কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে অভিযান, ৮০ রোহিঙ্গা আটক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে অভিযান পরিচালনা করে ৮০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। এ সময় ৪টি বাসের ৭ জন চালক ও সহকারীকেও আটক করা হয়।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) বিকেলে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান পরিচালনা করে এসব রোহিঙ্গাকে আটক করে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় ৪টি বাস জব্দ করা হয়।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা জানিয়েছেন, ৪টি বাসযুগে ৮০ জন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে কক্সবাজারে ঘুরতে আসছে এমন খবর পেয়ে অভিযান পরিচালনা করে ৮০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। এছাড়া বাস চালক এবং হেলপারসহ জব্দ করা হয়।

তিনি জানান, রোহিঙ্গারা যাতে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে সমুদ্র সৈকতে আসতে না পারে এজন্য জেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক তদারকিতে রয়েছে। যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদেরকে ক্যাম্প ইনচার্জের সাথে কথা বলে কুতুপালং ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

এছাড়াও তিনি জানান, ৪টি বাসের মালিককে ডেকে ১৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। মুচলেকায় আবারো যদি রোহিঙ্গাদের অবৈধ উপায়ে পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হয় তাহলে রোড পার্মিট এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে রোহিঙ্গারা উখিয়ার ১৫, ১, ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কক্সবাজার শহরে অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা।

শেকৃবি শিক্ষকদের এক প্রতিবাদলিপিতে আটের অধিক বানান ভুল



শেকৃবি প্রতিনিধি বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৭০ জনের অধিক শিক্ষকের স্বাক্ষর সম্বলিত শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষকগণ কর্তৃক পেনশন সংক্রান্ত অর্থমন্ত্রনালয়ের জারীকৃত প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে সোমবার (১লা জুলাই) প্রকাশিত প্রতিবাদলিপিতে আটটির অধিক বানান ভুল ও অসঙ্গতি দেখা গেছে।

মূলত অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে দেশের অন্যন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একযোগে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে শেকৃবির ক্লাস, পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করে।

প্রতিবাদ ও কার্যক্রম বন্ধ সংক্রান্ত প্রতিবাদলিপিতে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ কর্তৃক স্বাক্ষরকৃত প্রতিবাদলিপিতে অসংখ্য বানান ভুল দেখা যায়।

বাংলা একাডেমির আধুনিক বাংলা অভিধান অনুযায়ী, ওই নোটিশের ভুলগুলো হলো, ‘১ জুলাই, স্কীম, দাবীতে, সর্বাত্নক, অন্তর্ভূক্তির, ক্লাশ, ঘোষনা, সকল সাধারন শিক্ষকবৃন্দ।’

উপর্যুক্ত অসংগতি ও ভুল বানানগুলোর প্রমিতরূপ হলো, ‘১লা জুলাই, স্কিমসংক্রান্ত, দাবিতে, ক্লাস, ঘোষণা, কোনো, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বা বিশ্ববিদ্যালয়-শিক্ষকদের, অন্তর্ভুক্তি।’

নোটিশে যে ভুলগুলো হয়েছে, তার মধ্যে কিছু ভুলের ব্যাখ্যা নিম্নে দেওয়া হলো :

বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানের পরিশিষ্ট ‘গ’-এ বাংলা তারিখ ও সময় লেখার নিয়ম বিধৃত হয়েছে। বিশেষ দ্রষ্টব্যে বলা হয়েছে: এ্যাক জুলাই, শোলো ডিসেম্বর, পোঁচিশ বৈশাখ প্রভৃতি উচ্চারণ অশুদ্ধ। শুদ্ধ ও মান্য রীতি: পয়লা বৈশাখ, অ্যাগারোই জ্যৈষ্ঠ, পহেলা জুলাই, পোঁচিশে বৈশাখ প্রভৃতি। উপর্যুক্ত নোটিশে সব তারিখের ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে।

