পাইকারির তুলনায় খুচরায় পেঁয়াজের দাম কমছে ধীরে
আমদানির দুদিন পার হতে চললেও খুচরা বাজারে ধীরে ধীরে কমছে পেঁয়াজের দাম। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে দাম দ্রুত কমে আসবে।
বৃহস্পতিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- আমদানি অনুমতি দেওয়ার পর এ পর্যন্ত ভারত থেকে ১৫ হাজার টন পেঁয়াজ দেশে আনা হয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ৪ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।
পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমদানি করা পেঁয়াজ আসার ফলে বাজারে পেঁয়াজের দামে বড় পতন হয়েছে। পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের মূল্য কেজিপ্রতি ৫০ টাকার কিছু বেশি কমেছে।
অথচ সরকার পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা দেওয়ার আগে এই পণ্যের দাম কেজিপ্রতি ৯০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। তবে আমদানির ঘোষণা আসার পর সেই দাম আর বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে থাকেনি। দাম বেশ দ্রুত নেমে আসতে শুরু করে। তবে দাম বেশি কমেছে পাইকারি বাজারে।
পাইকারি বাজারে ইতিমধ্যে আমদানি করা পেঁয়াজ চলে এসেছে। খুচরা বাজারগুলোতে আমদানি করা এই পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে এর দাম আরও কমে আসবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. সুমন বলেন, ভারতের পেঁয়াজ আসার কারণে প্রতিদিন দাম কমছে। চার-পাঁচ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ টাকার বেশি কমে গেছে। আমদানি বেশি হলে দাম হয়তো আগের অবস্থায় চলে আসবে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানির খবরে খুচরা বাজারে দাম কিছুটা কমেছে। তবে সরবরাহ না বাড়ায় ধীরে ধীরে কমছে দাম।
সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, আগামী সপ্তাহ নাগাদ বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়বে। ওই সময় নাগালের মধ্যে আসবে পেঁয়াজের দাম।
রাজধানীর ঢাকার বেশিরভাগ পেঁয়াজের দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজ পৌঁছায়নি। খুচরা বাজার থেকে ক্রেতারা দেশি পেঁয়াজ কিনছেন। এতে তাদের গুনতে হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা পর্যন্ত। খিলগাঁও গোড়ানবাজারের মুদিপণ্যের ব্যবসায়ী ও ভাই ভাই জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা আবির হোসেন টিটু জানান, আগের কেনা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। এখনও ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে আসেনি। তিনি জানান, ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে।
খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে আসা পেঁয়াজভর্তি ট্রাকে ভালো বস্তার সঙ্গে পচা পেঁয়াজের বস্তাও পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ভালো মানের পেঁয়াজগুলো কেজিপ্রতি ৫০ টাকায় এবং মান কমে যাওয়া পেঁয়াজগুলো ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, ভারত থেকে আসা পেঁয়াজগুলার কিছু ভালো আবার কিছু পচে গেছে। টানা কয়েকসপ্তাহ ট্রাকে পড়ে থাকায় এমন অবস্থা হয়েছে। আমরা ভালো-মন্দ আলাদা করে বিক্রি করছি। তবে গত সপ্তাহে আমরা প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। আজ বিক্রি করছি ৫০ টাকায়। কাজেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার পর কেজিপ্রতি ৪০ টাকা কমে গেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চলতি মাসের শেষে পবিত্র ঈদুল আজহা। বর্তমানে যেভাবে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে সে ধারা বজায় থাকলে দাম আর বাড়বে না। তবে আমদানি কমে গেলে তখন আবার বাজার অস্থিতিশীল হবার সম্ভাবনা থাকবে।