খুলনায় উপজেলা নির্বাচন: প্রচারণায় ব্যস্ত সম্ভাব্য প্রার্থীরা



মানজারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, খুলনা, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

একাদশ সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই খুলনার ৯টি উপজেলায় শুরু হয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। প্রকৃতিতে বইছে শীতের হাওয়া। তবে শীত-কুয়াশা কাটিয়ে খুলনায় শুরু হয়েছে নির্বাচনী হাওয়া। উপজেলা নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। অপরদিকে বিরোধী শিবির বিএনপি নির্বাচনী মাঠেই নেই। এদিকে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বলেই ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিভাগ ভিত্তিক ৫ ধাপে এবারের পঞ্চম উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি ।

এছাড়া নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, আগামী ১৮ মার্চ দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য খুলনা জেলার ৯টি উপজেলা- দিঘলিয়া, কয়রা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, রূপসা, তেরখাদা, ফুলতলা, বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২য় ধাপে একই সাথে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলা- কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা, কুমারখালী, মিরপুর, খোকসা ও দৌলতপুর। ঝিনাইদহ জেলার সদর, শৈলকুপা, হরিণাকুন্ডু ও কালীগঞ্জ। যশোর জেলার শার্শা, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, সদর, বাঘারপাড়া, অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর। মেহেরপুর জেলার সদর, মুজিবনগর ও গাংনীসহ মোট ১২৫টি উপজেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এবারই প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় প্রতীকে হবে উপজেলা নির্বাচন। যে কারণে উপজেলা নির্বাচনের ভোট নিয়ে বাড়তি আগ্রহ ক্ষমতাসীন দলে। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা ও স্থানীয় নব-নির্বাচিত এমপিদের কাছাকাছি ভিড়তে শুরু করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিতরা চাচ্ছেন উপজেলায় প্রার্থী হতে। মনোনয়নের দৌড়ে থাকা নেতারা এরই মধ্যে এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে সবার কাছে দোয়া চাইছেন। পুরানো প্রার্থীদের সঙ্গে এবার চারদিকে নতুন মুখের ছড়াছড়ি। প্রতিটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের ৪-৬ জন করে সম্ভাব্য প্রার্থী সরব রয়েছেন।

অপরদিকে জাতীয় নির্বাচনে হেরে যাওয়া বিএনপি এই সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচনে যাবে না বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছে।। প্রথমবারের মতো দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন হলেও বিএনপি এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না। এজন্য বিএনপির কোন প্রার্থী মাঠে নেই।

এছাড়া সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবার ঘোষণা দিলেও খুলনার উপজেলার নির্বাচনী মাঠে তাদের কোনো কার্যক্রম নেই। সদ্য শেষ হওয়া একাদশ সংসদ নির্বাচনেও খুলনার ৩টি আসনে দলটির প্রার্থী থাকলেও প্রচার প্রচারণা ও ভোটযুদ্ধে মাঠে দেখা যায়নি তাদের।

খুলনার ৯টি উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এ তিন পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই গণসংযোগ শুরু করছেন।

এরমধ্যে রূপসা উপজেলায় আ’লীগের ১০জন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এড. সুজিৎ অধিকারী, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশা, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ, বেলফুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ অলিউর রহমান, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি ও আইচগাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান বাবুল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আলী আকবার, মালিক সরোয়ার উদ্দিন, নৈহাটি ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মিনা, প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য সরদার আবুল কাসেম ডাবলু ও সরদার ফেরদৌস আহমেদ।

দিঘলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদে জাতীয় পার্টির ডা. সৈয়দ আবুল কাশেমের নাম শোনা যাচ্ছে। তিনি জেলা জাতীয় যুব সংহতির জেলা সভাপতি ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ উপজেলায় ক্ষমতাসীন দলের একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। এভাবে অন্যান্য উপজেলায়ও ক্ষমতাসীন দলের একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।

