স্পর্শকাতর ত্বক রক্ষায় যা জানা জরুরি

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিয়মিত যত্ন ছাড়া কখনোই সুস্থ ও আকাঙ্ক্ষিত ত্বক পাওয়া সম্ভব নয়। তবে যাদের ত্বক স্পর্শকাতর, তাদের সমস্যাটা অন্যদের চাইতে বেশ অনেকটা বেশি। যত্ন নেওয়া হলেও নিয়মের সামান্য এদিকসেদিকেই সমস্যা দেখা দেয়। এ জন্যেই শুষ্ক ত্বক, তৈলাক্ত ত্বক কিংবা মিশ্র ত্বকের ধরনের চাইতে বেশ অনেকটা বেশি যত্ন ও নিয়মের প্রয়োজন হয় স্পর্শকাতর বা সেনসিটিভ ত্বকের জন্য।

শীতকালে স্পর্শকাতর ত্বকের সমস্যাগুলো দেখা দেয় তুলনামূলক বেশি। আবহাওয়া ও ত্বকের যত্নের পরিবর্তনের জন্যেই এমনটা হয়। এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে নজর রাখা প্রয়োজন তা তুলে ধরা হলো।

বিজ্ঞাপন

রোদ থেকে দূরে থাকুন

এখনকার সময়ে সবাইকেই পরামর্শ দেওয়া হয় নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহারের জন্য। রোদের আলোর ক্ষতিকর ইউভিএ ও ইউভিবি রশ্মি থেকে সানস্ক্রিন ত্বককে রক্ষা করে। বিশেষত স্পর্শকাতর ত্বকের উপর রোদের আলো উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলে। এ কারণে যাদের ত্বক স্পর্শকাতর, সানস্ক্রিন ব্যবহার তাদের জন্য বাধ্যতামূলক। শীতকালে কুয়াশার জন্য রোদের আলোর উপস্থিতি বোঝা যায় না। কিন্তু তখনও রোদের আলো রয়ে যায় কুয়াশার আড়ালে। স্পর্সকাতর ত্বকের অধিকারীদের রোদের আলোর প্রভাবে সহজেই ত্বকে জ্বালাপোড়া ও চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই মনে করে বাইরে বেরুনোর আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করে নিতে হবে।

দূরে থাকুন ডিটারজেন্ট থেকে

skin

ডিটারজেন্ট ক্লিনজার ও অ্যাস্ট্রিজেন্ট জিনিসপত্র ভালোভাবে পরিষ্কার হতে সাহায্য করলেও, এই উপাদানগুলো ত্বকের ফ্যাটকে ভেঙে ফেলে। এই ফ্যাটই মূলত ত্বককে সুরক্ষিত স্তরে আবৃত রাখে। ফলে থালাবাসন বা জামাকাপড় পরিষ্কারের সময় গ্লভস ব্যবহার করা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। যাদের ত্বক স্পর্শকাতর তাদের নিয়মটি আরও ভালোভাবে মেনে চলা জরুরি। কারণ স্পর্শকাতর ত্বকের সমস্যা শুধু মুখের ত্বকেই নয়, পুরো শরীরের ত্বকেই তার প্রভাব তৈরি করে।

বিজ্ঞাপন

ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় থাকার চেষ্টা করুন

স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য উষ্ণ ও গরম আবহাওয়া খুবই ক্ষতিকর। সেক্ষেত্রে সবসময় চেষ্টা করতে হবে তুলনামূলক কিছুটা শীতল পরিবেশে থাকার জন্য, শীতল পানি ব্যবহারের জন্য। তবে খুব বেশি ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার না করাই উত্তম। এছাড়া ত্বককে শীতলভাব প্রদানের জন্য পিপারমিন্ট অয়েলের ব্যবহার খুব ভালো কাজ করবে।

ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করা আবশ্যক

যে বিষয়টি ভুলে গেলে কোনভাবেই চলবে না, সেটা হলো ত্বককে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজ করা, ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা। স্পর্শকাতর ত্বক খুব দ্রুত তার আর্দ্রতা হারায়। যার ফলে ত্বকের শুষ্কতা থেকে ত্বকজনিত সমস্যার প্রভাব বেড়ে যায় অনেকখানি। স্পর্শকাতর ত্বককে ভালো রাখার জন্যে নিয়মিত ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টপূর্ণ খাবার গ্রহণ করুন

skin

এতোক্ষন যতগুলো পয়েন্ট উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিটিতেই ত্বকের যত্ন ও যত্নে করণীয় বিষয় সম্পর্কে জানানো হয়েছে। কিন্তু একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনও পর্যন্ত বলা হয়নি। বাহ্যিকভাবে যতই ত্বকের যত্ন নেওয়া হোক না কেন, স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য উপাদান গ্রহণ করা না হলে কোন উপকারই হবে না। বিশেষত স্পর্শকাতর ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পূর্ণ খাবার ও পানীয়ের প্রতি জোর দিতে হবে সবচেয়ে বেশি। এক্ষেত্রে গ্রিন টি পানে উপকার পাওয়া যাবে সবচেয়ে বেশি। গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রদাহবিরোধী ধর্ম ত্বককে ভেতর থেকেই সুরক্ষিত রাখতে কাজ করবে।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন

আমাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে অন্যান্য যেকোন সময়ের চাইতে বেশি স্পর্শকাতর ও পাতল হয়ে ওঠে। ত্বকের শুষ্কতাকে প্রতিরোধ করতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর হলো পর্যাপ্ত পানি পান করা। বয়স বৃদ্ধির সাথে আমাদের ত্বক শুষ্ক হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানের মাধ্যমে খুব সহজেই ত্বকের আর্দ্রতাকে ধরে রাখা সম্ভব। যাদের ত্বক স্পর্শকারত তাদের এ বিষয়ে বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে।