নিষিদ্ধ বিটকয়েন ক্রয়-বিক্রয়ের মূলহোতা গ্রেফতার

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নিষিদ্ধ বিটকয়েন ক্রয়-বিক্রয়ের মূলহোতা গ্রেফতার

নিষিদ্ধ বিটকয়েন ক্রয়-বিক্রয়ের মূলহোতা গ্রেফতার

গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে অনলাইনে নিষিদ্ধ ভার্চুয়াল মুদ্রা বিটকয়েন ক্রয়-বিক্রয় ও প্রতারণার দায়ে এই চক্রের মূল হোতা মাে. রায়হান হােসেনকে (২৯) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১।

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) গাজীপুরের সফিপুর দক্ষিণ পাড়া থেকে র‌্যাবের একটি অভিযানিক দল তাকে গ্রেফতার করে।

বিজ্ঞাপন

এ সময় তার কাছ থেকে ১৯টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, ২২টি সিমকার্ড, নগদ ২৫ ইউএস ডলারসহ নগদ ১ হাজার ২৭৫ টাকা, ১টি কম্পিউটার, ৩টি মােবাইল, ১টি অডি গাড়ি, ৩টি ভুয়া চালান বই, ১টি ট্রেড লাইসেন্স, ১টি সার্টিফিকেট ও ১টি রেকর্ডিং মাইক্রোফোন জব্দ করা হয়।

এ বিষয়ে র‌্যাব জানিয়েছে, গােয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে, একটি প্রতারক চক্র বাংলাদেশে অনলাইনে নিষিদ্ধ ভার্চুয়াল মুদ্রা বিটকয়েন ক্রয় বিক্রয় করে আসছে এবং এর মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করছে। এরই ধারাহিকতায় র‌্যাবের সাইবার মনিটরিং সেলের মাধ্যমে অনলাইন পেট্রোলিং এ সক্রিয় হয় এবং গােয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে। এবং বিটকয়েনের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জনকারী কতিপয় চক্রকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

বিজ্ঞাপন

র‌্যাব আরও জানায়, অধিক নজরদারির মাধ্যমে র‌্যাব বিটকয়েন ক্রয়-বিক্রয় চক্রের মূল হােতা মাে. রায়হান হােসেনের নাম জানতে পারে। তার ওপর গােয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে তারা জানতে পারে, রায়হান বিটকয়েনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণাসহ মানি লন্ডারিং, ক্রেডিট কার্ড হ্যাকিং ও বিপুল পরিমাণ বিটকয়েন লেনদেন করেছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে আসামি জানিয়েছে, ২০০৬ সালে ব্যক্তিগত আগ্রহে কম্পিউটারের ওপর প্রশিক্ষণ নেয় সে। এরপর ২০১১ সাল থেকে ওয়েব ডেভেলপিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ইউটিউব চ্যানেলের কাজ করতো। এরপর ২০২০ সালের জুন মাস থেকে পাকিস্তানি নাগরিক সাইদের (২২) সহায়তায় সরকার কর্তৃক অননুমোদিত/অবৈধ বিটকয়েন নামক ভার্চুয়াল মুদ্রার মাধ্যমে প্রতারণা করে অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

র‌্যাব আরাও জানতে পারে, রায়হান ২০২০ সালের জুন থেকে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টের সাথে বিটকয়েনের মাধ্যমে প্রতারণামূলকভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছে। সে পাকিস্তান, নাইজেরিয়া এবং রাশিয়ান স্মাগলার, ক্রেডিট কার্ড হ্যাকারদের মাধ্যমে অবৈধ পাচারকারীদের সাথে যােগসাজস করে সাধারণ মানুষের সাথে জালিয়াতি করে আসছে।

র‌্যাব জানায়, আসামি ক্রেডিট কার্ড হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিটকয়েন ক্রয় করে। সে স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করে নামে-বেনামে দেশি এবং বিদেশি অনলাইন ব্যাংক হিসাব তদারকি করত। এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার ইউএস ডলার হাতিয়ে নিয়েছে ।

এছাড়া এম আর এইচ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির পরিচয় দিয়ে দেশে ভার্চুয়াল মুদ্রার মাধ্যমে একাধিক ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়। দেশে বিটকয়েনের মাধ্যমে এমনভাবে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে যাতে কোন ধরনের প্রমাণ থাকে না। তার নিকট হতে উদ্ধারকৃত জাল পরিচয়পত্র সে নিজেই তৈরি করত বলে জানায়। সে অবৈধভাবে উপার্জিত টাকা দিয়ে ৫-৬ মাস আগে ১ কোটি ৭ লাখ টাকায় অডি গাড়িও কেনেন।

গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।