বটিয়াঘাটায় ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম খান, এড. নিতাই চন্দ্র রায়, নব কুমার চক্রবর্তী, মনোরঞ্জন মণ্ডল, মোশারেফ হোসেন মুসা, শেখ হাদিউজ্জামান, মানস পাল, প্রফুল্ল কুমার রায় ও শ্রীমন্ত অধিকারী রাহুল এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রার্থী সমিরণ গোলদার। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. ইকরাম শেখ এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই গাইনের নাম শোনা যাচ্ছে।

দাকোপে ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ আবুল হোসেনসহ বেশ কয়েক জনের নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও প্রার্থী হতে পারেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির এড এম এম রুহুল আমিন।

কয়রায় বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল খায়ের মো. তমিজ উদ্দিন, ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত মো. মহসিন রেজা, কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস এম মো. শফিকুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের নাম শোনা যাচ্ছে।

ডুমুরিয়ায় ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত গুটুদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা সারোয়ার, কাজী আলমগীর, সুরঞ্জন বৈদ্য, হুমায়ুন কবির বুলু, মোস্তফা কামাল খোকন, সেলিম আক্তার স্বপন, ও শাহনেওয়াজ জোয়ার্দ্দার। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সিরাজুল ইসলাম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিরিনা দৌলতের নাম শোনা যাচ্ছে।

পাইকগাছায় বর্তমান চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এড. বাবর আলী ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির এড. প্রশান্ত মণ্ডল ও গুলজার রহমানের নাম শোনা যাচ্ছে।

ফুলতলায় ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আকরাম হোসেনসহ একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।

সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে অনেকেই সব সময় এলাকায় যাতায়াত করেন, সাধারণ ভোটারদের খোঁজ খবর নেন। আবার অনেকের নামই শোনেনি এমন প্রার্থীও আছে। এছাড়াও কয়েকজন প্রার্থী জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বে থাকলেও ৫বছরে তাদের একবার এলাকায় দেখা যায়নি। এবারের নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীরা অংশ নেবে বলে আশা করছেন তারা।

উল্লেখ্য, খুলনা জেলায় ১৮লাখ ৯৮৯জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৯লাখ ২হাজার ৯৫০জন ও নারী রয়েছেন ৮লাখ ৯৮হাজার ৩৯জন। ভোট কেন্দ্র ৭৮৬টি ও কক্ষ (বুথ) ৩হাজার ৮৫৭টি।

   

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি নারী এমপিদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ বিনির্মাণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনীর দ্রুত পাসের দাবি জানিয়েছেন তামাক বিরোধী সংসদীয় নারী ফোরামের সদস্যরা।

বুধবার (২৬ জুন) নারী মৈত্রী আয়োজিত রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে “তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে করনীয়” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় ফোরামভুক্ত নারী সংসদ সদস্যরা এ দাবি জানান।

তামাক বিরোধী সংসদীয় নারী ফোরামের আহ্বায়ক ও সংসদ সদস্য শবনম জাহান শিলা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মাহফুজা সুলতানা (নারী আসন-৬), জারা জাবিন মাহবুব (নারী আসন-৭), মাসুদা সিদ্দিক রোজী (নারী আসন-৩৪), নাজমা আকতার (নারী আসন-৩৭), অনিমা মুক্তি গোমেজ (নারী আসন ২৯), শেখ আনার কলি পুতুল (নারী আসন-৩০), মাহফুজা সুলতানা (নারী আসন-৬), আশরাফুন্নেছা (নারী আসন-৪৪), কানন আরা বেগম (নারী আসন-৪১), লাইলা পারভীন (নারী আসন-১৩), সানজিদা খানম (নারী আসন-৩২), সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়ছমীন (নারী আসন-৩৫) এবং হাসিনা বারি চৌধুরী (নারী আসন-৩১)।

তামাক বিরোধী সংসদীয় নারী ফোরামের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন ফোরামের আহ্বায়ক শবনম জাহান শিলা।

তিনি বলেন, তামাকের কারণে প্রতিবছর এক লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। এই মৃত্যুর হার হ্রাস করার লক্ষ্যে তামাক বিরোধী সংসদীয় নারী ফোরাম এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা আইন সংশোধনী পাশের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী বরাবর স্বাক্ষরকৃত চিঠি প্রেরণ করেছি। এছাড়াও আমরা পার্লামেন্টে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাশের দাবি জানিয়েছি। পাশাপাশি অধিকতর জনমত সৃষ্টির জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গনমাধ্যমে তামাক বিরোধী বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা অব্যাহত রেখেছি।

