চুল পড়া কমাবে কোন হেয়ার মাস্ক?
ঋতু বদলের সাথে চুল ও ত্বকজনিত সমস্যাগুলো দেখা দেওয়া শুরু করে। এর মাঝে সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যাটি। দেখা গেছে প্রতি পনের জন নারীর মাঝে ৯-১২ জনই অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যায় ভুগে থাকেন।
এক্ষেত্রে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। শুধু ঋতুজনিত কারণই চুল পড়ার সমস্যাটি তৈরি করে না। এর সাথে থাকে লম্বা সময়ের চুলের সমস্যা, যা ঋতু বদলের সময়ে বেড়ে যায়। ফলে এ সময়ে উপকারী ও প্রয়োজনীয় হেয়ার মাস্ক ব্যবহারে চুল পড়ার সমস্যাটি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
ডিমের হেয়ার মাস্ক
এই হেয়ার মাস্কটি তৈরির জন্য প্রয়োজন হবে একটি ডিম, এক কাপ দুধ, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস ও দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল। সকল উপাদান একটি পাত্রে ভালোভাবে হুইস্ক করে চুলের গোঁড়ায় ম্যাসাজ করে শাওয়ার ক্যাপের সাহায্যে চুল ঢেকে রাখতে হবে ২০ মিনিটের জন্য। এরপর নন-সালফেট শ্যাম্পুতে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
কেন এই হেয়ার মাস্ক কাজ করবে?
ডিমে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন ও ভিটামিন-বি একইসাথে চুল পড়ার হার কমাতে ও নতুন চুল গজাতে কাজ করে। সাথে থাকা লেবুর রস মাথার ত্বককে পরিষ্কার করার পাশাপাশি অলিভ অয়েল চুলকে মসৃণ রাখবে। সপ্তাহে একবার এই হেয়ার মাস্ক ব্যবহার চুল ভেতর থেকে পুষ্টি পাবে এবং কমে যাবে চুল পড়ার হার।
কলার হেয়ার মাস্ক
কলার হেয়ার মাস্ক তৈরিতে প্রয়োজন হবে দুইটি পাকা কলা, এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, এক টেবিল চামচ নারিকেল তেল ও এক টেবিল চামচ মধু। প্রথমেই একটি পাত্রে কলা দুইটি চটকে নিতে হবে। এরপর এতে অলিভ অয়েল, নারিকেল তেল ও মধু মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করতে হবে। হেয়ার মাস্ক তৈরি হয়ে গেলে পুরো চুলে মাস্কটি ম্যাসাজ করে ১৫ মিনিটের জন্য রেখে দিতে হবে। এরপর হালকা কুসুম গরম পানিতে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
কেন এই হেয়ার মাস্ক কাজ করবে?
কলা হলো পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রাকৃতিক তেল ও ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি ফল। যা চুল পড়ার হারকে দ্রুত কমিয়ে আনতে কাজ করে। কলার সাথে মধু ও নারিকেলের তেলের মিশ্রণ খুশকির সমস্যাকে কমাতে ও চুলের ক্ষতির মাত্রা কমাতে সাহায্য করবে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুইবার এই হেয়ার মাস্ক ব্যবহারে খুশকির সমস্যার সঙ্গে চুল পড়ার সমস্যাটিও কমে আসবে।
টকদইয়ের হেয়ার মাস্ক
মাত্র তিনটি উপাদান ব্যবহারেই তৈরি করা যাবে এই হেয়ার মাস্কটি। এক কাপ টকদই, এক টেবিল চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার ও এক টেবিল চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে টকদইয়ের হেয়ার মাস্ক। চুলের একদম গোড়া থেকে ম্যাসাজ করে এপ্লাই করতে হবে এই হেয়ার মাস্কটি। পুরো চুলে হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করা হয়ে গেলে শাওয়ার ক্যাপ পরে অপেক্ষা করতে হবে ১৫-২০ মিনিট। এরপর ঠাণ্ডা পানিতে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
কেন এই হেয়ার মাস্ক কাজ করবে?
ক্ষতিগ্রস্ত চুল ভেঙে যাওয়া থেকেও অনেক সময় চুল পড়ার হার বেড়ে যায়। এই হেয়ার মাস্কটি মূলত চুলের ক্ষতির মাত্রা কমাতে ও চুলের গোড়ার ইনফেকশনের সমস্যাটি দূর করতে কাজ করবে। এতে থাকা অ্যাপল সাইডার ভিনেগারের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাংগাল ধর্ম ইনফেকশনকে দ্রুত সারিয়ে তুলবে। এছাড়া টকদই ও মধু চুলের ক্ষতির মাত্রাকে কমিয়ে আনবে। সপ্তাহে দুই বার এই হেয়ার মাস্ক ব্যবহারে দ্রুত ভালো ফল পাওয়া যাবে।