গরম পানি দিয়ে স্ত্রীর শরীর ঝলসে দিল স্বামী

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মৌলভীবাজার
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঝলসানো শরীর। ছবি: বার্তা২৪.কম

ঝলসানো শরীর। ছবি: বার্তা২৪.কম

মৌলভীবাজারে যৌতুকের টাকা না পেয়ে গরম পানি দিয়ে অনামিকা দেব (২৭) এক গৃহবধূর শরীর ঝলসে দিয়েছেন তাঁর স্বামী। গুরুতর অবস্থায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই গৃহবধূকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রোববার (২০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মৌলভীবাজার উপজেলার কনকপুর ইউনিয়নের আব্দা গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটলেও তা (২১ ডিসেম্বর) প্রকাশ পায় সোমবার।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ অনামিকা দেবের শরীরের ঘাড় থেকে পিঠের বড় একটা অংশজুড়ে গরম পানি পড়ে ঝলসে যাওয়ার কারণে বড় বড় ফোসকা উঠে যায়। এতে করে প্রচন্ড যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন ঐ গৃহবধূ। নির্যাতিত ওই গৃহবধূর স্বামী সঞ্জিত কান্তি নাগ (৪০)।

স্বামী ও সন্তানের সাথে অনামিকা দেব। ছবি: বার্তা২৪.কম

অনামিকা দেব জানান, যৌতুকের জন্য দীর্ঘদিন থেকে স্বামী ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করে আসছিলেন। গত রোববারেও বাবার বাড়ি থেকে ৫ লক্ষ টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেন সঞ্জিত কান্তি নাগ। এতে অনামিকা আপত্তি জানালে নির্যাতন শুরু করেন স্বামী সঞ্জিত ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা। নির্যাতনের এক পর্যায়ে তার শরীরে গরম পানি ঢেলে দেন সঞ্জিত।

বিজ্ঞাপন

গরম পানিতে অনামিকা দেবের শরীরে ১০ শতাংশ পুুড়ে ঝলসে গেছে।

পরে অনামিকার বাবা খবর পেয়ে অনামিকাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

অনামিকার বাবার বাড়ির সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে পারিবারিকভাবে সঞ্জিত কান্তি নাগের সঙ্গে বিয়ে হয় অনামিকা দেবের। বিয়ের পর অনামিকার বাবার বাড়ি থেকে প্রাপ্ত গয়না (স্বর্ণালঙ্কার) বিক্রি করে স্বামীকে সিএনজি কিনে দেন অনামিকা। এরপরও বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য তাকে মারধোর করতেন সঞ্জিত কান্তি নাগ।

অনামিকা বলেন, ননদ লাকি রাণী দে ও তার স্বামী (লাকি রাণীর স্বামী) আমার স্বামীকে (সঞ্জিত) সবসময় প্ররোচিত করতো। আমার শ্বাশুড়ি ও ভাশুরও আমাকে প্রায়শ নির্যাতন করতেন।

এ ঘটনায় ৫ জনকে অভিযুক্ত করে মৌলভীবাজার মডেল থানায় মামলা করেছেন অনামিকা।

মামলায় অভিযুক্তরা হলো- সঞ্জিত কান্তি নাগ (৪০), সুজিত নাগ (৫০), রণজিৎ নাগ (৪৫), বিজয়া রানী নাগ (৩৫), উমা রানী নাগ (৪২)।

মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এম ও) ডা. আহমেদ ফয়সল জামান জানান, রোববার সকালে অনামিকা হাসপাতালে ভর্তি হন। তার শরীরের ১০ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক বলেন, ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ থানায় এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।