‘কোন’ শব্দটি যখন সর্বনাম হিসেবে ব্যবহৃত হয় তখন এর অর্থ: কী, কে, কোনটি (কোন দিন, কোনটি চাই, কোন জন)। এটি কোনও বা কোনো শব্দের সমার্থক নয়। যেমন: ‘আপনি কোন দেশে থাকেন’ বাক্যে একই অর্থ: প্রকাশের জন্য ‘কোনও’ বা ‘কোনো’ পদ ব্যবহার করা যাবে না। বাক্যে সর্বনাম ও বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত বাংলা ‘কোনো’ শব্দের অর্থ: অনির্দিষ্ট বা অনির্ধারিত একজন লোক বিষয় বা বস্তু, কে বা কী (কোনো বিষয়), বহুর মধ্যে একটি বা একজন বাএআবাঅ, পৃষ্ঠা: ৩৩৭, ৩৩৮। নোটিশে ‘কোনো’-এর পরিবর্তে ‘কোন’ লেখা হয়েছে।

২০১২ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত ‘বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম’ পুস্তিকার ২.২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলায় এ বর্ণ বা -েকার দিয়ে এ এবং অ্যা এই উভয় ধ্বনি নির্দেশিত হয়। যেমন: কেন, কেনো (ক্রয় করো); খেলা, খেলি; গেল, গেলে, গেছে; দেখা, দেখি; জেনো, যেন; ব্যাঙ, ল্যাঠা। তবে, বিদেশি শব্দে ক্ষেত্র অনুযায়ী অ্যা বা ্যা-কার ব্যবহৃত হবে। সেক্ষেত্রে ‘একাডেমি’ না হয়ে ‘অ্যাকাডেমি’ হবে।

বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম পুস্তিকার ২.১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সব অতৎসম অর্থাৎ তদ্ভব, দেশি, বিদেশি ও মিশ্র শব্দে কেবল ই এবং উ এবং এদের কারচিহ্ন ব্যবহৃত হবে। কারণ বাংলায় উচ্চারণগত দীর্ঘস্বর নেই। ই ঈ এবং উ ঊ প্রভৃতির উচ্চারণ অভিন্ন। তাই অতৎসম (দেশি, বিদেশি) শব্দে ঈ-কার নিষ্প্রয়োজন। তবে, ‘লাইব্রেরী’ ও ‘দাবি’ শব্দের মতো বিদেশি বানানে ঈ-কার দিয়ে লেখা হয়েছে।

এছাড়া সর্বাত্বক হবে যেখানে প্রতিবাদ লিপির দুই জায়গায় সর্বাত্নক লিখা হয়েছে।ঘোষণা শব্দে 'ণ' বসলেও 'ন' দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া সকল আবার শিক্ষক বৃন্দ লিখা হয়েছে।

এছাড়াও বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানের ৫৫ নম্বর পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে ‘ভুক্ত’ বানানে ঊ-কার পরিহার্য। তবে, নোটিশে ‘অন্তর্ভূক্তি’ লেখা হয়েছে, যা ভুল।

;

বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মুহুরী নদীর পানি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ফেনী
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে ফেনীর মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পানি প্রবেশ করে ফুলগাজী বাজার ও ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক প্লাবিত হয়েছে।

পানি বাড়তে থাকলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সোমবার (১ জুলাই) রাত ৮টার দিকে ফুলগাজী কাঁচাবাজার সংলগ্ন এলাকা দিয়ে পানি প্রবেশ করে। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী, কুহুয়া এবং সিলোনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজী-পরশুরামের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়। এবারও পানি বাড়ায় বাঁধ ভাঙার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর, বরইয়া, ঘনিয়ামোড়া এলাকায় ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে। নদীর পানি এখনো বাড়ছে।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ফুলগাজী বাজারের ১৫-২০ টি দোকান ইতিমধ্যে পানিতে তলিয়েছে। পাশাপাশি সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম জানান, ভারতের উজানের পানির কারণে মুহুরী নদীর পানি বেড়ে ফুলগাজী বাজারে প্রবেশ করেছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এখনো নদীর পানি বাড়ছে।