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাসের দাবি জানান ফোরামের অন্যান্য সদস্যরাও। তারা বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরই। তরুনদের ধূমপানের অভ্যাস দেশের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের বিষয়। তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা তামাকবিরোধী আন্দোলনে অনেকাংশে সহায়ক হতে পারে। তামাকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার ও কথা ব্যক্ত করেন তারা।

এছাড়াও ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের প্রতিনিধি মিসেস অ্যাড্রিয়েন পিজাটেলা, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস এর দক্ষিণ এশীয় কর্মসূচির পরিচালক ড. মাহিন মালিক এবং নারী মৈত্রীর সভাপতি মাসুমা আলম সভায় উপস্থিত ছিলেন। তারা নারী সংসদ সদস্যদের উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী প্রস্তাব সমর্থন করার জন্য ফোরাম সদস্যদের অনুরোধ জানান।

;

ত্রিধাবিভক্ত বরিশাল আওয়ামী লীগ, কমিটি বিলুপ্তিতে নেতৃত্বশূন্য বিএনপি



এস এল টি তুহিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

হতাশা, বঞ্চনা ও ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়নের ফলে তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে বরিশালের আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে ফলপ্রসূ আন্দোলনের ব্যর্থতা এবং পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় হঠাৎ বিলুপ্ত হওয়া কমিটি নিয়ে নেতৃত্বশূন্য এখন বরিশাল বিএনপি। দল দুটোর মধ্যে ক্ষমতার প্রদর্শনী থাকলেও কেউই বরিশাল তথা দল ও দেশপ্রেমিক নেতা ছিলো না বলে অভিযোগ বরিশালের সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যদিও এসব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন দুটি রাজনৈতিক দলের জেলা ও মহানগর নেতারা।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের খুব একটা প্রভাব মহানগরে না থাকলেও জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের মধ্যে বিগত জাতীয় নির্বাচন থেকেই বিভক্তি চোখে পড়ে। তবে তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে গত ষষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনকে ঘিরে। প্রথমদিকে আনারস প্রতীকের পক্ষে বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এবং সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতকে দেখা গেলেও পরবর্তীতে জাহিদ ফারুকের সমর্থন চলে যায় মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে। তার সামনেই মোটরসাইকেল ও আনারস প্রতীকের প্রার্থীরা অসৌজন্যমূলক আচরণ করলেও তিনি নীরব থাকেন। এ নিয়ে কানাঘুষা সৃষ্টি হলে প্রতিমন্ত্রী ও মেয়র দ্রুত একসাথে সভা করে বুঝিয়ে দেন তাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই।

এরআগে সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাথে মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত এবং সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের মধ্যে দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়। বিশেষ করে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ পক্ষের লোকেরা প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এ সময় স্লোগান ওঠে জাহিদ-খোকন দুই ভাই, বরিশালে আর সমস্যা নাই। এর অল্পদিন পরেই উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনকে ঘিরে মেয়র-প্রতিমন্ত্রী দূরত্ব তৈরি হয়। যা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয় সুশীল সমাজেও।

