‘চট্টলা চাকা’ পরিবহন সেক্টরে সাহসী পদক্ষেপ : চসিক মেয়র



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম চট্টগ্রাম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ‘চট্টলা চাকা’ এসি বাস সার্ভিস পরিবহন সেক্টরে নতুন সংযোজন এবং সাহসী পদক্ষেপ। যে দেশের কমিউনিকেশন যত উন্নত সে দেশের অর্থনীতি তত সমৃদ্ধ। আজকে চট্টগ্রাম পরিবরহন জগৎ আরও এগিয়ে গেল।

সোমবার (১ জুলাই) বিকেলে চারটার দিকে নগরীর হোটেল আগ্রাবাদের ইছামতি হলে এসি (শীততাম নিয়ন্ত্রিত) বাস সার্ভিসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব ও শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়।

প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে মেয়র 'চট্টলা চাকা' সার্ভিসের ভাড়ার প্রশংসা করে তিনি বলেন, এসি বাসে শহরে ২০ টাকা, ৫০ টাকা, সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ভাড়া করা হয়েছে। কাপ্তাই রুট থেকে আগ্রাবাদ পর্যন্ত মাত্র ৫০ টাকা। বর্তমানে এটি খুব বেশি নয়। যারা এসি বাস চড়বেন তারা ৫০ টাকা দিতে কিন্তু রাজি। কিন্তু বাসের পরিবেশ সেরকম হতে হবে। এখন যাত্রী পরিবহনের জন্য ১১টি বাস দিয়ে তারা শুরু করেছে। একবছরের মধ্যে সেটা ৩০টিতে রুপ নেবে। শুধু আচার-ব্যবহার সমৃদ্ধ করতে হবে। তাহলে মানুষ নিজে থেকেই উঠবে।

পরিবহন ব্যবস্থার নাজুক অবস্থার চিত্র তুলে ধরে পরিবহন মালিকদের উদ্দেশ্য করে মেয়র বলেন, ‘অনেককে আক্ষেপ করে বলতে শুনি, শহরে এখনো লক্কর-ঝক্কর গাড়ি চলে। এমনো আছে বাসের বডি ভেঙ্গে রাস্তার সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। সেই গাড়িও চলে। কেন সেই গাড়ি চলে? একটা সুন্দর পরিনহন যদি একই ভাড়া দিয়ে রোডে চালাতে পারে তাহলে ওই মালিক কেন ওই পরিবহন লক্করজ-ঝক্কর বাস চালাবে। যাত্রীদের সেবা দূর, এমন হলে তা বোধহয় বিরক্তিতে রুপ নেবে। আমি আহ্বান জানাবো আমাদের গণপরিহন আমরা সুন্দর কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে পারলে গণপরিবহন আরো সমৃদ্ধ হবে।’

এ সময় মেয়র গণপরিবহনের চালক-হেলপারদের ব্যবহার সুন্দর করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যাত্রীদের বলতে শোনা যায়, এসির বাতাস খেলে মানুষ সুমিষ্ট হয়ে যায়। এটা আসলে ঠিক নয়। যারা বাস চালক-সুপারভাইজার আছেন তারা যাত্রীর সঙ্গে এমন আচরণ করেন যেন যাত্রী সেই আপনার পরিবহনে উঠতে আগ্রহ প্রকাশ করে। বিদেশে যারা চালক সুপারভাইজার এদের ব্যবহার দেখে মুগ্ধ হতে হয়। ইচ্ছে করে তাদেরকে সালাম করতে। কারণ এত সুন্দর তাদের ব্যবহার। এটিই তাদের বিদেশের গণপরিবহনকে সমৃদ্ধ করেছে।’

সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, ‘আজকে যারা আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন এই বাস সার্ভিস নিয়ে এসেছেন তাদেকে অভিনন্দন জানাই। মানুষের চাহিদা এবং সামর্থ্য আছে, কিন্তু নগরীতে সেরকম যান না থাকার কারণে তাদের মধ্যে একটা হতাশা তৈরি হয়েছে। আমি আশা করছি এই বাস সার্ভিসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরের নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটবে। আর যারা সামর্থ্যবান আছেন তারা এই ব্যবসায় নেমে আসবেন। আধুনিক বাস আসলে লক্কর-ঝক্কর বাস এমনিতেই বাদ পরে যাবে। পুলিশের সাথে পরিবহন সেক্টরের একটি মিল রয়েছে। পুলিশ যেমন ত্যাগ ও সেবা দিলেও অনেকে শুধু নিন্দাই করে তেমনি পরিবহনে ভালোবাসে এরকম লোক কিন্তু কমই বলা চলে। দিনশেষে আমার সম্পর্কে যত মন্দই বলুক না কেন আমার কিন্তু কাজ করতেই হবে। ভালো কাজ করতে হবে।’

টার্মিনালের সংকট তুলে ধরে অতিরিক্ত আইজিপি পদন্নোতিপ্রাপ্ত এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কিন্তু আমাদের ট্রাফিক ব্যবস্থার কাজ প্রোপারলি করতে পারি না নগরীতে ডাম্পিং স্টেশনের সংকটের কারণে। নগরীতে অনাকাঙ্খিত এবং অননুমোদিত যে যানবাহন রয়েছে সেগুলোকে সড়িয়ে রাখার মতো ব্যবস্থা আমার নেই। আবার যারা রাস্তায় এসব পরিবহন চালান তারাও এ সংকটের কথা জানেন। জেনেই তারা তাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।’

নগরীতে ডাম্পিং স্টেশনের সংকট তুলে ধরে বিদায়ী এই কমিশনার বলেন, বন্দর নগরীর অবস্থান কিন্তু ঢাকার পরেই। অনেক জনবহুল একটি শহর। কিন্তু এই শহরে গ্রহণযোগ্য কোনো টার্মিনাল নেই। একমাত্র কদমতলি টার্মিনাল রয়েছে।

যানজটের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কথায় কথায় আমরা বলি যানজটমুক্ত শহর চাই। এটা তখনই সম্ভব যদি শহরে কোনো যান না থাকে। যদি যান থাকে তবে যানজট থাকতে পারে। তবে এটি সীমার মধ্যে এবং সহনীয় থাকতে হবে। যত বোড় শহর ট্রাফিক জ্যাম ততো বেশি। একই রাস্তায় বিভিন্ন কারণে আমাদের মোটর এবং ননমোটরাইজড যান কিন্তু রাখতে হচ্ছে। মাননীয় মেয়র মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই এসমস্ত যানবাহন উনি চিহ্নিত করেছেন এবং তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তাদেরকে নির্দিষ্ট রাস্তায় নিয়ে যেতে কাজ করছেন।’

অনুষ্ঠান শেষে সভাপতির বক্তব্যে শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘চট্টলার চাকা চট্টগ্রাম শহরে আমরা চালু করেছি। আমি আশ্বস্ত করতে পারি পরিবহন সেক্টরকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করবো। শান্তি এক্সপ্রেস সবসময় সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা ১১টি গাড়ির পারমিট পেয়েছি। ইতোমধ্যে চালকদের পরীক্ষা নিয়ে তাদের নিয়োগ দিয়েছি। আমাদের ৪ জন চালক সবসময় স্ট্যান্ডবাই থাকবে। যাতে চালক সংকট না হয়। তাছাড়া চালকদের জন্য নির্ধারিত ড্রেস থাকবে। নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গাড়ি ছাড়া হবে। কোনো যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে পারবে না এবং সিটের বাইরে যাত্রী নেওয়া হবে না। অ্যাপ্সের মাধ্যমে ই-টিকেটের মাধ্যমে টিকেট গ্রহণ করবে যাত্রীরা। আমি আশ্বস্ত করতে পারি চট্টগ্রাম সিটিকে সুন্দর নগরীকে পরিণত করার জন্য আমরা কাজ করবো। যেন মানুষ বলতে না পারে চট্টগ্রামের পরিবহণের বেহাল দশা।’

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ আহাম্মদ, নগর পুলিশের পশ্চিম বিভাগের উপকমিশনার (ট্রাফিক) মো. তারেক আহম্মেদ, চট্টগ্রাম বিআরটিএ'র পরিচালক ও মেট্রো আরটিসির সদস্য সচিব মো. মাসুদ আলম, নিটল মোটরস লিমিটেডের সেলস ও মার্কেট বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানবীর শহীদ এবং অন্যান্য পরিবহন নেতারা।