এ ব্যাপারে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া বলেন, নদীর পানি বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিতে ইতোমধ্যে ফুলগাজী বাজার প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের গইয়াছড়া এলাকায় কহুয়া নদীর পানি প্রবেশ করছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় শুকনো খাবারসহ অন্যান্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান তিনি।

;

‘চট্টলা চাকা’ পরিবহন সেক্টরে সাহসী পদক্ষেপ : চসিক মেয়র



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম চট্টগ্রাম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ‘চট্টলা চাকা’ এসি বাস সার্ভিস পরিবহন সেক্টরে নতুন সংযোজন এবং সাহসী পদক্ষেপ। যে দেশের কমিউনিকেশন যত উন্নত সে দেশের অর্থনীতি তত সমৃদ্ধ। আজকে চট্টগ্রাম পরিবরহন জগৎ আরও এগিয়ে গেল।

সোমবার (১ জুলাই) বিকেলে চারটার দিকে নগরীর হোটেল আগ্রাবাদের ইছামতি হলে এসি (শীততাম নিয়ন্ত্রিত) বাস সার্ভিসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব ও শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়।

প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে মেয়র 'চট্টলা চাকা' সার্ভিসের ভাড়ার প্রশংসা করে তিনি বলেন, এসি বাসে শহরে ২০ টাকা, ৫০ টাকা, সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ভাড়া করা হয়েছে। কাপ্তাই রুট থেকে আগ্রাবাদ পর্যন্ত মাত্র ৫০ টাকা। বর্তমানে এটি খুব বেশি নয়। যারা এসি বাস চড়বেন তারা ৫০ টাকা দিতে কিন্তু রাজি। কিন্তু বাসের পরিবেশ সেরকম হতে হবে। এখন যাত্রী পরিবহনের জন্য ১১টি বাস দিয়ে তারা শুরু করেছে। একবছরের মধ্যে সেটা ৩০টিতে রুপ নেবে। শুধু আচার-ব্যবহার সমৃদ্ধ করতে হবে। তাহলে মানুষ নিজে থেকেই উঠবে।

পরিবহন ব্যবস্থার নাজুক অবস্থার চিত্র তুলে ধরে পরিবহন মালিকদের উদ্দেশ্য করে মেয়র বলেন, ‘অনেককে আক্ষেপ করে বলতে শুনি, শহরে এখনো লক্কর-ঝক্কর গাড়ি চলে। এমনো আছে বাসের বডি ভেঙ্গে রাস্তার সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। সেই গাড়িও চলে। কেন সেই গাড়ি চলে? একটা সুন্দর পরিনহন যদি একই ভাড়া দিয়ে রোডে চালাতে পারে তাহলে ওই মালিক কেন ওই পরিবহন লক্করজ-ঝক্কর বাস চালাবে। যাত্রীদের সেবা দূর, এমন হলে তা বোধহয় বিরক্তিতে রুপ নেবে। আমি আহ্বান জানাবো আমাদের গণপরিহন আমরা সুন্দর কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে পারলে গণপরিবহন আরো সমৃদ্ধ হবে।’

এ সময় মেয়র গণপরিবহনের চালক-হেলপারদের ব্যবহার সুন্দর করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যাত্রীদের বলতে শোনা যায়, এসির বাতাস খেলে মানুষ সুমিষ্ট হয়ে যায়। এটা আসলে ঠিক নয়। যারা বাস চালক-সুপারভাইজার আছেন তারা যাত্রীর সঙ্গে এমন আচরণ করেন যেন যাত্রী সেই আপনার পরিবহনে উঠতে আগ্রহ প্রকাশ করে। বিদেশে যারা চালক সুপারভাইজার এদের ব্যবহার দেখে মুগ্ধ হতে হয়। ইচ্ছে করে তাদেরকে সালাম করতে। কারণ এত সুন্দর তাদের ব্যবহার। এটিই তাদের বিদেশের গণপরিবহনকে সমৃদ্ধ করেছে।’

সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, ‘আজকে যারা আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন এই বাস সার্ভিস নিয়ে এসেছেন তাদেকে অভিনন্দন জানাই। মানুষের চাহিদা এবং সামর্থ্য আছে, কিন্তু নগরীতে সেরকম যান না থাকার কারণে তাদের মধ্যে একটা হতাশা তৈরি হয়েছে। আমি আশা করছি এই বাস সার্ভিসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরের নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটবে। আর যারা সামর্থ্যবান আছেন তারা এই ব্যবসায় নেমে আসবেন। আধুনিক বাস আসলে লক্কর-ঝক্কর বাস এমনিতেই বাদ পরে যাবে। পুলিশের সাথে পরিবহন সেক্টরের একটি মিল রয়েছে। পুলিশ যেমন ত্যাগ ও সেবা দিলেও অনেকে শুধু নিন্দাই করে তেমনি পরিবহনে ভালোবাসে এরকম লোক কিন্তু কমই বলা চলে। দিনশেষে আমার সম্পর্কে যত মন্দই বলুক না কেন আমার কিন্তু কাজ করতেই হবে। ভালো কাজ করতে হবে।’

টার্মিনালের সংকট তুলে ধরে অতিরিক্ত আইজিপি পদন্নোতিপ্রাপ্ত এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কিন্তু আমাদের ট্রাফিক ব্যবস্থার কাজ প্রোপারলি করতে পারি না নগরীতে ডাম্পিং স্টেশনের সংকটের কারণে। নগরীতে অনাকাঙ্খিত এবং অননুমোদিত যে যানবাহন রয়েছে সেগুলোকে সড়িয়ে রাখার মতো ব্যবস্থা আমার নেই। আবার যারা রাস্তায় এসব পরিবহন চালান তারাও এ সংকটের কথা জানেন। জেনেই তারা তাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।’

নগরীতে ডাম্পিং স্টেশনের সংকট তুলে ধরে বিদায়ী এই কমিশনার বলেন, বন্দর নগরীর অবস্থান কিন্তু ঢাকার পরেই। অনেক জনবহুল একটি শহর। কিন্তু এই শহরে গ্রহণযোগ্য কোনো টার্মিনাল নেই। একমাত্র কদমতলি টার্মিনাল রয়েছে।

যানজটের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কথায় কথায় আমরা বলি যানজটমুক্ত শহর চাই। এটা তখনই সম্ভব যদি শহরে কোনো যান না থাকে। যদি যান থাকে তবে যানজট থাকতে পারে। তবে এটি সীমার মধ্যে এবং সহনীয় থাকতে হবে। যত বোড় শহর ট্রাফিক জ্যাম ততো বেশি। একই রাস্তায় বিভিন্ন কারণে আমাদের মোটর এবং ননমোটরাইজড যান কিন্তু রাখতে হচ্ছে। মাননীয় মেয়র মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই এসমস্ত যানবাহন উনি চিহ্নিত করেছেন এবং তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তাদেরকে নির্দিষ্ট রাস্তায় নিয়ে যেতে কাজ করছেন।’

অনুষ্ঠান শেষে সভাপতির বক্তব্যে শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘চট্টলার চাকা চট্টগ্রাম শহরে আমরা চালু করেছি। আমি আশ্বস্ত করতে পারি পরিবহন সেক্টরকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করবো। শান্তি এক্সপ্রেস সবসময় সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা ১১টি গাড়ির পারমিট পেয়েছি। ইতোমধ্যে চালকদের পরীক্ষা নিয়ে তাদের নিয়োগ দিয়েছি। আমাদের ৪ জন চালক সবসময় স্ট্যান্ডবাই থাকবে। যাতে চালক সংকট না হয়। তাছাড়া চালকদের জন্য নির্ধারিত ড্রেস থাকবে। নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গাড়ি ছাড়া হবে। কোনো যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে পারবে না এবং সিটের বাইরে যাত্রী নেওয়া হবে না। অ্যাপ্সের মাধ্যমে ই-টিকেটের মাধ্যমে টিকেট গ্রহণ করবে যাত্রীরা। আমি আশ্বস্ত করতে পারি চট্টগ্রাম সিটিকে সুন্দর নগরীকে পরিণত করার জন্য আমরা কাজ করবো। যেন মানুষ বলতে না পারে চট্টগ্রামের পরিবহণের বেহাল দশা।’

