নওগাঁয় খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা
কুয়াশা উড়ছে সকালের বাতাসে। গ্রামীণ এলাকার খেজুরের গাছের আশেপাশে বাড়ছে মানুষের আনাগোনা। আর সেই খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁ জেলার গাছিরা। শীতের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে রসের চাহিদাও। গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে তৈরি হয় খেজুর রসের হরেক রকমের পিঠা ও পায়েস।
সুস্বাদু এই খেজুরের রস আগুনে জ্বালিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়। তাই বাণিজ্যিকভাবেও খেজুরের রস সংগ্রহ করছে গাছিরা। ফলে এসব গাছিদের এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। খেজুর রস ও গুড় বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা।
গাছিরা জানায়, প্রতিদিন বিকালে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে মাটির কলস বেঁধে রাখা হয়। পরদিন সকালে ওইসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে বিক্রি করা হয়।
শিহাব উদ্দিন নামে এক গাছি বলেন, 'শীত মৌসুমের শুরু থেকেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করা হয়। শীতের প্রায় চার মাস রস সংগ্রহ করা যায়। এই রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে আমরা সংসার চালাই'।
শীতের পিঠা ও পায়েসের জন্য খেজুরের রস ও গুড়ের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে কেজি প্রতি ১০০ টাকা দরে খেজুরের গুড় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও এক কলস রস প্রকার ভেদে এক থেকে দেড়শ টাকায় বিক্রি হয় বলেও জানান তিনি।
পল্টু আলী নামে আরেক গাছি জানান, আশ্বিন মাস থেকে সাধারণত রস সংগ্রহ শুরু হয়। তবে পৌষ ও মাঘ মাসে সবচেয়ে বেশি রস পাওয়া যায়। এই সময় আবহাওয়া বেশি ঠান্ডা থাকায় রসও বেশি পাওয়া যায়।
খেজুর রস ক্রেতা সাদ্দাম হোসেন জুয়েল বলেন, 'শীতের সকালে গাছ থেকে নামানো কাঁচা রসের স্বাদ বর্ণনা করা সম্ভব নয়। এছাড়াও জ্বাল দেওয়া রসের তৈরি বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার অতুলনীয়'।
এদিকে নাহিদ হাসান মান্নান নামে এক গুড় ক্রেতা জানান, খেজুরের রস থেকে তৈরি পাটালি গুড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই গুড় দিয়ে হরেক রকম পিঠা বানানো হয়। যা বাংলার এক পুরনো সংস্কৃতিরই অংশ।