‘শেখ সাহেবের সময় থাইক্যা ভোট দেই’

  ভোট এলো, এলো ভোট
  • রাজু আহম্মেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

ফজরে নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে কাইন্দা দোয়া করছি, আল্লাহ যেন জীবনের শেষ ভোটটা দিতে পাই। ভাবছিলাম ভোটটা দিতে পামু না। শেখ সাহেবরে প্রথম ভোট দিছি, তখন থাইক্যা ভোট দেই। উনি আমাকে চাকরি দিছে বাড়িতে আইসা। ভালো লোক ছিলো।

হাঁটার সক্ষমতা না থাকলেও ছেলের বউ জান্নাতুল ফেরদৌসের কাঁধে ভর নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোট দিতে এসে অশ্রুভরা চোখে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর মালিবাগের পিডব্লিউডি স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার বাসিন্দা ৮০ বছরের বৃদ্ধা মর্জিনা।

বিজ্ঞাপন

১৯৭০ সাল থেকেই ভোট দেন এই বৃদ্ধা। জীবনের প্রথম ভোট দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। থাকার ঘর না থাকায় স্বাধীনতার পর মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, সেই থেকে নৌকায় ভোট দিয়ে আসছেন বৃদ্ধা মর্জিনা।

অতীতের স্মৃতিচারণ করে মর্জিনা বেগম বলেন, যুদ্ধের সময় ভাত বসাইছি। এমন সময় গুলি ভাতের হাড়ি ছেদ কইরা দিছে, হায় রে শেখরে যখন গ্রেফতার করছে আমার খুব কষ্ট হইছে, মানুষ গো মাইরা মাইরা ফালায় দিছিলো। দেশ স্বাধীনের পর আমাগো রিলিপের টিন দিছিলো শেখ সাহেব। আমি সারা জীবন ভোট দিয়া আইছি তারে (নৌকা প্রতীকে)।

বিজ্ঞাপন

মর্জিনা বেগমের ছেলের বউ জান্নাতুল ফেরদৌস মুনিয়া বলেন, আমার শাশুড়ি সকালে উঠে নামাজ পড়ে শেখ মুজিবের জন্য দোয়া করেন। আজ উনি নামাজ পড়ে শুধু বলেছেন আল্লাহ ভোটটা যেন দিতে পাই। আসার পরও উনি বলছিল ভোট কি দিতে পামু। আমি তো কদিন হয় এই সংসারে এসেছি। বাড়ির সবাই বলে উনি ভোরে উঠেই ভোট দিতে যাইত।

মর্জিনা বেগম শ্বাসকষ্টে ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে। হারিয়েছেন একা হাঁটার শক্তিও। তবে সব প্রতিকূলতা এড়িয়ে ১৯৭০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সকল জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৯ সন্তানের এই জননী।