সরকারের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ ও মানবিক রাষ্ট্র: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার `স্মার্ট বাংলাদেশ' ও মানবিক রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং এ- টেকনোলজি অনুষদের ডিন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু গ্রন্থিত ‘স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ৩৯২ পৃষ্ঠার এ বইটির ২৩টি অধ্যায়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার বিভিন্ন দিক বিধৃত হয়েছে।
‘প্রথমত তিনটি শিল্প বিপ্লব থেকে আমরা বহু বছর পিছিয়ে ছিলাম কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ধারণা থেকে আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব অর্থাৎ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, রবোটিক্স, আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স এগুলোর সাথে অত্যন্ত ঠিক সময়ে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হয়েছি এবং ঠিক এ জন্যই আমরা ২০০৮ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শ্লোগান দিয়েছিলাম, মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছিলাম' উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান।
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সুবিধার উদাহরণ তুলে ধরে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে করোনা মহামারি দেখা দেওয়ার পর যখন সমগ্র পৃথিবীর জনজীবন থমকে গিয়েছিলো, অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্থবির হয়ে গিয়েছিলো, তখন বাংলাদেশ থমকে যায়নি, সরকার পরিচালনা থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ সবকিছু চালু ছিলো।
তিনি বলেন, সেই কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্বের ধ্বনাত্মক জিডিপি অর্জনকারী মাত্র ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয়। সেই অর্থবছরেই আমরা মাথাপিছু আয়ে ভারতকে ছাড়িয়েছি। নিক্কি ইনস্টিটিউট এবং ব্লুমবার্গের যৌথ জরিপে করোনা মহামারি মোকাবিলার ক্ষেত্রেও বিশ্বে আমরা পঞ্চম, উপমহাদেশে প্রথম। ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা এবং প্রত্যন্ত জনপদের মানুষের কাছেও ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছার ফলেই এগুলো সম্ভবপর হয়েছে।
হাছান মাহমুদ এ সময় গ্রন্থকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘সরকার পরিচালনায় ডিজিটাল প্রযুক্তি সর্বোতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে আমরা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে যে নতুন ধারণা মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে চাই সেটি হচ্ছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট ব্যবসা দরকার। সেই চারটি মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ের ওপর গ্রন্থটির রচয়িতা অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবুকে ধন্যবাদ জানাই।’
একই সাথে মন্ত্রী তার বক্তৃতায় নিজেকে একজন নাগরিক হিসেবে তুলে ধরে বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে মানুষ নিজের জন্য, খ্যাতির জন্য, বিত্তের জন্য ছুটছে, কোনো ফুরসত নাই। এতে করে মানুষের মানবিকতা, মনুষ্যত্ব, মমত্ববোধ যেন হারিয়ে না যায়, সে দিকেও নজর রাখতে হবে। মানুষের গুণ হারিয়ে যাচ্ছে। দেশ, সমাজ রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের পারিবারিক, সামাজিক মূল্যবোধগুলো যেন টিকে থাকে এবং আরো সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়ায় সে বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
গ্রন্থকার ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবুর সভাপতিত্বে একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।