ফের তীব্র তাপপ্রবাহ চুয়াডাঙ্গায়, তাপমাত্রা ৪১.৭ ডিগ্রি
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম
জাতীয়
চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার (২৫ মে) বেলা তিনটায় এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৪৫ শতাংশ।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য থাকার কারণে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। এদিকে, কড়া রোদ ও ঘাম ঝরানো গরমে বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, পুরো এপ্রিল মাসজুড়ে ছিল গরমের দাপট। ওই সময় টানা ৩৭ দিন তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছিল দক্ষিণ-পশ্চিমের এ জেলা। ৩০ এপ্রিল এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এটিই ছিল চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। পরবর্তীতে ৬ মে বৃষ্টিপাতের পর সহনীয় হয়ে ওঠে এ জেলার তাপমাত্রা।
তবে গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) থেকে আবারও শুরু হয় তাপদাহ। ওই দিন এ জেলার তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন শুক্রবার (২৪ মে) রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। এবং আজ শনিবার (২৫) দুপুর ১২টায় এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেলা তিনটায় তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৪৪ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বার্তা২৪.কমকে জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য রয়েছে, ফলে ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি অনুভূত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামীকাল রোববার (২৬ মে) বিকেল নাগাদ চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টি শুরু হবে। এরপর থেকে তাপমাত্রা ও গরম কমে আসবে।
লালমনিরহাটে যাত্রীবাহী বাস চাপায় নুরজামাল ইসলাম (৬০) নামে এক ইমাম নিহত হয়েছেন।
বুধবার (২৬ জুন) সকালে লালমনিরহাট রংপুর মহাসড়কে সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর মার্কেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ইমাম নুরজামাল ইসলাম সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের ঢাকনাই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় উত্তর চিনিপাড়া বায়তুন নুর জামে মসজিদের খতিব।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের উত্তর চিনিপাড়া বায়তুন নুর জামে মসজিদ সংলগ্ন মকতবে শিক্ষার্থীদের পড়াতে বাড়ি থেকে বাইসাইকেল যোগে যাচ্ছিলেন নুরজামাল ইসলাম। জাহাঙ্গীর মার্কেট এলাকায় পৌঁছালে রংপুরগামী একটি বাস চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ইমাম নুরজামাল ইসলাম। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মেডিকেল শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে আধুনিক যৌন ব্যবসা, আয় শতকোটি টাকা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
চক্রের হোতারা
জাতীয়
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠতি বয়সী তরুণীদের টার্গেট করে আকর্ষণীয় বেতন চাকরি, ট্যালেন্ট হান্টিং ও মডেলিংয়ের নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে ফাঁদে ফেলতো একটি চক্র। এরপর ব্যক্তিগত ছবি হাতিয়ে নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অনলাইনে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হতো। দীর্ঘদিন ধরে অতি কৌশলে শতশত তরুণীদের ফাঁদে ফেলে আধুনিক যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগে চক্রের মূলহোতাসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি ‘র সাইবার পুলিশ সেন্টার)।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- চক্রের মূলহোতা ও মেডিকেল শিক্ষার্থী মো. মেহেদী হাসান (২৫) ও তার প্রধান সহযোগী খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন (২৬), মো. জাহিদ হাসান কাঁকন (২৮), তানভীর আহমেদ ওরফে দীপ্ত (২৬), সৈয়দ হাসিবুর রহমান (২৭), শাদাত আল মুইজ (২৯), সুস্মিতা আক্তার ওরফে পপি (২৭) ও নায়না ইসলাম (২৪)।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) ঢাকা, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর ও যশোরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে পর্নোগ্রাফি তৈরি ও তরুণীদের ব্ল্যাকমেইলে ব্যবহৃত ১২টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিম কার্ড, ১টি ল্যাপটপ এবং আয়ের টাকা লেনদেনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও চেক বই জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহম্মদ আলী মিয়া।
তিনি বলেন, একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া নামে ফেসবুক আইডি ও পেইজ খুলে ফ্রিল্যান্সিং কাজ, লোভনীয় চাকরি, মডেল বানানো, মেধা অন্বেষণের নামে অল্পবয়সী তরুণীদের কাছ থেকে কৌশলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নিয়ে তা দিয়ে ব্ল্যাক মেইলের মাধ্যমে জোরপূর্বক তাদেরকে দেহব্যবসায় নামানোর ভয়ংকর এক চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি। এই চক্রটি মূলত উঠতি বয়সী তরুণীসহ যে সব তরুণীরা পারিবারিক ভাঙনের শিকার ও আর্থিক সমস্যা রয়েছে তাদের টার্গেট করত। চক্রটি কাজের সুযোগ দেওয়ার নামে ইন্টারভিউতে ডাকত। এরপর তাদের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে সুযোগ দেওয়ার কথা বলে আপত্তিকর ছবি নিতো। প্রাথমিকভাবে কাজে আগ্রহী তরুণীদের চাহিদা মতো টাকা ও প্রয়োজন মিটাতো তারা। এরপর ধীরে ধীরে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করত তারা।
সিআইডির সংবাদ সম্মেলন
