অস্থির সময়ে সুস্থির রাখুন নিজেকে
চারপাশের যেকোন কঠিন সময়ের অস্থিরতা সহজেই মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে। এতে করে অস্থিরতা দেখা দেওয়া, উদ্বিগ্ন হওয়া, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়ার মত লক্ষণগুলো দেখা দিতে শুরু করে।
করোনাভাইরাসের প্রতাপ এখন পুরো বিশ্ব জুড়েই ছড়িয়ে পড়েছে। যার আঁচ বাংলাদেশেও দেখা দিয়েছে বিগত কয়েকদিন থেকে। এমন সময়ে নানান চিন্তার মাঝে নিজেকে শান্ত ও সুস্থির রাখা কিছুটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয় মোটেও। জানুন কোন কাজগুলো আপনাকে শান্ত রাখতে সাহায্য করবে।
নিঃশ্বাস
ডেলফি বিহাভিয়ারাল হেলথ এর প্রশিক্ষক স্কট ডেথরথি জানান, রাগ ও উদ্বেগের মত প্রচণ্ড নেতিবাচক অনুভূতিগুলো থেকে নিজেকে মুক্তি দিতে সঠিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়াই যথেষ্ট। আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অসচেতনভাবে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নেই। যার প্রভাবে মস্তিস্ক তার প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন পায় না। যখন অতিরিক্ত অস্থিরতা বোধ হবে, কোন সমতল স্থানে সোজা হয়ে বসে নাকের সাহায্যে ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস গ্রহণ করতে হবে, এরপর পাঁচ সেকেন্ড নিঃশ্বাস ধরে রেখে ধীরে ছেড়ে দিতে হবে। এইভাবে অন্তত ৬-১০ মিনিট করলে অস্থিরতা কমে আসবে।
রিল্যাক্সিং মিউজিক
দমবন্ধ, থম ধরে থাকা অনুভূতিকে দূর করতে চাইলে আশ্রয় নিতে হবে প্রশান্তিদায়ক, ধীর লয়ের সুরের কাছে। কোন গান নয়, এ সময়ে ভালো কাজ করবে রিল্যাক্সিং মিউজিক। ইউটিউবি বিভিন্নধরনের রিল্যাক্সিং মিউজিক পাওয়া যায়। পছন্দ অনুযায়ী যেকোন একটি প্লে করে কানে হেডফোন গুঁজে চুপচাপ কিছুক্ষণ শুয়ে থাকতে হবে। এই পদ্ধতিটি খুবই কার্যকরি।
কথা বলা
যখনই প্যানিক অ্যাটাক দেখা দিবে কিংবা দুশ্চিন্তা বেড়ে যাবে, নিজেকে লুকিয়ে না রেখে কারোর সাথে কথা বলতে হবে। এ সময়ে কাছের ও প্রিয় কারোর সাথে কথা বললে হালকা বোধ করা সম্ভব হবে।
হাঁটাচলা
অনেকের ক্ষেত্রে এক স্থানে লম্বা সময়ের জন্য স্থিরভাবে বসে বা শুয়ে থাকলে অস্থিরতা বেড়ে যায়। এমনটা হলে কিছুক্ষণ পরপর হাঁটাচলা করতে হবে, সাথে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে হবে। অন্তত ১০০ ধাপ হাঁটা হলে অস্থিরতা কমতে শুরু করবে।
যোগব্যায়াম
ইয়োগা বা যোগব্যায়াম হল মন শান্ত রাখার আদি ও সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। এতে করে শরীর ও মনের মাঝে সংযোগ দৃঢ় হয়, যা একইসাথে শরীর ও মনকে শান্ত করতে কাজ করে।
লেখালিখি
যারা কম কথা বলেন এবং তুলনামূলক চুপচাপ থাকেন, তাদের ক্ষেত্রে নিজের অস্থিরতা প্রকাশ করা কঠিন হয়ে যায়। নিজের অনুভূতিগুলো লিখে ফেলা তাদের জন্য খুবই দারুন একটি পদ্ধতি। ডায়রি হোক কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম- নিজের অনুভূতিগুলোকে শব্দে প্রকাশ করতে পারলে ভালো বোধ হবে।