বঙ্গবন্ধু যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি নমনীয়ও ছিলেন: ড. আতিউর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং রবীন্দ্র ও বঙ্গবন্ধু গবেষক ড. আতিউর রহমান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামী জীবনের অসংখ্য দিক রয়েছে। তাঁর নেতৃত্ব ছিল সুন্দরের আলেখ্য। তিনি যেমন আকর্ষণীয় ছিলেন, তেমনি ছিলেন নমনীয়ও।
বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসে রবিবার সকালে (১৭ মার্চ ২০২৪) রাজধানীর মিরপুর-০১ এ মডেল একাডেমিতে ‘নান্দনিক বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক লোকবক্তৃতানুষ্ঠানে লোকবক্তা এবং প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. আতিউর রহমান।
গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয় এবং বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আতিউর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সব সময় আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। এমনকি একাত্তরের মার্চে যে পাকিস্তানিরা গুলি করে আমাদের মানুষ হত্যা করেছে তাদের সঙ্গেও আলোচনা করতে তিনি পিছপা হননি। কারণ তিনি মনেপ্রাণে ছিলেন একজন গণতান্ত্রিক মানুষ। স্কুল থেকেই তিনি এই মানবিক নেতৃত্বের বিকাশ ঘটিয়েছিলেন।’
প্রান্তজনের ন্যায্য দাবি আদায়ে বঙ্গবন্ধু আশৈশব সোচ্চার ছিলেন উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর বলেন, ‘এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গিয়ে ধান কাটার কাজ করতেন দাওয়ালরা। তাদের পারিশ্রমিক হিসেবে কর্তনকৃত ধানের একটি অংশ তারা নিয়ে যেতেন। কিন্তু এক নিয়ম চালু করে এই ধান নেওয়া নিষিদ্ধ করা হলে শেখ মুজিব প্রায় ৩০০ দাওয়ালদের নিয়ে খুলনায় ডেপুটি কমিশনার হালিম চৌধুরীর বাড়ি ঘেরাও করলেন। কৃষকদের ন্যায্য মজুরি কেন নেয়া যাবে না, তার জবাবদিহি চান তিনি।’
৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বৈচিত্র্যের কথা উল্লেখ করে ড. আতিউর বলেন, ‘সেদিন তিনি বাংলার অজেয় প্রাণশক্তির কথা, অমিত সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। ঐতিহাসিক সেই বক্তৃতায় আমরা এক নান্দনিক বঙ্গবন্ধুকেই খোঁজে পাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক দশক পরের বাংলাদেশ কেমন হবে-তা এখনকার শিক্ষার্থীদের কিভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে। সেজন্য শিক্ষার্থীদের সঠিক ইতিহাসের সঙ্গে পরিচয় করানো খুবই জরুরি। এবং পড়াশোনা কেবল শ্রেণিকক্ষে যা শেখানো হয় তাই নয়, বরং শ্রেণিকক্ষের গণ্ডির বাইরেও শেখার অনেক কিছু আছে। শিক্ষার্থীদের সেক্ষেত্রেও মনোযোগী হতে হবে।’
মডেল একাডেমি ও ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের সহযোগিতায় লোকবক্তৃতানুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গাজী অলিয়ার রহমান। বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মডেল একাডেমির প্রধান শিক্ষক শুভাশীষ কুমার বিশ্বাস। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সুশান্ত রঞ্জন রায়, কারিতাস বাংলাদেশের সহযোগি প্রতিষ্ঠান মিরপুর এগ্রিকালচারাল ওয়ার্কশপ এন্ড ট্রেনিং স্কুলের পরিচালক জেমস্ গোমেজ, মডেল একাডেমি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মাহমুদুল্লাহ কায়সার। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিতি ছিলেন ওয়ালটনের সিনিয়র ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মিল্টন আহমেদ, উন্নয়ন সমন্বয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগি ড. মাহবুব হাসান প্রমূখ।