সবজির আগুন দামে নাজেহাল মানুষ
নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম লাগামছাড়া। খুবই কষ্টে আছে আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষ। পরিবারের খরচ ৪০ শতাংশ কমিয়েও সংসার চালাতে পারছি না। আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন শরিফ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি আরও বলেন, সবজির আগুন দামে আমাদের মতো মধ্যবিত্তের অবস্থা নাজেহাল। সবজির দাম শুধু বাড়ছেই। বাজারে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি খুঁজে পাবেন না।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর খিলক্ষেতসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, একমাত্র পেঁপে ছাড়া ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই।
খিলক্ষেত কাঁচাবাজারে বরবটি ও টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে। আর গাজর একধাপ এগিয়ে ১২০ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, বেগুন ৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা কেজিতে, মূলার কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, কচুর মুখি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়।
বাজারে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে আর পুরোনো আলু ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৭০ টাকা। আমদানির ঘোষণার পরও কমেনি ডিমের বাজার, হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়।
রাজধানীর মহাখালী বাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী আমিন উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বর্তমানে যে অবস্থা চলছে তাতে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের বাজারে আসাটাই বিলাসিত মনে হচ্ছে। কোনো কিছুতেই হাত দেওয়া যাচ্ছে না। সবজি খাবো, তারও দায় নেই। বাজারে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। আগে যে সবজি কিনেছি এক কেজি সেটা দামের কারণে বাধ্য হয়ে আধা কেজি কিনি। বাজার তদারকি না করার কারণে এমন হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
গার্মেন্টসে চাকরি করেন এনামুল কবির। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যে যার ইচ্ছামতো দাম রাখছে, কোনো জবাবদিহি নেই। আমাদের মতো মানুষের এই শহরে টিকে থাকা দায় হয়ে গেছে। সবজি কিনে খাবো তাও বিচার বিবেচনা করতে হয় কোন সবজিটা কিনব। তাই তুলনামূলক কম দামের পেঁপে কিনে খাচ্ছি। সন্তানের মুখে মাংস দিবে সে সুযোগও নাই।
সবজির বাড়তি দামের বিষয়ে খিলক্ষেত বাজারের সবজি বিক্রেতা হুমায়ন কবির বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে বাজারে সবজির দাম বাড়তি। এখন সবজির মৌসুম না, ফলে এগুলোর দাম বেশি। শীতকাল আসার আগ পর্যন্ত সবজির দাম বাড়তেই থাকবে বলে জানান তিনি।
খিলক্ষেত বাজার ঘুরে দেখা যায়, শিং মাছ (আকারভেদে) কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকায়, রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, মাগুর মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, মৃগেল ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়, পাঙ্গাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, ইলিশ প্রতি কেজি (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১৬০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকায়, বোয়ালমাছ প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায়, কাতল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।