এ সময় চট্টগ্রাম জেলা মালিক গ্রুপরে সৈয়দ হোসেন, আহাসান উল্লাহ হাসান, মনছুর রহমান চৌধুরী, নুরুল ইসলাম চৌং, জাফর চৌধুরী, আনোয়ারুল আজিম খান, রুহুল আমিন চৌং, ফারুক খান, জাফর আলম। মেট্রো মালিক গ্রুপের সিটি বাসরে আমজাদ হাজারী, বেলায়েত হোসেন, আকরাম শেখ, তরুণ দাস ভানু, শহিদুল ইসলাম ছমু, খোরশেদ আলম, সিরাজদৌল্লাহ নিপু, বদিউলম আলম মজুমদার। শ্রমিক ফেডারেশনরে মো. মুছা , অলি আহাম্মদ, কামাল উদ্দীন, মনছুর আলম, সামশুল আলম, মো. নুরুল ইসলাম, মো. আবছার, ইয়াকুবসহ চট্টগ্রাম জেলা-মেট্রো সিটি বাস গণপরিবহন সংগঠনের মালিক শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে হোটেল আগ্রাবাদের সামনে ফিতা কেটে এ বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীসহ অন্যান্য অতিথিরা।

এসি বাস সার্ভিস চট্টলা চাকা এক্সপ্রেসের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘যাত্রীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আমরা এই এসি বাস সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছি। আশা করছি, যাত্রীদের নিরাপদ ও আরামদায়ক সেবা দিতে পারব। আমরা শুরুতে ১০টি বাস নামাচ্ছি সড়কে, পরে চাহিদা অনুযায়ী আরও ১০টি বাস নামানো হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টলা চাকা’ নামের কাউন্টারভিত্তিক এই এসি বাস বন্দরনগরীতে চলবে মূলত রাজধানীর গুলশানে চলাচলরত ‘ঢাকা চাকা’ এসি বাস সার্ভিসের আদলে। বাসটির আসন ব্যবস্থাপনা হবে অনেকটা দূরপাল্লার বাসের আসন ব্যবস্থাপনার মতো। স্বয়ংক্রিয় বুকিং সিস্টেমের কারণে নির্ধারিত ৩৫টি আসনের অতিরিক্ত যাত্রী ওঠার সুযোগ থাকবে না বাসে।

কাউন্টারগুলো যাত্রীর চাপ অনুযায়ী হলুদ এবং লাল-ক্যাটাগরিতে ভাগ করে দেওয়া হবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে হাফ ভাড়া নেওয়ার প্রজ্ঞাপন না থাকলেও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কার্ড সিস্টেম করা হবে। ওই কার্ড দিয়ে যাতায়াত করলে তারা নির্দিষ্ট পরিমাণে ভাড়া ছাড় পাবে বলে যোন করেন প্রতিষ্ঠানটির এই নির্বাহী পরিচালক।

চট্টলা চাকা এক্সপ্রেস সূত্র জানায়, ৩৫ আসনের হলুদ রঙের বাসগুলো কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত প্রতিদিন যাতায়াত করবে। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত।

মঙ্গলবার (২জুলাই) থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা নির্দিষ্ট কাউন্টারের মাধ্যমে বাসগুলো চলাচল করবে। শহরের দুই প্রান্ত থেকে প্রতিটি ৩০ মিনিট পর পর ৫টি করে মোট ১০টি বাস চলাচল করবে।

এর আগে ২০১৬ সালে ৬টি বাস দিয়ে নগরের কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত ১৪ নম্বর রুটে এসি বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেয় প্রিমিয়ার ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস (প্রা.) লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান। তবে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহন শুরুর আগেই উদ্যোগটি ভেস্তে যায়।

বরিশালের হাসপাতালগুলোতে ৬ মাসে ৫৩ হাজার ডায়রিয়া রোগী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
মে থেকে ধীরে ধীরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে

মে থেকে ধীরে ধীরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে

  • Font increase
  • Font Decrease

বছরের প্রথম ৬ মাসেই ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের পেটের পীড়া নিয়ে বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৫৩ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ইতোমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের।

অপরদিকে বর্ষার আসার সাথে ডেঙ্গুও হানা দিতে শুরু করেছে বরিশাল অঞ্চলে। গত একমাসে বরিশালের সরকারি হাসপাতালেই ১০৬ ডেঙ্গু রোগী ভর্তির খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এনিয়ে সরকারি হাসপাতালেই প্রায় ৩৯ হাজার ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার কথা জানিয়ে ২১৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। মে মাসেও প্রায় দেড়শ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিল হাসপাতালগুলোতে।

