যে ঘরোয়া তাপমাত্রায় ঘুমালে কমবে ওজন!
ঘুমের সময়, ঘুমানোর ভঙ্গীর মতো ঘুমের সময় ঘরের তাপমাত্রা সুস্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। যে বিষয়টি অনেকেরই অজানা। রাত্রিকালীন ঘুমের সময় ঘরের তাপমাত্রার সাথে মেটাবলিজম ও ওজন কমার সম্পর্ক রয়েছে। শুধু তাই নয়, আরামদায়কভাবে ঘুমাতেও এই তাপমাত্রা বেশ কার্যকরী।
বিশেষত শীতকালীন সময়ে ঘরোয়া তাপমাত্রার বিষয়টিতে জোর দেওয়া প্রয়োজন। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় অনেকেই ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে, হিটারের সাহায্যে ঘর গরম করে, ভারি কম্বল বা লেপের ভেতর ঘুমাতে পছন্দ করেন। যা আরামদায়ক হলেও, তার সাথে খেয়াল রাখতে হবে ঘরের তাপমাত্রা যেন নির্দিষ্ট একটি পর্যায়ে থাকে। তবেই ঘুমের সময় মেটাবলিজম কাজ করতে পারবে বলে জানাচ্ছে বিজ্ঞান।
এই তাপমাত্রাটি কিছুটা শীতল হবে, উষ্ণ নয়। ঘরোয়া এই আদর্শ তাপমাত্রাটি হলো ৬৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ১৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জার্নাল ডায়াবেটিসে ২০১৪ সালের একটি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়- যে সকল পুরুষরা ঘরোয়া তাপমাত্রা ৬৬ ডিগ্রি ফারেনহাইটে রেখে ঘুমিয়েছিল, এক মাসের মাঝে তাদের ‘ক্যালোরি বার্নিং ব্রাউন ফ্যাট’ এর পরিমাণ ৪২ শতাংশ এবং মেটাবলিজমের মাত্রা ১০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল। শুধু তাই নয়, দেখা যায় তাদের ইনস্যুলিন সেনসিটিভিটি আগের চেয়ে ভালো হওয়ায় টাইপ-২ ডায়াবেটিস দেখা দেওয়ার সম্ভাবনাও কমে গিয়েছিল।
গবেষকরা বিশ্বাস করেন, শীতল স্থানে ঘুমানোর ফলে আমাদের শরীর নিজ থেকে কাজ করা শুরু করে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রিতে আনার জন্য। যেটাকে বলা হয় ‘শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা’। যদিও মানুষভেদে এই তাপমাত্রা কম-বেশি হতে পারে।
‘ঘুমানোর সময় ঘরের তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকলে ঘুমের মাঝেই শরীরের 'থার্মোরেগুলেটরি ফাংশন' শরীরকে উষ্ণ রাখতে কাজ করে’, এমনটাই জানান ক্যালিফোর্নিয়ার সিড্রাস-সিনাই মেরিন ডেল রে হসপিটালের ওয়েট লস প্রোগ্রামের ম্যানেজার ব্রিজেট এজ।
ব্রিজেট আরও বলেন, ‘এই ফাংশনের সময় শরীরের ব্রাউন ফ্যাট সেলগুলো একটিভ হয়ে ওঠে শরীরকে তার প্রয়োজনীয় উত্তাপ দেওয়ার জন্য।’
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন জানাচ্ছে, তুলনামূলক শীতল ঘরে দ্রুত ও ভালো ঘুম হয়। জার্নাল অব সাইকোলজিক্যাল অ্যানথ্রোপলজিতেও পাওয়া যায় উষ্ণ ঘরে ঘুমালে বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
সাউন্ড স্লিপ ও মেটাবলিজমকে সবসময় কার্যকর রাখতে চাইলে ঘরোয়া তাপমাত্রাকে শীতল রেখে (৬৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ঘুম ভালো হলে এমনিতেও সুস্থতা পাওয়া সহজ হয়ে যায়। এছাড়া সঠিক তাপমাত্রায় ঘুমানোর ফলে ক্ষতিকর ফ্যাট বার্ন হবে এবং কমবে ডায়াবেটিস দেখা দেওয়ার সম্ভাবনাও।
আরও পড়ুন: