‘দুর্গে’ মেয়র প্রার্থী দিতে পারেনি জাতীয় পার্টি

  • আমিনুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হারাগাছ পৌরসভা

হারাগাছ পৌরসভা

রংপুরকে জাতীয় পার্টির ‘দুর্গ’ বলা হলেও কাউনিয়ার হারাগাছ পৌরসভা নির্বাচনে লাঙল প্রতীকে নির্বাচনের জন্য মেয়র প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারেনি দলটি। এর আগেও ২০১৬ সালের নির্বাচনে সেখানে জাপার কোন দলীয় প্রার্থী ছিল না।

দলটির দুর্বল সাংগঠনিক অবস্থা ও দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর পর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়া প্রার্থী মনোনয়ন দিতে না পারার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন অনেকে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে জানা গেছে, রংপুর-৪ (পীরগাছা- কাউনিয়া) আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সাবেক দু'জন সংসদ সদস্য শাহআলম ও করিম উদ্দিন ভরসার বাড়ি হারাগাছে। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা মোস্তফা সেলিম বেঙ্গলের বাড়িও হারাগাছে। শুরু থেকেই কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলা জাতীয় পার্টির রাজনীতি ছিল হারাগাছ কেন্দ্রিক। তারপরও হারাগাছেই টানা দু'বার মেয়র প্রার্থী মনোনয়ন দিতে না পারায় দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।

মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলছেন, জাতীয় পার্টির আগের অবস্থান এখন আর নেই। ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করায় অনেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। জাতীয় পার্টির দুর্গ হিসেবে পরিচিত রংপুরের একটি পৌরসভার নির্বাচনে টানা দু'বার মেয়র পদে মনোনয়ন দিতে না পারা সাংগঠনিক দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ। এমন ব্যর্থতা দলের জন্য আরও বিপর্যয় ডেকে আনবে।

বিজ্ঞাপন

হারাগাছ পৌর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম বলেন, হারাগাছে পৌর কমিটি থাকলেও অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। উপজেলা ও জেলা কমিটি কোন খোঁজ খবর নেয় না। তাই দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তবে দলের আগের মতো জনপ্রিয়তা এখন আর নেই। টানা দুবার এখানে জাতীয় পার্টি থেকে কেউ নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করেনি।

রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক বলেন, হারাগাছ পৌরসভায় প্রার্থী মনোনয়ন দিতে দলের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে কেউই প্রার্থী হতে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব (রংপুর) ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি বলেন, করোনার কারণে আমরা পুরোপুরি কাজ করতে পারিনি। তাছাড়া প্রার্থীদের কিছুটা নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর আস্থা কমে যাওয়াও প্রার্থী দিতে না পারার কারণ।

তবে নির্বাচনের জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন তার জন্য আমরা কাজ করছি।

হারাগাছ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন প্রার্থী জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন। মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র হাকিবুর রহমান, আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদুল হক ও বিএনপির মোনায়েম হোসেন ফারুক।

পঞ্চম ধাপে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি হারাগাছ পৌরসভার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১১ ফেব্রুয়ারি এবং প্রতীক বরাদ্দ ১২ ফেব্রুয়ারি।

নির্বাচনে ২০টি কেন্দ্রের ১৬১টি বুথে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। এই পৌরসভায় মোট ভোটার ৪৯ হাজার ১৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২৩ হাজার ৬৯৩ ও নারী ভোটার ২৫ হাজার ৩২৪ জন।