অপরদিকে গত এপ্রিলে ১২ হাজার এবং মে মাসে সাড়ে ৮ হাজারের পরে জুন মাসেও সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৮ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করে।

তবে একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ সাধারণ চিকিৎসকদের মতে, বরিশালে যে সংখ্যক ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় বা চিকিৎসা গ্রহণ করে, তার কয়েকগুন চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে বাড়ীতে চিকিৎসা গ্রহণ করছে। ফলে এ অঞ্চলে ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব না। তবে সব চিকিৎসকরাই পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয় বলে জানিয়ে অবিলম্বে ডেঙ্গুর বিষয়ে বিশেষ নজরদারি সহ সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন। তা না হলে পরিস্থিতি গতবছরের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা।

গত বছরও বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৭২ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, যা আগের বছর ছিল ৭৭ হাজারেরও বেশি। আর ২০২১ সালে করোনা মহামারীর সর্বোচ্চ সংক্রমনের মধ্যেও বরিশালে প্রায় ৮০ হাজার ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার জন্য আসেন। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসেই প্রায় ৫৩ হাজার ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালে আসায় বছর শেষে সংখ্যাটা সাম্প্রতিক বছরগুলোর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।

এদিকে ফেব্রয়ারীর শেষ থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও মে থেকে ধীরে ধীরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। তারা এ ব্যাপারে নজরদারিসহ জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণেরও তাগিদ দিয়েছেন।

অপরদিকে বিশুদ্ধ পানি ও স্যনিটেশন ব্যবস্থার অনেক উন্নতির পরেও ডায়রিয়া প্রবন বরিশাল অঞ্চলে এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব হচ্ছে না। তবে এর পেছনে পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার চেয়ে এখন পথ খাবারের দোকানের নিম্নমানের মুখরোচক খাবারকে দায়ী করছেন চিকিৎসকরা। বরিশাল মহানগরীতে সিটি করপোরেশনের অনুমোদিত ও অননুমোদিত পথ খাবারের দোকানের সংখ্যাই এখন কয়েক হাজার। এসব দোকানের নিম্নমানের এবং বাসি ও মুখরোচক খাবার নগরবাসীর পেটের পীড়াকে ক্রমাগত বৃদ্ধি করে চললেও তা নিয়ে জনসচেতনতার অভাবের সাথে এসব খাবার বিক্রি বন্ধে নগর ভবনের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেই বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ সব ব্যাপারে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ডায়রিয়া প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবিড় কার্যক্রমের কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে পথ খাবারের দোকানের খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন এ কর্মকর্তা। পাশাপাশি ডেঙ্গুর একমাত্র বাহন এডিস মশা নিধনেও তিনি অবিলম্বে ‘জিরো টলারেন্স’ নিয়ে সবগুলো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে মাঠে নামার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। পাশাপাশি ডায়রিয়া ও ডেঙ্গুসহ যেকোন অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের পরামর্শ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

ডায়রিয়া চিকিৎসায় বরিশালে ১ হাজার ও ৫শ এম এল-এর  প্রায় ৩০ হাজার ব্যাগ আইভি স্যালাইন ছাড়াও বিপুল সংখ্যক এ্যন্টিবায়োটিক ক্যাপসুল ও মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট সহ সব ধরনের চিকিৎসা সামগ্রীর মজুদের কথাও জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।

;

জিয়া-খালেদা-এরশাদ দেশের জন্য কিছুই আনতে পারেননি: প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সংসদ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী

সংসদ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়কার ভারত সফরে দেশের জন্য কোন কিছুই আনতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দলগুলোর কূটনৈতিক ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর ভারত-বাংলাদেশের ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানিচুক্তি, ছিটমহল বিনিময় ও তিন বিঘা করিডোর উন্মুক্ত হয়েছে। অথচ খালেদা জিয়া, জেনারেল এরশাদ ও জিয়াউর রহমান কেউ এ সকল সমস্যার সমাধান করতে পারেননি, করেননি।

বুধবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি এ সব কথা বলেন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। 