এই চক্রের মূলহোতা মেহেদী হাসান এবং তার খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন মিলে এই চক্রটি গড়ে তুলেছিল। তারা দুজনেই মেডিকেল শিক্ষার্থী। তারা চিকিৎসা বিদ্যার আড়ালে অল্পবয়সী তরুণীদের ফাঁদে ফেলে যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট তৈরি ও টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং মেসেঞ্জারে নানা অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করত। গত ৭ বছরে তারা প্রায় ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে। এই টাকা দিয়ে তারা যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা এবং ঢাকায় বিপুল পরিমাণ জমি ক্রয় করেছে। নির্মাণ করেছে আলিশান বাড়ি। তাদের আত্মীয়-স্বজনের ব্যাংক একাউন্টেও বিপুল অর্থ জমিয়ে রাখার তথ্য মিলেছে।
যেভাবে কাজ করতো চক্রটি
শুরুতে ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাকরির বিজ্ঞাপন, কখনও মডেল তৈরি, কখনোবা 'ট্যালেন্ট হান্ট' শীর্ষক প্রতিযোগিতার আয়োজন করতো চক্রটি। এতে যারা সাড়া দিত তাদের নিয়ে টেলিগ্রামে গ্রুপ খুলতো। তারপর তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে বিদেশি বায়ারদের কাছে পাঠানোর কথা বলে মেয়েদের আপত্তিকর ছবি হাতিয়ে নিত চক্রটি। হাতিয়ে নেওয়া সেই সব অর্ধনগ্ন ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নগ্ন হয়ে ভিডিও কল বা সরসারি অসামাজিক কাজে বাধ্য করত। চক্রটির টেলিগ্রাম গ্রুপে হাজার হাজার সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। যারা একটি নির্দিষ্ট অর্থ দিয়ে ওই গ্রুপগুলোতে যুক্ত থাকতো। চক্রটি ভিডিও কলের সব কিছু গোপনে ধারণ করে রাখতো। এরপর মেয়েদের বাধ্য করা হতো চক্রটি ভুক্তভোগীদের যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করতো। এভাবেই চক্রটির হাতে আধুনিক যৌন দাসীতে পরিণত হয়েছিল শত শত তরুণী। দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার এই চক্রের মূল হোতা ও তার প্রধান সহযোগীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
সিআইডির প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশ-বিদেশে চক্রটির রয়েছে শক্তিশালী একটি নেটওয়ার্ক। নানা নামে তাদের শতাধিক চ্যানেলে গ্রাহক সংখ্যা কয়েক লাখ। বিভিন্ন বয়সী নারীদের ভিডিওকল ও দেহ ব্যবসায় বাধ্য করে এবং গোপনে ধারণকৃত সেসব ভিডিও বিক্রি করে চক্রটি প্রায় ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে। অর্থ লেনদেনের জন্য তারা ব্যবহার করতো এমএফএস বা মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস। এছাড়া ক্রিপ্টো কারেন্সিতেও তাদের হাজার হাজার ডলার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে নিজেদের আড়াল করার সব কলা-কৌশলও এই চক্রের জানা। ফলে শত শত মোবাইল সিম ব্যবহার করলেও তাদের কোনোটিই প্রকৃত ন্যাশনাল আইডি দিয়ে নিবন্ধন করা নয়। এক্ষেত্রে তারা নিম্ন আয়ের মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিত। সামান্য অর্থ দিয়ে তোলা হতো সিমকার্ড। কন্টেন্ট আদান-প্রদান ও সাবস্ক্রিপশনের জন্য ছিল টেলিগ্রাম প্রিমিয়াম একাউন্ট এবং বিভিন্ন পেইড ক্লাউড সার্ভিস। অল্প বয়সী ভয়ানক চতুর এই দুই মেডিকেল শিক্ষার্থীর জিম্মায় কয়েক হাজার নারী রয়েছে। আছে টিকটক, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম সেলিব্রেটিও। অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপে গোপনে ধারণ করা প্রায় ১০ লাখ ন্যুড ছবি ও ২০ হাজার এডাল্ট ভিডিওর সন্ধান পাওয়া গেছে।
গ্রেফতার হওয়া চক্রের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
ঝুঁকিমুক্ত নিরাপদ পথচারী পারাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ৬১ নং ওয়ার্ডের নয়াপাড়া আবেদীন ভবন সংলগ্ন, জিয়া সরণি মিনি কালভার্ট নির্মাণ করার জন্য একযোগে আহবান জানিয়েছেন প্রধান তিন দলের তরুণ নেতারা।
বুধবার (২৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই আহ্বান জানান।
তারা জানান, গত মে মাস থেকে ‘জিয়া সরণি মিনি কালভার্ট নির্মাণ’ বিষয়ে অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম শুরু করে, যা ৬১ নং ওয়ার্ডবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি। এই কার্যক্রমের আওতায় ফেলোগন পারস্পরিক ও নিজ নিজ দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সহায়তায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নোয়াপাড়া নাগরিকদের সাথে কালভার্ট নির্মাণের বিষয়ে বিভিন্ন স্থানে কথা বলেন এবং সমস্যা সমাধানে স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রায় তিন'শ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেন।
ইউএসএআইডি'র অর্থায়নে আর্ন্তজাতিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল’র ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ" প্রকল্পের আওতায় এই তরুণ নেতারা ইয়ং লিডার ফেলোশিপ (ওয়াইএলএফপি) প্রোগ্রামে ২৪ তম ব্যাচে অংশ নিয়েছেন। এই ফেলোশিপ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্থানীয় সমস্যা সমাধানে ভিন্ন ভিন্ন দলের হলেও তারা একসাথে কাজ করছেন বলেও তারা জানান।
তারা বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ৬১ নং ওয়ার্ডের এই মিনি কালভারটা নির্মাণে খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে। মানুষ এখানে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। এছাড়াও এলাকাবাসীর বিভিন্ন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলাকাবাসীর এই দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য মিনি কালভার্টি খুবই জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রেহেনা আক্তার আশা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সালেহা আক্তার, যুবদলের সাবেক দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান, জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য আফসানা ইয়াসমিন প্রমুখ।