উপজেলা চেয়ারম্যানকে ঘিরে মেয়র ও প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে দাবি করছেন বরিশালের একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেন, আনারস প্রতীকের প্রার্থী মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন ছিলেন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের একান্ত ঘনিষ্ঠ লোক। হঠাৎ করে মাহমুদুল হক খান মামুনকে আর প্রতিমন্ত্রীর পাশে দেখা যায় না, বরং সেখানে এখন স্থান পেয়েছে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী এসএম জাকির। আর এলাকার সবাই জানেন এসএম জাকির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। যে কারণে মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত তাকে অপছন্দ করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। হয়তো আরও কিছু জটিলতাও আছে, যা আমরা সাধারণ চোখে বুঝতে পারছি না। যা নিয়ে মেয়র ও প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান তারা। বিশেষ করে ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন সময়ে মহানগর সহসভাপতি আইনজীবী আফজালুল করিমের বক্তব্যে তা আরও স্পষ্ট হয়েছে বলে দাবি সুশীল সমাজের।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নগর চিন্তাবিদদের একজন কাজী মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, আমি যেটা বুঝি, এই ৬৬ বছরের জীবনে আমি বরিশালে প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরণ ছাড়া এমন একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পেলাম না, যার পিছনে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন রয়েছে। এখানে এখন যা দেখি তা টাকা আর ক্ষমতার প্রদর্শনী শুধু। বরিশালের জন্য বা দল ও দেশের জন্য ভালোবাসা আছে, এমন নেতার খুবই অভাব বরিশালে।

এদিকে নগর চিন্তাবিদদের একজন বরিশাল সাহিত্য সংসদ এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কেএসএ মহিউদ্দিন মানিক বীরপ্রতীক বলেন, আওয়ামী লীগের প্লাটিনাম জয়ন্তী বা ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করতে প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে লস্কর নুরুল হক, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আইনজীবী আফজালুল করিমসহ কয়েকজনকে দেখা গেছে পৃথক অবস্থানে। মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের পাশে এসময় মাহমুদুল হক খান মামুনসহ কয়েকজন ছিলেন। ২৩ জুন মেয়রের উদ্যোগে প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন র‍্যালি বা সমাবেশে প্রতিমন্ত্রী কিংবা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ কাউকে দেখা যায়নি। আবার মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তার লোকজন নিয়ে পৃথকভাবে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও সমাবেশ র‍্যালি করেছেন। চাচা-ভাতিজার লোক সমাগমের একটা প্রতিযোগিতা দেখা গেছে এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে। যেখানে প্রতিমন্ত্রী পক্ষের কাউকে দেখা যায়নি বলে জানান তিনি।


বরিশালে বিএনপির বর্তমান অবস্থা

গত ১৩ জুন বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হঠাৎ করে মহানগর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলা ও মহানগর বিএনপিতে চলছে চরম অস্বস্তি। নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার সম্ভাবনায় জোর লবিং ও তদবিরে ব্যস্ত নেতাদের অনেকে। তালিকায় আছেন সাবেক ও বর্তমান নেতাদের অনেকেই। তবে আলোচনায় এবায়দুল হক চান, মনিরুজ্জামান ফারুক ও জিয়াউদ্দীন সিকদারের নাম প্রথম সারিতে। কেউ কেউ আবার বলছেন, এবার চমক দেখাবেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার।

গত প্রায় আড়াই বছর ধরেই বরিশাল মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক কমিটি নির্ভর। পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বারবার পিছিয়ে যাওয়ার কারণে বরিশালে দলটির নেতৃত্বশূন্যতা তৈরি হচ্ছে বলে জানালেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত হোসেন চৌধুরী। তিনি বরিশালে বিএনপির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।

২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি গঠিত মহানগর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব ও বিতর্কের মধ্যেই একই সালের ১১ মার্চ সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। ৩০টি কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা সবাই সাবেক এমপি ও মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ারের অনুসারী ছিলেন। ফলে মহানগরের রাজনীতিতে মজিবর রহমান সরোয়ার ও তার অনুসারী নেতা-কর্মীরা একেবারে কোণঠাসা হয়ে পড়েন। এ নিয়ে বিভিন্ন সমাবেশে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতও দেখা গেছে। এমন অবস্থার মধ্যেই গত ১৩ জুন গভীর রাতে বরিশাল মহানগর কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। ১৪ জুন শুক্রবার সকালে কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়।

গুঞ্জন ওঠে, তাহলে কি বরিশাল মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে আবারও মজিবর রহমান সরোয়ারের প্রভাব পুনঃপ্রতিষ্ঠা হচ্ছে? কেউ কেউ আবার বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমানকে ও এজন্য দায়ী করেন এ জন্য। তবে এখানে তাদের কোনো হাত নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন বিএনপির এই দুই নেতা। বিলুপ্ত হওয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, কমিটি বিলুপ্ত করা হবে, তা আগে থেকে কোনো নেতাই জানতেন না।

বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সদস্য ও দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জাহিদুর রহমান বলেন, ‘হঠাৎ কাউকে কিছু না জানিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। কবে নাগাদ পুনরায় কমিটি করা হবে, সে ব্যাপারেও আমরা সবাই অন্ধকারে আছি।’

কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পরদিন থেকেই অনেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে জানা গেছে। তবে তারাও নতুন কমিটি নিয়ে কোনো তথ্য পাচ্ছেন না। এ নিয়ে বিলুপ্ত কমিটির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘কমিটি বিলুপ্ত করার বিষয়টি আমরা আগে থেকে জানতাম না। তবে তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটি আড়াই বছরের বেশি সময় পার করেছে। তাই বিলুপ্ত করা হয়েছে। এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলেই মনে হচ্ছে।’

অন্যদিকে বিলুপ্ত হওয়া কমিটির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, হঠাৎ করে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এটা আরও আগেই হওয়া উচিত ছিলো। একটানা আড়াই বছর আহ্বায়ক কমিটি চলেছে। এখন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত যা হবে আমরা তা-ই মেনে নেব। আশাকরি শীঘ্রই পূর্ণাঙ্গ কমিটি পাবে বরিশাল বিএনপি। একই কথা বলেছেন বিএনপির সাবেক জেলা সভাপতি এবায়দুল হক চান ও একই কথা বলেন সাবেক কাউন্সিলর ও বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার। তিনি বলেন, দলকে ভালোবাসি দলের একজন কর্মী হিসাবে আমরণ থাকতে চাই। তবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত যা-ই হোক সেটাই মেনে নিতে প্রস্তুত আছি বলে জানান তিনি।

;

সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩.১৭ শতাংশ প্রাণহানি বেড়েছে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
যাত্রী কল্যাণ সমিতির সংবাদ সম্মেলন

যাত্রী কল্যাণ সমিতির সংবাদ সম্মেলন

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদুল আজহায় ৩০৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৫৮ জন নিহত এবং ১৮৪০ জন আহত হয়েছেন। এসময়ে রেলপথে ২২টি দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত, ৪ জন আহত, নৌপথে ৬টি দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত, ৬ জন আহত এবং ৬ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে দাবি করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

বুধবার (২৬ জুন) রাজধানীর বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এমন দাবি করেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়, বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল আজহায় ২৭৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯৯ জন নিহত ও ৫৪৪ জন আহত হয়েছিল। তার সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ১১.৫৫ শতাংশ, প্রাণহানি ৫৩.১৭ শতাংশ, আহত ২৩৮.২৩ শতাংশ বেড়েছে।

তিনি বলেন, সড়ক, রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে ৩৩৭টি দুর্ঘটনায় ৪৮৮ জন নিহত ও ১৮৫০ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর ঈদ কেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানির বিষয়টি দীর্ঘ এক দশক ধরে পর্যবেক্ষণ করে আসছে।

মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও পরিবহন ভাড়া অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ মানুষের কম যাতায়াত হয়েছে। বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় অনেক ভাল ছিল। ঈদের আগে ৩ দিন সরকারি ছুটি থাকায় যাত্রী চাপ কিছুটা ভাগ হয়েছে। দেশে ঈদযাত্রায় মোট যাতায়াতের প্রায় ৭ থেকে ৯ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার তৎপরতা ছিল লক্ষ্যণীয়।

তবুও ছোট ছোট যানবাহন বিশেষ করে ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ব্যাপকহারে বাড়ার কারণে কোন কোন সড়কে এসব যানবাহন হঠাৎ করে জাতীয় মহাসড়কে উঠে আসার কারণে, কোন কোন জাতীয় মহাসড়কে এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি, এছাড়াও সড়কে চাঁদাবাজি, ফিটনেস বিহীন যানবাহন চলাচল, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহনসহ নানা কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেড়েছে। একই সাথে সড়কে ভাড়া নৈরাজ্যের কারণে নিম্ন আয়ের লোকজন ফিটনেস বিহীন যানবাহন ও খোলা ট্রাকে যাতায়াতে বাধ্য হয়েছে।