প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার জবাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি দেখতে পাচ্ছি কিছু লোক আমার ভারত সফর নিয়ে নানান কথা তুলেছে। ১৯৮১ সালে ছয় বছর পরে দেশে ফিরে আসার পর তখন এই একই কথা শুনতে হয়েছে (ভারতের কাছে দেশ বিক্রি)। এখন জানি না কেন সেই ভাঙা রেকর্ড বাজাতে শুরু করলো।

২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে না পারার কারণ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা গ্যাস বিক্রি করতে চাইনি বলে ভোট বেশি পেলেও ২০০১ সালে সিট বেশি পাইনি। এজন্য সরকার গঠন করতে পারলাম না। কারণ আমি গ্যাস বিক্রি করতে চাইনি। তো বিক্রিটা করে কে দেশকে? করে গেছে তো খালেদা জিয়া, করেছে এরশাদ সাহেব। করেছে জিয়াউর রহমান। এরাই করে গেছে, আওয়ামী লীগ করে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাজারটাকে ভারতীয় পণ্যের বাজারের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছিল জিয়াউর রহমান। ৪০টি পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশ অধিকার দিয়ে দেয়। ১৯৮০ সালে গ্যাস বিক্রির চুক্তিও করে আসে। ১৯৯২ সালে ভারতে গেলো খালেদা জিয়া। সেখানে যৌথ ইশতেহার ঘোষণার ১১ অনুচ্ছেদে বাংলাদেশ থেকে ব্যাপক হারে ভারতে অনুপ্রবেশ করার কথা স্বীকার করে নেয়। তারপরে পুশইন শুরু হয়েছিল। সেখানে আমাদের বহু মানুষ কষ্ট পেয়েছিল। এ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের জন্য আমরা সংসদে দাবিও করেছিলাম, কিন্তু কর্ণপাত করা হয়নি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়কার ভারত সফরে দেশের জন্য কোনও কিছুই আনতে পারেনি বলে অভিযোগ করেন সরকারপ্রধান। দলগুলোর কূটনৈতিক ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর ভারত-বাংলাদেশের ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানিচুক্তি, ছিটমহল বিনিময় ও তিন বিঘা করিডোর উন্মুক্ত হয়েছে। অথচ খালেদা জিয়া, জেনারেল এরশাদ ও জিয়াউর রহমান কেউ এ সকল সমস্যার সমাধান করতে পারেননি, করেননি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে। এতদিন তো গণতন্ত্র সেনানিবাসে বন্দি ছিল। সারা রাত হতো কারফিউ। আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পরেই গণতান্ত্রিক অধিকার মানুষের হাতে ফিরে এসেছে। জনগণ আমাদের ভোট দিচ্ছে, আমরা জয়ী হচ্ছি। অত্যাচার-নির্যাতনের কথা শুনি। আমাদের কোন নেতা-কর্মী বাকি ছিল নির্যাতনের হাত থেকে জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলে? তিনি বলেন, সবাই কথা বলছে, জনসভা করছে, মিছিল করছে, বক্তৃতা করছে। আমরা রেডিও, টেলিভিশন উন্মুক্ত করে দিয়েছি বেসরকারিভাবে। ইচ্ছামতো টকশো করছি। আমরা তো কারও মুখ চেপে ধরছি না, গলা চিপেও ধরছি না। যে যা পারছে, বলতে পারে বলুক। আমরা রাষ্ট্র চালাচ্ছি, জনগণের কল্যাণে কাজ করছি।

আমলাদের নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকে অনেক দোষ দেয়। কিন্তু আমি দেখেছি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সময়ে যারা একেবারে তরুণ (কর্মকর্তা), তাদের ভেতরে যে আন্তরিকতা, তাদের কাজ করার যে আগ্রহ, সেটা সত্যিই আমাকে আশার আলো দেখায়। সবাই মন-প্রাণ ঢেলে দিয়ে কাজ করেছে। এই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এ ধরনের নিবেদিতপ্রাণ কর্মী তো দরকার। এ ধরনের অফিসার তো আমাদের দরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার হারানোর কিছু নেই। পাওয়ারও কিছু নেই। আমার একটাই লক্ষ্য, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের অন্ন, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেশকে উন্নত করে দেওয়া। সেটাই আমি করতে চাই। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে আমরা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবো। এজন্য আমি সবার সহযোগিতা চাই। আমাদের নবযাত্রায় আরো সাফল্য আসুক। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। বাংলাদেশের মানুষ আরো উন্নত সুন্দর জীবন পাবে।

