নতুন বছরে প্রতি মাসে একটি কাজ! (পর্ব-১)

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে পারলে মন ও শরীর সুস্থ থাকবে

প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে পারলে মন ও শরীর সুস্থ থাকবে

ফিচারের টাইটেল পড়ে অনেকেই ভ্রু কুঁচকে ফেলতে পারেন। প্রতি মাসে শুধু একটি কাজই করতে হবে? আর কোন কাজই করা হবে না? মোটেও তা নয়। প্রতি মাসে একটি কাজ মানে বোঝানো হয়েছে, প্রতি মাসে নির্দিষ্ট একটি বিষয় বা কাজের উপরে জোর দেওয়া। সেটাতে অভ্যস্ততা গড়ে তোলা। প্রতি মাসেই এমন কাজের সাথে নিজের প্রাত্যহিক জীবনকে জড়িয়ে ফেলা, যা শারীরিক-মানসিক সুস্থতার সাথে জীবনের বহু ক্ষেত্রে উপকারে আসবে।

নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে একবারে অনেকগুলো রেজ্যুলিউশন একসাথে শুরু করা হয় বলে দ্রুতই তা থেকে আগ্রহ হারিয়ে যায়। এমনটা না করে যদি প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ফোকাস রেখে কাজ করা যায়, তবে খুব ভালোভাবেই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে। এই ফিচারের প্রথম পর্বে দেখে নিন প্রথম ছয় মাসের ছয়টি কাজ।

বিজ্ঞাপন

জানুয়ারি: পর্যবেক্ষণ

কিছুই না, কিন্তু এই কাজটাই অনেক বড় পরিবর্তন আনবে জীবনে। আমাদের চারপাশের বহু কিছু ও বহু ঘটনা আমরা কখনো খেয়াল করি না, ভালোমতো দেখার চেষ্টা করি না। অভিজ্ঞদের ভাষায় ‘স্লিপওয়াকিং’ এর মতো নিজ খেয়ালে চলাফেরা করা হয় বেশিরভাগ সময়। কিন্তু চোখ ও মন খুলে চারপাশকে পর্যবেক্ষন করলেও জানা যাবে অনেককিছু। প্রথম মাসটা তাই শুধু পর্যবেক্ষনের দিকেই নজর দিতে হবে।

ফেব্রুয়ারি: কবিতা

বই পড়া

বই পড়তে পছন্দ করলেও কবিতা পড়তে ভালোবাসেন অল্প সংখ্যক মানুষ। ২০১৭ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল এনডোওমেন্ট ফোর দ্য আর্টস এর তথ্যানুসারে প্রাপ্তবয়স্কদের মাঝে মাত্র ১১.৭ শতাংশ কবিতা পাঠ করেন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি তাই কবিতার জন্য রাখুন। কবি পড়ুন, কবিতা পাঠ শুনুন বা নিজে লেখার চেষ্টা করুন- কিন্তু কবিতার সাথেই থাকুন। কবিতার সাথে থাকার সায়েন্টিফিক বা স্বাস্থ্যজনিত কোন বিষয় জড়িত নয়। কিন্তু কবিতা নিজের ভেতরের সৌখিনতাকে প্রকাশিত করতে কাজ করবে।

বিজ্ঞাপন

মার্চ: ঘুম

ঘুম

ঘুমের সাথে শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্য সরাসরিভাবে জড়িত। মেডিক্যাল রিসার্চেও উঠে এসেছে এই বিষয়টি। মার্চ মাসকে তাই রাখুন ঘুমের জন্য। খেয়াল করে দেখুন, প্রতিদিন আমাদের ঘুমের সময়ে ঘাটতি থেকে যায়। এর প্রভাব খুব সূক্ষ্মভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা দেয়। ঘুমের অপ্রতুলতায় মন-মেজাজ খিটখিটে থাকে, মনোযোগ কমে যায়, ক্ষুধাভাব কমে যায়, ঘনঘন মাথাব্যথার সমস্যা দেখা দেয়। এই মাসে যে শুধু ঘুমাতে হবে তা নয়। তবে এই মাসে অন্যান্য কাজের ভিড়ে পর্যাপ্ত ঘুমানোর ওপর জোর দিতে হবে সবচেয়ে বেশি।

এপ্রিল: প্রকৃতি

মনগড়া কোন কথা নয়, গবেষণাপ্রাপ্ত তথ্য জানাচ্ছে, প্রকৃতি মন ভালো রাখতে ও আয়ু বাড়াতে অবদান রাখে। অথচ আমাদের প্রতিদিনের ব্যস্ত ও যান্ত্রিক জীবনের সাথে প্রকৃতির সংস্পর্শ থাকে খুবই কম। তাই এপ্রিল মাসটিকে আলাদাভাবে রাখুন প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার জন্য। সময় ও সুযোগ বুঝে কয়েকদিনের ছুটিতে ঘুরে আসুন গ্রামাঞ্চল থেকে। সমুদ্র কিংবা পাহাড়, যা বেশি প্রিয় তার কাছে চলে যান কয়েকদিনের জন্য। লম্বা সময়ের ছুটি না পেলে অল্প সময়ের জন্যেই ঘুরে আসুন ঢাকার আশেপাশের স্থান থেকে। চেষ্টা করুন নিজের ঘর, বারান্দা কিংবা ছাদে গাছ লাগানোর।

মে: মেডিটেশন

মাসের নামের সাথে মিল রেখে মে মাসটাকে ঠিক করুন মেডিটেশনের জন্য। মেডিটেশনকে বলা হয় ‘সুপার হ্যাবিট’, যা মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর একটি পদ্ধতি। প্রতিদিনের জীবনে ৩০ মিনিট সময়কে আলাদাভাবে রাখতে হবে মেডিটেশনের জন্য। মেডিটেশনের বেশ বড় একটি অংশ হলো সঠিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া। সঠিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাসের অভ্যাস গড়ে তুলে প্রতিদিন ১৫ মিনিট সময় এক্ষেত্রে ব্যয় করলেও উপকার পাওয়া সম্ভব হবে।

জুন: কথা শোনা

অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা হয় খুব কম। নিজের কথা বলাতেই আমরা ব্যস্ত থাকি সবসময়। জুন মাসকে তাই বেছে নিন অন্যের কথার মনোযোগ দিয়ে শোনার প্রতি। মানুষের কথা শোনার অভ্যাসটি রপ্ত করাও বেশ কঠিন কিন্তু! একবার চেষ্টা করেই দেখুন।