‘খালেদা জিয়া জনগণের পার্লামেন্টে খুনিদের বসায়’

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রয়াত সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফকে হারিয়ে দেশ একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ এবং নিবেদিত প্রাণ সমাজ সেবককে হারালো বলে জানিয়েছেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, আমরা একজন দক্ষ সংসদ সদস্যকে হারিয়েছি, ‍যিনি একজন প্রবীণ সংসদ সদস্য হিসাবে অনেক নবীণ সংসদ সদস্যদের ট্রেনিং দেওয়া বা বুদ্ধি পরামর্শ দেওয়া সেটাও তিনি দিয়েছেন। দুভার্গ্যের বিষয় হলো তিনি যে এলাকা থেকে নির্বাচন করতেন চান্দিনা এলাকা। সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি কর্নেল রশীদের বাড়ি। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে নির্বাচন হয়, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থেকে যে নির্বাচন করেছিল। যে নির্বাচনে দেশের সকল রাজনৈতিক দল বয়কট করেছিল। একটা ভোটার বিহীন নির্বাচন। সেই নির্বাচনে ওই চান্দিনা থেকে কর্নেল রশীদকে সংসদ সদস্য করে সংসদে নিয়ে আসে এবং বিরোধী দলের নেতার আসনে বসান খালেদা জিয়া। দুইজনকে এনেছিলেন একজন হচ্ছে মেজর হুদাকে চুয়াডাঙ্গা থেকে আর কর্নেল রশীদকে। ১৫ আগস্টের খুনিদেরকে যেমন জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে এবং খালেদা জিয়া তার থেকে আরও একধাপ উপরে যেয়ে জনগণের পার্লামেন্টে খুনিকে এনে বসায়।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (০১ সেপ্টম্বর) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৪তম অধিবেশনে অধ্যাপক আলী আশরাফের মৃত্যুতে আনিত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা একথা বলেন। পরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শোক প্রস্তাব গৃহীত হয় বলে জানান।

অধ্যাপক আলী আশরাফ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি একজন ব্যবসায়ী, ‍কৃষি বিষয়ক অভিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন। সেই সাথে তিনি একজন জ্ঞানী লোক ছিলেন। আলী আশরাফ, অধ্যাপক। তিনি অধ্যাপনাও করেছেন, ব্যবসাও করেছেন আবার রাজনীবিদও ছিলেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন মাননীয় সংসদ সদস্যকে হারালাম। এটা আমাদের জন্য অত্যান্ত দুঃখজনক। তিনি ৫ বার সংসদ সদস্য হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সংসদ নেতা আরও বলেন, ৭ম সংসদে তিনি (আলী আশরাফ) ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন কমিটিতে কখনো সভাপতি কখনো সদস্য হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। উনার সাথে আমার দেখা হয়েছিল ‘৭৫ এর পর, যখন আমি ১৯৮০ সালে লন্ডনে। তিনি সব সময় ‘১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের যেমন প্রতিবাদও করেছেন আবার ৩ নভেম্বর যে হত্যাকাণ্ড তার বিরোধিতা করেছে আর সেখানে তিনি সাক্ষীও দিয়েছেন খুনিদের বিরুদ্ধে।

সংসদ নেতা বলেন, ‘১৫ আগস্টের খুনিদেরকে যেমন জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে এবং খালেদা জিয়া তার থেকে আরও একধাপ উপরে যেয়ে জনগণের পার্লামেন্ট, সেই খানে একজন খুনিকে এনে বসায়। পরবর্তিতে আবার ওই আসনে আলী আশরা ই জয়যুক্ত হয় জনগণের ভোটে। কাজেই তিনি সব সময় একটা আদর্শ নিয়ে চলতেন। সব থেকে বড় কথা তিনি শুধু রাজনীতিবিদ না, তিনি অনেকগুলো বই লেখেন যা থেকে মানুষের অনেক কিছু শেখার আছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন শীর্ষক একটা গবেষণামূলক বই ও প্রকাশ করেছেন যা আমাদের আগামী দিনের বাংলাদেশকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অবদান রাখবে।

‘আর নবীণ পার্লামেন্টরা যারা পার্লামেন্টের সদস্য হয়ে আসবেন তারাও অনেক কিছু শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন। তিনি তার সমসাময়িক রাজনীতি অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রায় ১৫টি বই লেখেন। রাজনীতিবিদদের পক্ষে লেখা খুব কমই হয়। কিন্তু তিনি সেদিক থেকেও পারদর্শী ছিলেন। আমরা একজন অভিজ্ঞ সংসদ সদস্যকে হারালাম। তিনি না ফেরার দেশেই চলে গেছেন। অধ্যাপক আলী আশরাফের মৃত্যুতে দেশ একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ এবং নিবেদিত প্রাণ সমাজ সেবককে হারালো।