;

আগাম সতর্কবার্তা পৌঁছায় না বন্যার্তদের কাছে



কল্লোল রায়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদ

উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদ

  • Font increase
  • Font Decrease

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চর দক্ষিণ বালাডোবা চরের বাসিন্দা ইবাত আলী। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইতোমধ্যে তার থাকার ঘরের চাল পর্যন্ত পানি উঠেছে। একটি টিলায় ৪ টি গরু রাখলেও গত ৩ দিনের ধারাবাহিক পানি বৃদ্ধির ফলে সেই টিলাতেও পানি উঠেছে। গত দুই দিন ধর গরুগুলো অন্যত্র নেয়ার জন্য নৌকা খুঁজছিলেন তিনি। ৩ দিন গরুগুলো হাটু পানিতে থেকে পায়ে পচন ধরা শুরু হয়েছে। বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে নৌকা ভাড়া নিয়ে গরুগুলো পাশের বাজারের উঁচু ভিটায় রাখতে যাওয়ার পথে তিনি বলছিলেন, ‘ভাবছিলাম আগের বারের মতো পানি আর বেশি উঠবেনা। কিন্তু ৩ দিন ধরে যা পানি বাড়তেছে তাতে বাড়িতে থাকা সম্ভব না। কখন পানি বাড়বে কখন কমবে সেই খবর আমরা পাইনা। মাঝে মধ্যে বাজার গেলে শুনি।’ 

শুধু ইবাত আলী একাই নন। কুড়িগ্রামের বন্যাকবলিত চরাঞ্চলের হাজার হাজার পরিবারগুলোর অধিকাংশ পরিবারগুলোর কাছেই পৌঁছায় না বন্যার আগাম সতর্কবার্তা। চরাঞ্চল গুলোতে নদীর পানি বৃদ্ধি শুরু হলেই যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। নৌকার অভাবে অধিকাংশ পরিবারগুলোকে নির্ভর করতে হয় অন্যের নৌকার উপর। অথবা বেশি ভাড়া দিয়ে নৌকা নিয়ে জরুরী কাজ সারতে হয়। বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন থাকায় মোবাইল ফোন গুলোতেও চার্জ করা সম্ভব হয়না। জরুরী কোনো প্রয়োজনেও যোগাযোগের সীমাবদ্ধতা নিয়ে বেঁচে থাকতে হয় বন্যা কবলিত লোকদের। চরের লোকজনদের স্থানীয় বাজারে প্রতিদিন যাওয়ার প্রবণতাও কম। সপ্তাহে দু'দিন হাটে গিয়ে কেনাকাটা করে দ্রুত দিনের আলোতে বাড়ি ফেরার তাগিদ থাকে সবার। তাই বাজারে থাকা টিভিতে চোখ বুলানোর সুযোগও হয়না অনেকের।

সংকটের পাশাপাশি রয়েছে বন্যার আগাম সতর্কবার্তা না পাওয়ার আক্ষেপ

বুধবার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকটি বন্য কবলিত চর ঘুরে দেখে বার্তা ২৪.কম। বিভিন্ন সংকটের পাশাপাশি বন্যার আগাম সতর্কবার্তা না পাওয়ারও আক্ষেপ করেন অনেকে। তারা জানিয়েছেন, বন্যার কয়েকদিন আগে পানি বৃদ্ধির খবর জানলে ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কম হতো। বিশেষ করে গবাদিপশু গুলোকে নিরাপদে উঁঁচু স্থানে রেখে আসা যেত। 

বতুয়াতুলি মুসার চরের মন্টু মিয়া বলেন, ‘সরকারের ঘোষণা তো পাইনা। বাজারে যাই, চায়ের দোকানে টিভিতে যা খবর পাই তা নিয়ে থাকি। প্রতিদিন তো বাজারে যাই না। সপ্তাহে দুই দিন হাটে যাই। টিভিতে খবর দেখেছি পানি বাড়তেছে। কিন্তু এতটা বাড়বে জানা ছিল না। কিছু জিনিসপত্র ভেসে গেছে। মুরগি মারা গেছে কয়েকটা। আগে জানলে আত্মীয়র বাড়িতে রেখে আসতাম।’

