কারাগার থেকে কয়েদি নিখোঁজ: তিন দিনেও মেলেনি সন্ধান
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক কয়েদি পালানোর তিনদিন পরও সন্ধান মেলেনি।
এদিকে এ ঘটনায় প্রধান কারারক্ষীসহ ১২ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একজন ডিআইজি প্রিজনস, একজন সিনিয়র জেল সুপার ও একজন জেলারকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটি সূত্র বলছে, কারাগারের দেয়ালে থাকা আগাছা পরিষ্কার ও রং করার কাজে ব্যবহৃত মই দিয়ে বৃহস্পতিবার যে কোনো সময় পালিয়ে যেতে পারেন নিখোঁজ কয়েদি আবু বকর। সেটা মাথায় রেখে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে কয়েদি বকর সিদ্দিক নিখোঁজ হয়েছে। তার সন্ধান করা হচ্ছে। আমরা পুলিশকে বিষয়টি লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি। পুলিশ তার বাড়ি সাতক্ষীরা ও আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় অভিযান চালিয়েছে বলে অবগত করেছে। তবে এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান মেলেনি।
জিএমপির কোনাবাড়ি থানার ওসি এমদাদ হোসেন বার্তা২৪.কম-কে জানান, এ ঘটনায় কারাগারের জেলার বাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে গতকাল বিকেলে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পলাতক আবু বকরের সন্ধানে পুলিশ কাজ করছে। আমরা তার সংশ্লিষ্ট জেলা সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানাতে যোগাযোগ করেছি। তার বাড়িসহ আত্মীয়-স্বজনদের একাধিক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র সুপার জাহানারা বেগম জানান, সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার আবাদ চন্ডীপুর এলাকার তেছের আলী গাইনের ছেলে আবু বকর সিদ্দিক (৩৪) গত ২০১১ সালের ১৪ জুন হতে এ কারাগারে বন্দি ছিলেন। শ্যামনগর থানার একটি হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি হিসেবে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কাশিমপুরে স্থানান্তর করা হয়। ২০০২ সালের ১৭ মার্চ হত্যা মামলায় (নং-১২) আদালত আবু বকরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের আদেশ দেন ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট। পরবর্তীতে আসামির আপিলের প্রেক্ষিতে আদালত ২০১২ সালের ২৭ জুলাই ওই সাজা সংশোধন করে তাকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লকআপের সময় বন্দীদের গণনাকালে তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর হতে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।
এর আগেও কয়েদি আবু বকর সিদ্দিক কারাগার থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ২০১৫ সালের ১৩ মে সন্ধ্যায় কারাগারের সেল এলাকার একটি সেপটিক ট্যাংকের ভিতরে লুকিয়ে নিজেকে আত্মগোপন করেছিলেন। দীর্ঘ সময় খোঁজাখুঁজি শেষে পরদিন কারগারের ৪০ নং সেল এলাকার ওই সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।