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ আহাম্মদ, নগর পুলিশের পশ্চিম বিভাগের উপকমিশনার (ট্রাফিক) মো. তারেক আহম্মেদ, চট্টগ্রাম বিআরটিএ'র পরিচালক ও মেট্রো আরটিসির সদস্য সচিব মো. মাসুদ আলম, নিটল মোটরস লিমিটেডের সেলস ও মার্কেট বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানবীর শহীদ এবং অন্যান্য পরিবহন নেতারা।

এ সময় চট্টগ্রাম জেলা মালিক গ্রুপরে সৈয়দ হোসেন, আহাসান উল্লাহ হাসান, মনছুর রহমান চৌধুরী, নুরুল ইসলাম চৌং, জাফর চৌধুরী, আনোয়ারুল আজিম খান, রুহুল আমিন চৌং, ফারুক খান, জাফর আলম। মেট্রো মালিক গ্রুপের সিটি বাসরে আমজাদ হাজারী, বেলায়েত হোসেন, আকরাম শেখ, তরুণ দাস ভানু, শহিদুল ইসলাম ছমু, খোরশেদ আলম, সিরাজদৌল্লাহ নিপু, বদিউলম আলম মজুমদার। শ্রমিক ফেডারেশনরে মো. মুছা , অলি আহাম্মদ, কামাল উদ্দীন, মনছুর আলম, সামশুল আলম, মো. নুরুল ইসলাম, মো. আবছার, ইয়াকুবসহ চট্টগ্রাম জেলা-মেট্রো সিটি বাস গণপরিবহন সংগঠনের মালিক শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে হোটেল আগ্রাবাদের সামনে ফিতা কেটে এ বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীসহ অন্যান্য অতিথিরা।

এসি বাস সার্ভিস চট্টলা চাকা এক্সপ্রেসের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘যাত্রীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আমরা এই এসি বাস সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছি। আশা করছি, যাত্রীদের নিরাপদ ও আরামদায়ক সেবা দিতে পারব। আমরা শুরুতে ১০টি বাস নামাচ্ছি সড়কে, পরে চাহিদা অনুযায়ী আরও ১০টি বাস নামানো হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টলা চাকা’ নামের কাউন্টারভিত্তিক এই এসি বাস বন্দরনগরীতে চলবে মূলত রাজধানীর গুলশানে চলাচলরত ‘ঢাকা চাকা’ এসি বাস সার্ভিসের আদলে। বাসটির আসন ব্যবস্থাপনা হবে অনেকটা দূরপাল্লার বাসের আসন ব্যবস্থাপনার মতো। স্বয়ংক্রিয় বুকিং সিস্টেমের কারণে নির্ধারিত ৩৫টি আসনের অতিরিক্ত যাত্রী ওঠার সুযোগ থাকবে না বাসে।

কাউন্টারগুলো যাত্রীর চাপ অনুযায়ী হলুদ এবং লাল-ক্যাটাগরিতে ভাগ করে দেওয়া হবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে হাফ ভাড়া নেওয়ার প্রজ্ঞাপন না থাকলেও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কার্ড সিস্টেম করা হবে। ওই কার্ড দিয়ে যাতায়াত করলে তারা নির্দিষ্ট পরিমাণে ভাড়া ছাড় পাবে বলে যোন করেন প্রতিষ্ঠানটির এই নির্বাহী পরিচালক।

চট্টলা চাকা এক্সপ্রেস সূত্র জানায়, ৩৫ আসনের হলুদ রঙের বাসগুলো কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত প্রতিদিন যাতায়াত করবে। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত।

মঙ্গলবার (২জুলাই) থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা নির্দিষ্ট কাউন্টারের মাধ্যমে বাসগুলো চলাচল করবে। শহরের দুই প্রান্ত থেকে প্রতিটি ৩০ মিনিট পর পর ৫টি করে মোট ১০টি বাস চলাচল করবে।

এর আগে ২০১৬ সালে ৬টি বাস দিয়ে নগরের কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত ১৪ নম্বর রুটে এসি বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেয় প্রিমিয়ার ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস (প্রা.) লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান। তবে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহন শুরুর আগেই উদ্যোগটি ভেস্তে যায়।

;

কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের টার্গেট করে জঙ্গি নাটক সাজানো হচ্ছে : হেফাজত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম চট্টগ্রাম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকর্তা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কওমি মাদরাসার ছাত্রদের টার্গেট করে জঙ্গিবাদের তকমা লাগানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সাদা পোশাকে ধরে নিয়ে কয়েদিন গুম রাখে। পরে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বলে কল্পিত অভিযোগ দিয়ে গ্রেফতারের নাটক সাজিয়ে দেশ বিদেশে মাদ্রাসা ছাত্রদের সন্ত্রাসী হিসেবে প্রমাণ করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে-এমন অভিযোগ করেছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

সম্প্রতি কওমি মাদরাসার ছাত্রদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার (১ জুলাই) গণমাধ্যমে হেফাজতের পক্ষে দেওয়া বিবৃতিতে এমন অভিযোগ করেন আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান।

এক বিবৃতিতে, কক্সবাজারে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার দুজনসহ গ্রেফতার তিন ছাত্রকে কোন অপরাধে জঙ্গি বানানো হয়েছে তা জাতি জানতে চায় বলেও মন্তব্য করেন তারা।

তাদের দাবি, গত বুধবার ঢাকার সাইনবোর্ড থেকে হাতের লেখা প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে কুমিল্লা থেকে জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার ছাত্র উজায়ের ও হামিমকে এবং লক্ষ্মীপুর থেকে নেয়ামতুল্লাহকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন। নিরীহ এই ছাত্রদের গ্রেফতারের তিন দিন পর তাদেরকে কক্সবাজারে জঙ্গি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বেশ কয়েকটি বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে হেফাজত নেতৃদ্বয় বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল মহল থেকে একাধিকবার বলা হয়েছে যে, জঙ্গিবাদের সাথে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দূরতম সম্পর্কও নেই। একাদশ জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, কেউ কেউ বলবেন মাদ্রাসা হচ্ছে জঙ্গিবাদ সৃষ্টির কারখানা। কিন্তু আমি এটার সঙ্গে একমত নই। হোলি আর্টিজানে জড়িতরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করা উচ্চশিক্ষিত পরিবার ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া।

এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল একাধিকবার বলেছেন, মাদ্রাসার সঙ্গে জঙ্গিবাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মাদ্রাসার ছাত্ররা জঙ্গি নয়। জঙ্গি হতে পারে না।

তিনি ২০২৩ সালে হাটহাজারী মাদরাসা পরিদর্শনে গিয়ে বলেছিলেন, কওমি মাদ্রাসা দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেখানে ইসলাম শিক্ষা দেওয়া হয়। এখান থেকে কখনো জঙ্গি উত্থান হয়নি, হতেও পারেনা।

২০২৪ সালে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, আমরা যত জঙ্গি ধরেছি, তার মধ্যে একজনও মাদ্রাসার ছাত্র নন।

হেফাজত আমীর ও মহাসচিব প্রশাসনের উদ্দেশ্য বলেন, এসব জঙ্গি নাটক অবিলম্বে বন্ধ করুন। আলেম ওলামা ও ছাত্রজনতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করে সরকারের সঙ্গে সংঘাত তৈরির চেষ্টা করবেন না। এসব অন্যায় কর্মতৎপরতা বন্ধ করা না হলে দেশের আপামর তৌহিদী জনতা কখনোই নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে না।

;