেলে শরীরের পুষ্টির অনেক ঘাটতি মিটবে। সরাসরি সিদ্ধ ডিম খেতে সমস্যা হলে কেউ চাইলে সিদ্ধ ডিমের স্যালাদ করেও খেতে পারেন।
প্রতিদিন ডিম খাওয়া কি আদৌ উচিত বা নিরাপদ? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ডিম খাওয়া বা না-খাওয়া নির্ভর করবে যিনি খাচ্ছেন, তার স্বাস্থ্যের ওপর। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই যে, রোজ দু’টি করে সিদ্ধ ডিম খেলে তা শরীরের ১০ রকম পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
ডিম খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
১। প্রোটিন: এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন কতটা প্রোটিন জরুরি, তা নির্ভর করে তার শরীরের ওজনের ওপর। ব্যক্তির শরীরের ওজন অনুযায়ী ০.৮ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ, কারও যদি ওজন ৭৫ কেজি হয়, তবে তার দিনে প্রোটিন প্রয়োজন ৬০ গ্রাম। যেহেতু একটি ডিমে ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে, তাই নিয়মিত দু’টি করে ডিম খেলে ১২ গ্রাম প্রোটিন যাবে শরীরে। যা নিয়মিত প্রয়োজনের অনেকটা প্রোটিনই পূরণ হয়ে যাবে।
২। ভিটামিন এ: দু’টি সিদ্ধ ডিমে রয়েছে ৫৪০ আইইউ (আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট) ভিটামিন এ। চোখ এবং ত্বক ভাল রাখতে এই ভিটামিন জরুরি। পাশাপাশি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও ভাল রাখে ভিটামিন এ। কোষবৃদ্ধি, প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও এই ভিটামিন উপযোগী। এক জন প্রাপ্তবয়স্কের নিয়মিত ৩০০০ আইইউ ভিটামিন এ প্রয়োজন। ডিম তার অনেকটাই পূরণ করে।
৩। ভিটামিন ডি: হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অতি প্রয়োজনীয় হল ভিটামিন ডি। আবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও উপযোগী এটি। শরীরে প্রতিদিন ৬০০ আইইউ ভিটামিন ডি প্রয়োজন। দু’টি ডিমে থাকে ৮২ আইইউ ভিটামিন ডি।
৪। ভিটামিন বি ১২: মস্তিষ্ক সঞ্চালনে সাহায্য করে ভিটামিন বি ১২। পাশাপাশি স্নায়ুর কাজেও এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। এছাড়াও রক্তে লোহিতকণিকা বৃদ্ধি, দৈনন্দিন কাজে সতেজ ভাব বজায় রাখতেও ভিটামিন বি ১২ দরকার। সাধারণত রোজ ২ মাইক্রোগ্রাম এই ভিটামিনের প্রয়োজন। দু’টি সিদ্ধ ডিমে থাকে ১.৬ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন বি ১২।
৫। ভিটামিন বি ২: ফ্যাট, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট পরিপাকের জন্য দরকার হয় এই ভিটামিন। তা ছাড়া, ত্বক আর চোখের স্বাস্থ্যও ভাল রাখতে সাহায্যে করে ভিটামিন বি ২। প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন ১.৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি ২ প্রয়োজন। ডিমে এই ভিটামিন থাকে ০.৬ মিলিগ্রাম।
৬। ফোলেট: ডিএনএ সংশ্লেষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএ-র মেরামতে সাহায্য করে ফোলেট। কোষের স্বাস্থ্যের জন্যও ফোলেট প্রয়োজনীয়। যে কারণে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের নিয়মিত ফোলেটের চাহিদা পূরণ করার কথা বলে থাকেন চিকিৎসকেরা। প্রাপ্তবয়স্কদের নিয়মিত ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফোলেট জরুরি। প্রতিটি ডিমে ২৪ মাইক্রোগ্রাম ফোলেট থাকে।
৭। স্যালেনিয়াম: এটি একটি জরুরি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। কোষের স্বাস্থ্য, থাইরয়েড, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাল রাখতে কাজে লাগে। প্রতিদিনের প্রয়োজনের ৫৫ মাইক্রোগ্রাম স্যালেনিয়ামের মধ্যে ২৮ মাইক্রোগ্রামেরই জোগান দিতে পারে দু’টি সিদ্ধ ডিম।
৮। কোলাইন: দু’টি ডিমে ২৯৪ মিলিগ্রাম কোলাইন থাকে, যা দৈনিক প্রয়োজনের অর্ধেক। কোলাইন মস্তিষ্ক এবং লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