বন্যাকালীন পরিস্থিতে জরুরী ভিত্তিতে লোকজনের কাছে খবর পৌঁছে দেয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে থাকে স্থানীয় প্রশাসন। বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া বলেন, ‘আমাদের ইউপি সদস্যদের কাছে নিয়মিত আপডেট পৌঁছে দেয়া হয়। এছাড়াও, দূর্যোগ মোকাবেলা কমিটি, গ্রামভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে আমরা খবর পৌঁছে দেই। কি কারণে চরাঞ্চলের লোকদের কাছে তথ্য পৌঁছায় না আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।’ 

কুড়িগ্রামের প্রায় ৩২০ বর্গকিলোমিটার এলাকা বন্যায় প্লাবিত

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ বলেন, ‘বন্যাকবলিত লোকদের কাছে সময়মতো পূর্বাভাস ও সতর্কবার্তা না পৌঁছানোর দায় কোনোভাবেই স্থানীয় প্রশাসন (ইউনিয়ন পর্যায়ের) এড়াতে পারেনা। এটি একটি সম্মিলিত কাজ। তথ্যের কোনো ঘাটতি নেই। আরও কিভাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে তথ্য পৌঁছে দেয়া যায়, সে ব্যাপারে আমরা কাজ করব।’ 

ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬ টায় চিলমারী ও নুনখাওয়া পয়েন্টে এই নদের পানি বিপৎসীমার যথাক্রমে ৩৪ সেন্টিমিটার ও ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে এর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হয়ে কয়েকটি উপজেলার হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাড়ছে ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি। এ অবস্থায় জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। 

জেলার দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখা জানিয়েছে, কুড়িগ্রামের প্রায় ৩২০ বর্গকিলোমিটার এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ৪০৪ টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬১ মেট্রিকটন চাল, ২হাজার ৯৬৭ প্যাকেট শুকনা খাবার ও নগদ ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। জরুরী স্বাস্থসেবার জন্য নিয়োজিত রয়েছে ৮৩ টি মেডিকেল টিম। 

;

ওষুধের গুণগতমান নিশ্চিত করে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা করতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ওষুধের গুণগতমান নিশ্চিত করে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা করতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ওষুধের গুণগতমান নিশ্চিত করে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা করতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ওষুধের গুণগতমান নিশ্চিত করার মাধ্যমে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা করতে হবে। নিম্নমানের ও ভেজাল ওষুধের অব্যাহত স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে জনগণকে রক্ষা করতে হলে এর কোন বিকল্প নেই।

বুধবার (৩ জুলাই) সকালে সাউথ ইস্ট এশিয়া রেগুলেটরি নেটওয়ার্কের সদস্য রাষ্ট্রসমূহের বার্ষিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া রেগুলেটরি নেটওয়ার্ক (এসইএআরএন) হচ্ছে ডব্লিউএইচও’র দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোর জাতীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

অনুষ্ঠানে ডা. সামন্ত লাল সেন আরো বলেন, সাউথ ইস্ট এশিয়া রেগুলেটরি নেটওয়ার্কের সমাবেশে বক্তব্য দেয়াটা আমার জন্য সম্মানের। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর এই সমাবেশ আমাদেরকে একত্রিত করে অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং আমাদের অঞ্চলে ওষুধের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণকে শক্তিশালী করার জন্য একটি মূল্যবান সুযোগ এনে দিয়েছে।

তিনি বলেন ‘আমরা সবাই জানি, ওষুধের নিরাপত্তা, কার্যকারিতা এবং গুণগতমান নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা করতে হবে। এই প্রচেষ্টায় যে সাধারণ চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হই, তার মধ্যে রয়েছে নিম্নমানের এবং ভেজাল ওষুধের অব্যাহত ঝুঁকি।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, সাউথ ইস্ট এশিয়া রেগুলেটরি নেটওয়ার্কে কাজ করার মাধ্যমে আমরা এই চ্যালেঞ্জগুলোকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করতে পারি। এই জন্য আমরা আমাদের যৌথ দক্ষতা, সম্পদ এবং সর্বোত্তম অনুশীলনকে কাজে লাগাতে পারি। তথ্য আদান-প্রদান, সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ এবং পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা আমাদের নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারি।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. আহমেদুল কবীর বক্তৃতা করেন।

এতে সদস্য দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং পূর্ব তিমুরের প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষকগণ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

;