আসা যাওয়ার পথের ধারে...

ছবি: বার্তা২৪.কম
দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স। প্রতি শুক্রবার আমরা বেরিয়ে পড়তাম। কথাসাহিত্যিক, বিশ্ব সাহিত্যের নিষ্ঠ অনুবাদক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভিসি ও আমার একান্ত আপনজন নুরুল করিম নাসিম ভাই, অতি প্রিয় অনুজপ্রতিম সিফাত আহমেদ চৌধুরী, আমি ও আমার ব্যক্তিগত গাড়িচালক সুজাতুর রহমান বকুল। এই ছিল মূল টিম, তবে অতি আগ্রহ বিবেচনায় কোনো কোনো শুক্রবার একজন বন্ধুকে সাথে নিতাম। কবি ফেরদৌস সালামও বোধহয় দু’একবার ভীড়েছিলেন আমাদের সে পাগলামিতে। একেক শুক্রবার নতুন এক জেলা, নতুন গন্তব্য। সকালে রওনা, পথে জুম’আ সময় হলে সেখানেই নামাজে অংশগ্রহণ, দুপুরের আহার, দর্শনানন্দ শেষ করে ঘরে ফিরতে গভীর রাত হয়ে যেত। সিফাত তখন সবে বিয়ে করেছে, ওর নবপরিণীতা স্ত্রী অভিমানে বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে যখন সিফাতের দেরির জন্যে অনুযোগ করতো, সিফাত তখন খাঁটি সিলেটিঃ আইরাম আন্নি, আইরাম! অথচ আমরা হয়তো তখনো ঢাকা থেকে বেশ দূরে! নাসিম ভাবীর ঝাড়ি খেয়েও নাসিম ভাই তাঁর সুন্দর ব্যবহারের আড়ালে ঢেকে রাখতে চাইতেন সংসার সমুদ্রের ঝড়।
নুরুল করিম নাসিম ভাই তাঁর অনন্ত যাত্রা শুরু করেছেন দেড় বছরের বেশি সময় আগে (৫ই নভেম্বর ২০২০)। নাসিম ভাইকে আল্লাহ জান্নাতবাসী করুন এই মুনাজাত করি। ‘সৈয়দ সাহেব, বেরুবেন নাকি আবার?’ নাসিম ভাইয়ের কাছ থেকে আর কখনো এমন কল আসার সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে, হায়রে জীবন।
সিফাত এখন মহাব্যস্ত ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে। ওর সন্তানরা এখন বেশ মাথাধরা হয়ে উঠেছে!
জীবন-সময় খুব দ্রুত ফাঁকি দিয়ে এগিয়ে যায়, সে সবসময় চির নতুন থাকে, আমরা মানুষেরাই শুধু পুরনো, ন্যুব্জ ও অক্ষম হয়ে যাই। একসময় মৃত্যু এসে ঢেকে দেয় জীবনের সব আনন্দ আয়োজন...
লেখক: সৈয়দ রানা মুস্তফী, জাতীয় মিডিয়া ব্যক্তিত্ব