১০। জিঙ্ক: দু’টি সিদ্ধ ডিমে ১.১ মিলিগ্রাম জিঙ্ক থাকে। জিঙ্ক শরীরের ক্ষত নিরাময়ে সহযোগী। কোষের ক্ষয় রোধ করতে এবং প্রোটিন তৈরি করতে সাহায্য করে। এক জন প্রাপ্তবয়ষ্কের জন্য প্রতিদিন ১১ মিলিগ্রাম জিঙ্ক জরুরি।
শীতে অন্যান্য সময়ের তুলনায় ত্বক একটু বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। বেড়ে যায় র্যাশের সমস্যা। পাশাপাশি নিত্যদিনের টেনশন, দূষণ, ধুলা, বালি ইত্যাদি তো আছেই। এসবের হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করতে একটু বেশি যত্ন নিতে হয়।
এসময় একটু নিয়ম করে ফেস ক্লিনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং এর সঙ্গে স্ক্রাবিং করতে পারলে শীতে ত্বক নিয়ে কোন চিন্তাই নেই। আবার শীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। মুখের সতেজতাও বজায় রাখা জরুরি। নিয়ম করে একটু যত্ন নিলেই শীতে ত্বকের জেল্লা বজায় থাকবে। কারণ, ত্বক ফর্সা কিংবা কালো নয় পরিষ্কার ত্বকই সৌন্দর্যের মূল কথা।
শীতে সাধারণত ত্বকের উপরিভাগ কালো হয়। এটা হয়ে থাকে ত্বকের ওপর জমে থাকা মৃত কোষের জন্য। এই কালোভাব দূর করতেই স্ক্রাবিং করা প্রয়োজন। সপ্তাহে অন্তত একদিন স্ক্রাবিং করুন। শীতে দু’সপ্তাহ অন্তর ফেসিয়াল করা জরুরি। কারণ ক্রিম, ময়েশ্চরাইজার ব্যবহারের কারণে বাইরে যখন বের হতে হয় তখন তা রোদে গলে রোমকূপের ভিতরে চলে যায়। রোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে খুব সহজে ত্বক দাগ বসে যায়। আর এই দাগ যাতে না বসে সে জন্য স্টিম নিতে পারলে ভাল। এরপর ত্বক ঠান্ডা করে নিতে হবে। বাইরে থেকে এসেই ত্বক অনুযায়ী মানসম্মত ফেসওয়াশ দিয়ে অবশ্যই মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এ ছাড়াও প্রতিদিন পরিমাণ মত পানি, মৌসুমি ফল এবং সবুজ শাকসবজি খেতে হবে।
ত্বক অনুযায়ী ফেসিয়াল করুন
ত্বক সেন্সেটিভ হলে জেল বেস ফেসিয়াল করার চেষ্টা করুন। এতে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং হাইড্রেশন লেভেলও ঠিক থাকবে। সাধারন ত্বকের ক্ষেত্রে যে কোনও নারিশিং ফেসিয়াল করুন। অতিরিক্ত টক্সিন যেমন বের হয়ে যায় তেমন ক্রিম দিয়ে ম্যাসাজের ফলে চামড়া কুঁচকে যাওয়ার ভয় থাকে না। বিশেষত শীতের জন্য এই ফেসিয়াল খুব ভাল।
ত্বক ভেদে কিছু ফেসিয়াল
• শুষ্ক ত্বকে হলে চকোলেট ফেসিয়াল করতে পারেন। • সব ধরনের ত্বকেই ফ্রুট ফেসিয়াল করা যেতে পারে। • এছাড়াও পার্লারে যাওয়ার সময় না থাকলে বাড়িতেও বানিয়ে নিতে পারবেন বেশকিছু ফেসিয়াল প্যাক।
যাদের ত্বক শুষ্ক
একটা পাকা কলা মাখিয়ে নিয়ে তার সঙ্গে ২ চামচ মিল্ক পাউডার, ১ চামচ টক দই আর ১ চামচ মধু মিশিয়ে লাগান। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন করুন। এভাবে নিয়মিত চর্চা করা ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
ত্বকে পিগমেন্ট থাকলে পাকা পেঁপে, মধু, ডিমের সাদা অংশ এক সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগালে উপকার পাবেন।
ত্বক তৈলাক্ত হলে
১ চামচ কোকো পাউডার, ১ চামচ মধু, ১ চামচ বেসন, ২ চামচ কাঁচা দুধ এক সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে কুসুম গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। ভাল উপকার পাবেন।
ত্বকের যত্নে প্রয়োজনীয় কিছু টিপ্স
• মুলতানি মাটি, লবঙ্গ, তুলসিপাতা দিয়ে প্যাক বানিয়ে লাগালে ব্রণের সমস্যা কমে। • তুলসি, নিম পানি ফুটিয়ে গোসল করলে র্যাশ কমে যায়। • যে কোন ধরনের ত্বকেই চালের গুঁড়ো, টকদই, মধু দিয়ে স্ক্রাবিং চলতে পারে। • কমলা লেবুর রস ভাল টোনিং-এর কাজ করে। • ছানার জল, মুলতানি মাটি আর মধু মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মুখ সহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গে লাগাতে পারেন। উজ্জ্বলতা বাড়বে। • গ্লিসারিন আর গোলাপ জল মেখে রোদে বেরোবেন না। এতে ত্বক কালো হয়ে যায়।