কীভাবে সামাল দেবেন অপূর্ণ প্রত্যাশা?
সব আশা, প্রত্যাশা কি পূরণ হয়? অবধারিতভাবেই উত্তর হবে- না। হাজার চেষ্টা ও পরিশ্রম করা হলেও কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থতার স্বাদ নিতে হয়, হতাশ হতে হয়, মুষড়ে পড়তে হয়। এমনটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনেকেই অপূর্ণ প্রতাশার চাপ নিতে পারেন না। তাদের জন্য এই বিষয়টি খুবই নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। এ সময়টা কীভাবে নিজেকে সামাল দিতে হবে, কোন বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে হবে সেটাই জানানো হল।
লজ্জিত হবেন না
যেকোন অপূর্ণ প্রত্যাশা থেকেই লজ্জা, অনুতাপ ও মানসিক চাপের জন্ম হয়। সাথে থাকে প্রবল হতাশাও। এটা একেবারে সহজাত বৈশিষ্ট্য এবং এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নেতিবাচক এই অনুভূতিগুলোকে বাড়তে দেওয়া যাবে না। যখনই হতাশা ও লজ্জা অনুভূতিকে প্রচ্ছন্ন করে ফেলবে, পিছিয়ে পড়তে হবে। মানসিক চাপের মুখে থাকতে হবে। কোন একটি প্রত্যাশা পূরণ না হতেই পারে। কিন্তু তার জন্য নিজেকে আরও বেশি চাপের মুখে ঠেলে দেওয়া হবে একেবারেই ভুল।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বাড়িয়ে বলবেন না
কোন কাজ যখন পূরণ হয় না, প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল পাওয়া হয় না তখন স্বাভাবিকভাবেই আশেপাশের সবকিছুকে তুচ্ছ ও নগণ্য বলে মনে হয়। শুধুমাত্র সে বিষয়টিকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে বোধ হয়। এছাড়া মানুষের একদম সহজাত একটি স্বভাব হলো, যেকোন বিষয়কে বাড়িয়ে বলা ও উপস্থাপন করা।
হতেই পারে যে বিষয়টি পূরণ হয়নি সেটা বেশ বড় একটি ব্যাপার। কিন্তু সেটা নিয়ে খুব বেশি সময় নষ্ট করা, বারবার সেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হবে একেবারেই অনুচিত।
খুঁতখুঁতে স্বভাবকে পরিহার করুন
প্রবল খুঁতখুঁতে স্বভাব থেকেও অপূর্ণতা দেখা দেয়। সর্বোচ্চ মাত্রার পারফেকশনও এমন মানুষদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায় না। এই খুঁতখুঁতে স্বভাব হতে পারে নিজের বর্তমান পরিস্থিতি, নিজের অতীত, নিজের ভবিষ্যৎ, নিজের চাকরি, পরিবার, বন্ধু, ঘরবাড়ি, আর্থিক অবস্থাসহ যেকোন কিছুই নিয়ে। সর্বক্ষণ সকল বিষয় নিয়ে খুঁতখুঁত করা থেকেই হতাশা ও অপূর্ণতার জন্ম নেয়। মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। তাই অতিরিক্ত পারফেকশনিস্ট হওয়ার স্বভাবকে বিদায় জানাতে হবে।
স্বার্থপর হওয়া যাবে না
স্বার্থপর শব্দটা হয়তো বেশ কঠিন শোনাতে পারে, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এটাই ঘটে থাকে। কোন কারণে নিজের আশা পূরণ না হলে দুঃখ পাওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু অনেকেই মন খারাপের সাথে রেগে থাকেন। অন্যকে অকারণে কটু কথা শোনান। অন্যের জরুরি কোন বিষয়ের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করতে চান না, কারোর সমস্যা কিংবা ভালো কোন কিছুতেও আগ্রহ দেখান না। যা এক অর্থে স্বার্থপরতা প্রকাশ করে। অপূর্ণ আশা থেকে সাময়িক বিষণ্ণতা দেখা দেওয়া, বিষণ্ণ হয়ে থাকায় কোন সমস্যা নেই। কিন্তু দিনের পর দিন এমনভাবে পার করে দিয়ে পক্ষান্তরে কাছের ও প্রিয় মানুষদের কষ্ট দেওয়া একেবারেই অনুচিত আচরণ।
ক্ষমা করে দিন
প্রত্যাশা অপূর্ণ থেকে যাওয়ার বিষয়টি সবসময় যে নিজের জন্যই হয় তা কিন্তু নয়। পরিবারের মানুষ, বন্ধুবান্ধব, প্রিয়জন, সহকর্মীদের উপরে থাকা প্রত্যাশা থেকেও অপূর্ণতা তৈরি হয়। এমন ক্ষেত্রে সবচেয়ে বুদ্ধিমানে কাজ হল, খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না হলে সে বিষয়টি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলা এবং যার উপরে মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া। মন থেকে যখন এই ভার নামিয়ে ফেলতে পারবেন, তখন খুব সহজেই সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।