ঈদযাত্রা শুরুর দিন ১০ জুন থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ২৪ জুন পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যমতে ৩০৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৬ জন নিহত, ৭৬২ জন আহত হয়েছে। অপর দিকে, ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী ঈদের আগে পরে ১৪ দিনে ১০৭৮ জন সড়ক দুর্ঘটনায় রোগী ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাত বা পা ভেঙে ভর্তি রোগী ৪৭৮ জন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ১৩২টি মোটরসাইকেল দুঘটনায় ১৩০ জন নিহত, আহত হয়েছে ৫৯৯ জন। যা মোট দুর্ঘটনার ৪২.৭১ শতাংশ, মোট নিহতের ২৮.৩৮ শতাংশ, মোট আহতের ৩২.৫৫ শতাংশ। এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১ জন চালক, ১১ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪৮ জন পথচারী, ৬১ জন নারী, ২৪ জন শিশু, ১৪ জন শিক্ষার্থী, ১ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য (১ সেনাবাহিনী), ৩ জন শিক্ষক, ২ জন মুক্তিযোদ্ধা, ৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী নিহত হয়েছে।

সংগঠিত দুর্ঘটনার ২৫.২৪ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৫১.১৩ শতাংশ গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা, ২১.০৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায়, দশমিক ৩২ শতাংশ ট্রেনের সাথে যানবাহনের সংঘর্ষের ঘটনা, চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং ১.৬১ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। দুর্ঘটনার ধরন মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৪০.১২ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২২.৯৭ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩১.৩৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। ০.৩২ শতাংশ রেলক্রসিং, এছাড়াও সারাদেশে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪.৮৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে ও দশমিক ৩২ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে সংগঠিত হয়েছে বলে দাবি করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, সরকার কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদাসীন, তাই ছোট যানবাহন বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনা। গনমাধ্যমে এখন সংঘটিত দুর্ঘটনার সঠিক চিত্র আসে না। এবারের ঈদে আমরা গণমাধ্যমে প্রকাশিত রির্পোট থেকে সারাদেশের হতাহতের সংখ্যা পেয়েছি মাত্র ১০৯৮ জন। অথচ ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ১৪ দিনে ভর্তি হয়েছে ১০৭৮ জন। সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি ৯ হাজার হাসপাতালে চিত্র অনেক ভয়াবহ। নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর হলেও কেন সড়ক দুর্ঘটনা কমছে না। সরকারিভাবে তার অডিট হওয়া দরকার।

;

আলু, পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক আছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু/ছবি: সংগৃহীত

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আলু, পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক আছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত বিএসআরএফ সংলাপে তিনি এ মতামত জানান।

দেশে উৎপাদিত আলু বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এটাকে স্বাভাবিক মনে করেন কি না? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাজারে আলু-পেঁয়াজ পর্যাপ্ত আছে। এটাকে স্বাভাবিক বলে মনে করি। দামের যৌক্তিকতার বিষয়টি আমার ইয়ে না। আমি দেখব, সেটি বার বার বলার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, যেকোনও প্রাইস নির্ভর করে বাজারের চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। আমরা যদি সরবরাহ করতে পারি, তাহলে দাম কমে যাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত বাজারে আলু ও পেঁয়াজ কম দামে সরবরাহ না থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বাজারে যে মূল্য আছে, সে মূল্যটাকে আমাকে মূল্য হিসেবে দেখতে হবে। আমি চাইলেই কাউকে এমন কোনো আইন করে বলতে পারব না যে, পেঁয়াজের দাম এতো। অন্তত আমি পারব না। সেটি কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বলতে পারবে।
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, আমার কাছে কৃষি উৎপাদিত পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার মেকানিজম জানা নেই। আমার জানা আছে যদি দাম বেড়ে যায়... তাহলে আমদানি করে কম দামে বাজারে সরবরাহ করলে দাম কমে যাবে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ফসিহ উদ্দিন মাহতাব।

;