তালতলীতে খুটা জাল দিয়ে মাছ শিকারের দাবিতে জেলেদের মানববন্ধন
বরগুনার তালতলীতে পায়রা নদীতে গত ৫০ বছর যাবত খুটা-জাল দিয়ে মাছ শিকার করে আসছে জেলেরা। তবে কোনোরকম পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই সেই খুটা-জাল উচ্ছেদ করে দেওয়াতে বিপাকে পড়েছে জেলেরা। এই খুটা-জাল দিয়ে মাছ ধরার অনুমতির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জেলেরা।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) বেলা ১১ টার দিকে বগীরহাট বাজারের পায়রা নদীর পাড়ে জেলেরা মাছ ধরার অনুমতির দাবিতে এ মানববন্ধন করেন জেলেরা। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ঐ এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ৫০ বছর যাবত এই পায়রা নদীতে খুটা-জাল দিয়ে মাছ শিকার করে আসছেন জেলেরা। তবে কোনোরকম পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা মৎস্য অফিস পায়রা নদীতে অভিযান চালিয়ে খুটা-জাল উচ্ছেদ করে দেন। এতে কয়েক শত জেলেদের প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তারা।
জেলেরা আরও বলেন, তালতলী উপজেলার সীমানায় এ অভিযান চালানো হলেও বরগুনা সদর উপজেলার সীমানায় খুটা-জাল দিয়ে ওখানকার জেলেরা মাছ শিকার করছেন। একই নদীতে দুই রকম নিয়ম চলতে পারে না। এটা মনগড়া সিদ্ধান্ত, যা সাধারণ জেলেদের পথে বসাবে। তাই মাননীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসকসহ সবার আমাদের দাবি অবিলম্বে খুটা-জাল দিয়ে মাছ শিকারের অনুমতি দিতে হবে।
জেলে বাদল বলেন, নদীতে এমন অভিযানে আমাদের পথে বসিয়ে দিয়েছে। এখন আমাদের পড়নে কাপড় নেই, পেটে ভাত নেই। কিভাবে ছেলেদের লেখাপড়া করাবো সেই চিন্তায় আছি। আমাদের দাবি যাতে পায়রা নদীতে খুটা-জাল দিয়ে মাছ শিকার করতে পারি।
আরেক জেলে চুন্নু সিকদার বলেন, আমরা পড়াশুনা করি নাই, এই নদীতে মাছ শিকার করে আমাদের পরিবার নিয়ে চলতে হয়। আমার তিনটা কিস্তি আছে। কোনো সতর্কতা ছাড়াই নদীতে এমন অভিযানে নির্স্ব হয়ে গেছি। আমি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি কিস্তির জন্য। তিনি আরও বলেন, একই নদীতে দুই নিয়ম কিভাবে হয়। বরগুনা সদরের পাড়ের জেলেরা খুটা-জাল দিয়ে মাছ শিকার করেন আমরা কেন বঞ্চিত হতে যাবো। আমাদের দাবিও মানতে হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বার্তা২৪.কমকে বলেন, খুটা-জাল সম্পূর্ণ অবৈধ। জেলা আইন-শৃঙ্খলা মিটিং এ সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, নদী উন্মুক্ত থাকবে। খুটা-জাল দিয়ে মাছ শিকার করতে পারবে না। এই অবৈধ দাবি মানার কোনো সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, অবৈধ খুটা-জাল উচ্ছেদ অভিযানে কোনো পূর্ব সর্তকতার দরকার নেই।