লোকবলের অভাবে বন্ধ ১০৬ রেলস্টেশন
সাধারণ মানুষের পছন্দের আরামদায়ক একটি বাহন রেল যোগাযোগ। পুরনো এই যোগাযোগ মাধ্যম আগের তুলনায় জনপ্রিয় হয়েছে। নতুন রেলপথ নির্মাণ হয়েছে, বেড়েছে নতুন ট্রেনের সংখ্যা। পর্যায়ক্রমে রেলের প্রসারতা বাড়লেও বাড়েনি লোকবল। আর এই লোকবলের অভাব বন্ধ আছে রেলের প্রায় ১০৬টি রেলস্টেশন।
সারা দেশে প্রায় ৪৮৩টি রেলস্টেশন রয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে ৩৭৭ টি রেলস্টেশন চালু আছে। বাকি ১০৬ টি রেলস্টেশন যথাযথ লোকবলের কারণে বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে। বন্ধ ১০৬ রেলস্টেশনের মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলে ৬৬টি এবং পূর্বাঞ্চলে ৪০টি।
রেলওয়ে সূত্রে জান যায়, রেলওয়েতে প্রায় বর্তমানে ১৫ হাজারের বেশি শূন্য পদ রয়েছে।এর মধ্যে বেশির ভাগই কারিগরি পদ যাদের দরকার হয় ট্রেন চালানো, লাইন দেখাশোনা, সিগনালের বা স্টেশন পরিচালনার কাজে।
এদিক, বন্ধ আছে রেলের নিয়োগ প্রক্রিয়া। ১৯৮৫ সালে তৎকালীন সরকার রেলওয়েতে নিয়োগ বন্ধ করে দেন। ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়া জটিল হয়ে পড়ে এবং বন্ধ হয়ে যায় নিয়োগ। লোকবল কম থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই রেলের অবসরে যাওয়া দক্ষ কর্মকর্তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। যাতে করে রেলসেবা পেতে যাত্রীরা বাধাগ্রস্ত না হন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সবচেয়ে বড় বিভাগ হলো পশ্চিমাঞ্চলের পাকশী এই বিভাগেই বন্ধ আছে ৪৮টা রেলস্টেশন। বন্ধ স্টেশনের বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (পাকশী) মো.নাসির উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'পাকশী বিভাগে টোটাল ১৭২ রেলস্টেশন রয়েছ। তার মধ্যে বর্তমানে ৪৮ স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এসব স্টেশন বন্ধ থাকার কারণ হচ্ছে লোকবলের অভাব'।
তিনি আরো বলেন, 'দুটি ট্রেনের ক্রসিং হয় স্টেশনে। স্টেশন বন্ধ থাকার ফলে ক্রসিং করতে হয় যেসব স্টেশনগুলো চালু আছে সেসব স্টেশনে। দেখা যায় যে স্টেশনে ক্রসিং করা দরকার সেই স্টেশন বন্ধ থাকার ফলে তার থেকে দূরে যে স্টেশন চালু রয়েছে সেখানে দুটি ট্রেনের ক্রসিং করতে হয়। এর ফলে ট্রেন অপারেশনে সময় বেশি লাগে'।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রেল খাতে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করছেন। অনেক গুলো উন্নয়ন প্রকল্প রেলে চলমান আছে। প্রতিনিয়ত রেলে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন কোচ ও ইঞ্জিন। যদি চাহিদা অনুযায়ী লোকবল না থাকে তাহলে রেলের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। রেল সেবা পৌঁছাবে না যাত্রীদের কাছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বার্তা২৪.কমকে বলেন,'রেলের জন্য পৃথক নিয়োগবিধি করা হচ্ছে।প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে নতুন নিয়োগবিধি। তারপর রেলওয়েতে নতুন নিয়োগ দিতে পারব। এর আওতায় প্রায় ৪৭ হাজারের উপরে জনবল চাহিদা দেওয়া আছে। নতুন নিয়োগ বিধি অনুযায়ী জনবল নিয়োগ দিতে পারলে পর্যায়ক্রমে বন্ধ থাকা সকল রেলস্টেশন গুলো খুলে দেওয়া হবে। লোকবলের অভাব ছাড়াও বন্ধ স্টেশনের একটা লাইন চালু আছে এবং অন্য লাইন গুলোতে যেহেতু ট্রেন চলেনা সেগুলা সংস্কার করতে হবে,স্টেশন গুলোও সংস্কার করতে হবে যেহেতু দীর্ঘদিন বন্ধ আছে'।