সিলেটে বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,সিলেট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সিলেটে বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। পবিত্র রমজানের মাসে এই ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরীর বাসিন্দা। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। গত কয়েকদিন ধরে এ সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ যেন আসা-যাওয়ার খেলা। সামান্য বৃষ্টি কিংবা ঝড়ের আভাস পেলেই আসা-যাওয়া করতে থাকে বিদ্যুৎ।

চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম সরবরাহের কারণে এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, সিলেট অঞ্চলে বর্তমানে চাহিদা রয়েছে ১৪০-১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সেখানে ঘাটতি রয়েছে ৪০-৬০ মেগাওয়াট। জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ কম পাওয়ার কারণে এতো বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। এছাড়াও অর্থনৈতিক মন্দভাবের কারণে দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন কম হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহের মধ্যে গত তিনদিনের মধ্যে মঙ্গলবার বিদ্যুতের চাহিদা ছিলো ১৪১ মেগাওয়াট আর সরবরাহ করা হয়েছে ৫৬ মেগাওয়াট। এদিন ৪০ মেগাওয়াট ঘাটতি ছিলো। পরদিন বুধবার চাহিদার পরিমাণ ছিলো ১২০ থেকে ১৩০ মেগাওয়াট। সেখানে পাওয়া যায় মাত্র ৬৬ মেগাওয়াট। ফলে ঘাটতি দেখা যায় ৪৫ মেগাওয়াট।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সিলেটে বিকাল অব্দি বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৩৫ মেগাওয়াট।তার বিপরীতে সরবরাহ ছিলো ৬৯ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিলো ৬৬ মেগাওয়াট।

এদিকে, আর কয়দিন পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরাও নিজদের মার্কেট শপিংমল ও দোকানপাঠে করেছেন আলোকসজ্জা। কিন্তু দিন ও রাতের বেশিরভাগ সময় লোডশেডিংয়ের কবলে থাকায় জেনারেটর দিয়ে চলছে তাদের ব্যবসায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং। এমনকি সেহরি ও ইফতারে করা হচ্ছে লোডশেডিং। মোমবাতি, মোবাইল চার্জার জ্বালিয়ে সিলেটবাসীকে রমজান পালন করতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

গোলাপগঞ্জের মো.জাকির আহমদ বলেন, আমরা সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা সব থেকে বেশি ভুক্তভোগী। সামনে আসছে গরমের দিন লোডশেডিং আরও বেশি বৃদ্ধি পাবে। দেশের অন্যান্য জায়গা থেকে সিলেটে কলকারখানা তুলনামূলক অনেক কম তবুও আমরা বিদ্যুতের ভেলকিবাজি থেকে মুক্তি পাচ্ছি না।

সিলেট নগরীর লালা দিঘীরপাড়ের গৃহবধূ নিপা বেগম জানান, সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগেই বিদ্যুৎ চলে যায়। এরমধ্যে গরমে ভোগান্তি। একয়দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে বাসায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ইফতার ও সেহরির আগে বিদ্যুৎ চলে যায়। এমন সময়ও যে বিদ্যুৎ চলে যাবে তা ভাবতেই অনেক খারাপ লাগে।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি তাহমিন আহমদ গণমাধ্যমকে জানান, ‘ঝড়ের পর সরবরাহে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। সেটি মেনে নেয়া যায়। কিন্তু সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার পর লোডশেডিং মেনে নেয়া যায় না। এক বছর পর ব্যবসায়ীরা একটি ঈদ পান। আর এতে লোডশেডিং হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা দুর্ভোগের পাশাপাশি লোকসানেও পড়ছেন। এই অবস্থায় ক্রেতা ও বিক্রেতারাও স্বস্তিতে নেই বলে জানান তিনি।’

এব্যাপারে সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো.জারজিসুর রহমান রনি জানান, চাহিদার তুলনায় প্রতিদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ কম হচ্ছে। চাইলেও তারা তা দিয়ে ফুসিয়ে উঠতে পারছেন না।তাই বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করতে হয়। বৃহস্পতিবার বিকাল অব্দি আমাদের চাহিদা ছিল ১৩৫ মেগাওয়াট।তার বিপরীতে সরবরাহ ছিলো ৬৯ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিলো ৬৬ মেগাওয়াট। আমরা যতটুকু বিদ্যুৎ পাচ্ছি তা সকল বিতরণ বিভাগকে সমানভাবে ভাগ করে দিচ্ছি। আমাদের লাইন বা অন্য কোন সমস্যা নেই। ডলার, কয়লা সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে।