সত্যিই কী রাসেলস ভাইপার আতঙ্কের নাম? চেনার উপায় ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাসেলস ভাইপার। ছবি: বার্তা২৪.কম

রাসেলস ভাইপার। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গত কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাপের একটি প্রজাতি নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। বলা চলে দেশে এখন আতঙ্কের নাম এই প্রজাতির সাপ। সাপটির নাম রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ। যাকে বাংলাদেশ থেকে অনেক বছর আগেই বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে সম্প্রতি এই সরিসৃপের বরেন্দ্র অঞ্চলে আনাগোণা থাকলেও বর্তমানে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে এর উৎপাত। বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, চাঁদপুর এমনকি ঢাকার উপকণ্ঠের গ্রামগুলোতেও দেখা মিলছে বিষধর এই সাপের।

এমন পরিস্থিতিকে গবেষকরা বলছেন, প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে স্বভাব পরিবর্তন করছে রাসেলস ভাইপার।

এদিকে ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে অনেকে নানাভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। বিষয়টিকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যে এই সাপের কামড়ে শেষ পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যু। তবে এ প্রজাতির সাপ কামড়ালে তারও চিকিৎসা আছে এবং সময়মত চিকিৎসা নিতে পারলে মৃত্যু ঝুঁকিও কমে আসে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি জেলায় রাসেল’স ভাইপারের কামড়ে কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনাও গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।

এই প্রজাতির সাপ নিয়ে বেশি আতঙ্কের কারণ হচ্ছে খুব দ্রুত বংশ বিস্তার করতে পারে। যার ফলে খুব সহজেই বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এই সাপের আধিক্য মানুষের জন্য হুমকি তৈরি মতো সম্ভাবনার দেখা দিয়েছে।

কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে রাসেল’স ভাইপার নিয়ে যে মাত্রায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে তা আসলে কতটা যৌক্তিক? যদি তাই হয় তাহলে এর থেকে নিরাপদে থাকারই বা উপায় কী?

চলুন, রাসেলস ভাইপার থেকে নিরাপদে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

রাসেলস ভাইপার কতটা ভয়ঙ্কর

বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক সাপগুলোর মধ্যে অন্যতম এই রাসেলস ভাইপার। একটি পূর্ণাঙ্গ রাসেলস ভাইপারের কামড়ে প্রায় ১৩০ থেকে ২৫০ মিলিগ্রাম বিষ থাকে। ছোট সাপগুলোর মধ্যে থাকে প্রায় ৮ থেকে ৭৯ মিলিগ্রাম। এছাড়া অন্যান্য যে কোনো বিষাক্ত প্রাণীর তুলনায় এগুলো অনেক বেশি পরিমাণে বিষ নিঃসরণ করতে সক্ষম।

বিভিন্ন প্রজাতিতে এই বিষ মূলত ২ ধরনের হয়ে থাকে; নিউরোটক্সিন ও হেমোটক্সিন।

১। নিউরোটক্সিন: এই বিষ স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে এবং এর মাধ্যমে শরীরের প্রধান অঙ্গগুলোকে পর্যায়ক্রমে নিষ্ক্রিয় করে দিতে থাকে। একসঙ্গে অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের এই অবনতি বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দ্রুত ঘটে।

কামড়ের জায়গায় ব্যথার সঙ্গে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। তারপর আক্রান্ত স্থান থেকে ধীরে ধীরে তা ছড়াতে থাকে সারা দেহে। কামড়ের ২০ মিনিটের মধ্যে মুখ থেকে থুথুর সঙ্গে রক্ত বের হওয়া শুরু করে। রক্তচাপের পাশাপাশি হৃদস্পন্দন কমে যেতে থাকে। চূড়ান্ত অবস্থায় বমি হতে পারে এবং মুখ ফুলে যেতে পারে। কামড়ের ক্ষত চিহ্নের চারপাশের জায়গা বিবর্ণ হয়ে যায় এবং ফুলে ওঠে। ১ থেকে ৩ ঘণ্টার মধ্যে বমির সঙ্গে ডায়রিয়া যুক্ত হয়ে সারা শরীর নিস্তেজ হয়ে যেতে থাকে। সর্বপরি, অবিলম্বে চিকিৎসা না করা হলে এই দংশন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু ঘটাতে পারে।

২। হেমোটক্সিক: এই বিষ প্রকৃতির হলে রক্ত জমাট বা অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের ঘটনা ঘটে। এতে শরীরের প্রধান অঙ্গগুলোতে রক্তের পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার ফলে অঙ্গগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে থাকে। 

এই সরিসৃপটির সবচেয়ে ভয়ানক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর গায়ের রঙ ও রেখা, যেগুলো যে কোনো পরিবেশের সঙ্গে একদম মিশে যায়। এতে করে কাছাকাছি কোনো শিকার এর অবস্থান টেরই পায় না। এছাড়াও শিকারকে পরিপূর্ণভাবে ধরাশায়ী করার জন্য এটি দীর্ঘক্ষণ যাবৎ ঘাপটি মেরে পড়ে থাকতে পারে। অতঃপর ইঞ্চি ইঞ্চি করে এগিয়ে সুযোগ বুঝে ক্ষীপ্র গতিতে ঝাপিয়ে পড়ে শিকারের উপর।

শিকার ধরার জন্য এদের সেরা সময় হচ্ছে রাতের বেলা। কিন্তু শারীরিক বৈশিষ্ট্যের কারণে দিনের আলোতেও এদেরকে শনাক্ত করা মুশকিল।

রাসেলস ভাইপার সাপ চেনার উপায়

ভারতীয় উপমহাদেশে চন্দ্রবোড়া বা উলুবোরা নামে পরিচিত এই সাপ ৫ দশমিক ৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। ত্রিভুজাকার আকৃতির চ্যাপ্টা মাথা ঘাড় থেকে বেশ আলাদা। মুখের সামনের অংশটি গোলাকার, ভোঁতা ও উপরের দিকে বাকানো।

নাকের ছিদ্র বড় এবং মাথার শীর্ষবিন্দু স্বতন্ত্রভাবে খণ্ডিত আবরণে আচ্ছাদিত। মাথা আকারে বেশ বড় এবং রঙ হলুদ বা সোনালি হলুদ। আর এর চারপাশে থাকে ১০ থেকে ১৫টি বৃত্তাকার আঁশের বেষ্টনী। দুই জোড়া চোয়ালের ঢালের মধ্যে সামনের জোড়াটি একটু বেশি প্রসারিত। মুখের ভেতর দুটি ম্যাক্সিলারি হাড়ের সঙ্গে এক জোড়া করে মোট ৬টি বিষদাঁত। তবে একদম সামনের জোড়া দাঁতগুলো বেশ প্রকাণ্ড এবং সক্রিয় থাকে। দেহের পেছনে ছোট লেজের দৈর্ঘ্য গোটা দেহের মাত্র ১৪ শতাংশ।

এদের শরীরের রঙের প্যাটার্নে রয়েছে গভীর হলুদ এবং বাদামী মাটির রঙ। শরীরের দৈর্ঘ্য বরাবর ৩ সারি গাঢ় বাদামী দাগ। এই দাগগুলোর প্রত্যেকটির চারপাশে রয়েছে একটি করে কালো বলয়। এর বাইরের সীমানা সাদা বা হলুদ হয়ে প্রান্তের দিকে গাঢ় হয়ে গেছে। মাথায় রয়েছে এক জোড়া গাঢ় ছোপ, যার প্রত্যেকটি একটি করে গোলাপী বা বাদামী রঙের ‘ভি’ বা ‘এক্স’ আকৃতি হয়ে মাথার শীর্ষবিন্দুতে যেয়ে মিলেছে। চোখের পিছনে অন্ধকার স্তরটি সাদা বা গোলাপী প্রান্তরেখায় পরিবেষ্টিত। শরীরের সামনে ও পিছনে সর্বাঙ্গ জুড়ে সাদা, হলুদ বা গোলাপী রঙের সঙ্গে কালো দাগের অনিয়মিত ও বিক্ষিপ্ত নকশা।

রাসেলস ভাইপারের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- এরা যে কোনো স্থানের সঙ্গে অবিকল ভাবে মিশে যেতে পারে। কোনো শত্রুর কাছ থেকে হুমকি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এরা একটি ‘এস’ আকৃতি গঠন করে। অতঃপর শরীরের উপরের এক-তৃতীয়াংশকে উত্থাপন করে উচ্চ শব্দে আক্রমণের ঘোষণা দিতে থাকে। এইভাবে শরীরের নির্দিষ্ট অংশকে উপরে তুলে ধরাটা প্রতিটি সাপেরই আক্রমণের একটি সাধারণ ভঙ্গিমা। তবে অন্যান্য সাপের তুলনায় রাসেলস ভাইপার তার শরীরের বেশির ভাগ অংশ মাটি থেকে তুলতে পারে।

রাসেলস ভাইপার থেকে বাঁচার উপায়: প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

প্রতিরক্ষামূলক পরিধেয়

সবচেয়ে বিপজ্জনক অঞ্চলগুলোর অধিবাসীদের লম্বা ও মোটা চামড়ার বা রাবারের বুট পরিধান করা উচিৎ। এছাড়া মোটা গ্লাভ্সও অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিতে পারে। রাসেলস ভাইপারের বিষদাঁত যে কোনো সাপের থেকে বেশ লম্বা, কিন্তু সেগুলো গামবুট ভেদ করতে পারে না।

অন্ধকার এলাকা এড়িয়ে চলা

এই সাপগুলো শিকার ধরার জন্য রাতের বেলা এবং অন্যান্য সময় অপেক্ষাকৃত অন্ধকার জায়গা বেঁছে নেয়। তাই রাতসহ দিনের অন্যান্য সময়ে পথ চলার সময় সঙ্গে একটি টর্চলাইট রাখা ভালো।

শিশু-কিশোরদের সাবধান করা

এসব বিষাক্ত প্রাণীদের এড়িয়ে গেলে সাধারণত এরা বিপদের কারণ হয় না। কিন্তু দুর্ঘটনা সহ মানুষের কোনো আচরণকে হুমকি ভেবে এরা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। গ্রামে-গঞ্জে অনেক ক্ষেত্রে শিশু-কিশোরদের এরকম বিভিন্ন প্রাণী নিয়ে খেলতে দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে কোনো বিপজ্জনক পরিস্থিতির উপক্রম হওয়ার আগেই তাদেরকে সাবধান করা দরকার। এমনকি সাপ মরে পড়ে আছে ভেবে সেটা সরানোর সময়ও সাবধান থাকা উচিৎ।

রাসেলস ভাইপার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি

দেশের যে এলাকাগুলোতে এই সাপের উপদ্রব বেশি, সেখানে অবিলম্বে যথাযথ সাবধানতা জোরদার করা উচিৎ। এর জন্য কৃষক, জেলেসহ প্রতিটি মানুষকে এই সরিসৃপের প্রজাতি ও তাদের আবাসস্থল সম্বন্ধে সহজ ভাষায় জানাতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নিরাপত্তামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। সেই সঙ্গে উপজেলা পর্যায়সহ দেশের অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে যত দ্রুত সম্ভব অ্যান্টি-ভেনম বিতরণ করা উচিৎ।

রাসেলস ভাইপার কামড়ালে করণীয়

এই সাপের দংশনের শিকার হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাঁচানোর জন্য অ্যান্টি-ভেনমের কোনো বিকল্প নেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। দক্ষ সেবা পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাৎক্ষণিক ভাবে প্রাথমিক যে ব্যবস্থাগুলো নেওয়া যেতে পারে তা হলো:

১। আক্রান্ত ব্যক্তির পরিহিত যে কোনো আঁটসাঁট অলঙ্কার বা পোশাক খুলে আরামদায়ক অবস্থানে তাকে বসিয়ে বা শুইয়ে রাখা

২। সাবান এবং পানি দিয়ে ক্ষত স্থান পরিষ্কার করে দেওয়া

৩। কামড়ের স্থান এবং তার চারপাশের জায়গায় ব্যান্ডেজ লাগানো। তবে ব্যান্ডেজ যেন খুব বেশি শক্ত না হয়। নড়াচড়া এড়াতে ব্যান্ডেজের সঙ্গে একটি ছোট লম্বা বাঁশজুড়ে দিতে হবে। হাতে কামড়ের ক্ষেত্রে হাত ব্যান্ডেজ করে তা কাঁধের সঙ্গে গুলতির মতো করে ঝুলিয়ে যুক্ত করে দেওয়া যায়।

৪। আক্রান্ত ব্যক্তির এ অবস্থায় কোনোভাবেই দ্রুত হাঁটা বা দৌড়ানো ঠিক নয়

৫। ক্ষতস্থানসহ দেহের অন্যত্রে কোনো রকম কাটাছেঁড়া বা আঁচড় দেওয়া যাবে না

৬। ক্ষত স্থানে মুখ দিয়ে রক্ত টানার চেষ্টা করা একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা। এটি কুসংস্কার ছাড়া আর কিছুই নয়

৭। কামড়ানো জায়গায় বরফ লাগানো যাবে না

৮।আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যথা উপশমের জন্য অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন বা নেপ্রোক্সেন সোডিয়ামের মতো কোনো ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া যাবে না। এতে ব্যক্তির রক্তপাতের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

সর্বোপরি বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার থেকে নিরাপদে থাকার সর্বোত্তম উপায় অগ্রীম সতর্কতা অবলম্বন করা। বিপজ্জনক অঞ্চলগুলোর ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা বুট এবং রাতের বেলা টর্চ লাইট ব্যবহার করা উচিৎ। সাপ শনাক্তকরণের ব্যাপারে এগুলোর দৈহিক বৈশিষ্ট্য যতটা সম্ভব সুক্ষ্ম ভাবে জেনে রাখা ভালো।

আর সাপের কামড়ের পর অ্যান্টি-ভেনম দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। উপরন্তু, তাৎক্ষণিক চিকিৎসার সময় প্রচলিত কুসংস্কার এড়াতে আগে থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান থাকা অতীব জরুরি।

সূত্র: ইউএনবি

রূপগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়ি ঘিরে রেখেছে এটিইউ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নারায়ণগঞ্জ
জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়ি ঘেরাও, ছবি: সংগৃহীত

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়ি ঘেরাও, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে রূপগঞ্জের বরপা এলাকার ওই বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। এটিইউ’র পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মাহফুজুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, রূপগঞ্জের বরপা এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে চারতলা একটি বাড়ি ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। একটু পরে সেখানে অভিযান শুরু হবে। এখনও বোঝা যাচ্ছে না ভেতরে কতজন আছেন। পরে এবিষয়ে গণমাধ্যমে জানানো হবে।

;

পেনশনের টাকায় মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
পেনশনের টাকায় মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ, ছবি: বার্তা২৪.কম

পেনশনের টাকায় মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা গিয়াস উদ্দিন। বয়স ৭০। পেনশনের ২৫ লাখ টাকাসহ নিজের প্রায় সর্বস্ব ব্যয় করে গড়ে তুলেছেন একটি মসজিদ। এমন উদ্যোগে স্থানীয়দের প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বেড়াখলা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। নিজের ১০ শতাংশ জমিতে বাইতুন নূর জামে মসজিদের পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা। সেখানে পড়ছেন ২৫ জন শিক্ষার্থী। তাদের বিনা বেতনে পড়াচ্ছেন।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন পার্শ্ববর্তী দেবিদ্বার উপজেলার ওয়াহেদপুর আলিম মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন তিনি। মাওলানা গিয়াস উদ্দিন শান্ত প্রকৃতির মানুষ। সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের সেবা করেন। পেনশনের টাকা ও নিজের সম্পদ দিয়ে তিনি মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণ করছেন। এতে গর্ববোধ করেন তারা।


মাওলানা গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমার কোনো ছেলে-মেয়ে নেই। আমি মারা যাওয়ার পর দোয়া করার মতোও কেউ নাই। তাই এই মসজিদ-মাদ্রাসার উসিলায় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করছি। এই চিন্তা থেকে পেনশনের সব টাকা দিয়ে মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করি। পাশাপাশি আমার স্ত্রী নিজ থেকে তার জমানো ৩ লাখ টাকা আমার হাতে তুলে দিয়েছেন।

সবার সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, আমার জীবনের শেষ ইচ্ছা এই মসজিদ নির্মাণ করা। কোনো কিছু না ভেবে কাজ শুরু করেছি। কাজের কিছু অংশ আটকে আছে, ঋণ করতে হয়েছে। তাই সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করি।

জানা যায়, চাকরি শেষ হওয়ার পর ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পেনশনের ২৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা পান তিনি। তা দিয়ে পরিবার ও নিজের ১০ শতাংশ জমিতে এই মসজিদ ও মাদ্রাসার নির্মাণ কাজ শুরু করেন। মসজিদ নির্মাণে এখন পর্যন্ত ধার করেছেন ৫ লাখ টাকা।

;

সুনামগঞ্জে সুরমা নদীতে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিখোঁজ ৩



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, সুনামগঞ্জ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজারের আজমপুর এলাকায় সুরমা নদী পার হতে গিয়ে নৌকা ডুবে শিশুসহ তিন জন নিখোঁজ হয়েছেন। এরা তিনজনই আজমপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে ডিঙ্গি নৌকা করে সুরমা নদী পার হওয়ার সময় স্রোতের কবলে পড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নৌকা ডোবার পর মাঝি সাতরে পারে চলে আসতে পারলেও দুই মহিলা ও এক শিশু ডুবে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেহের নিগার তনু।

বিস্তারিত আসছে...

;

সাজেকে আটকা পড়েছে ৭০০ পর্যটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মেঘের রাজ্য খ্যাত সাজেক ভ্যালিতে ভ্রমণে গিয়ে ৭০০ পর্যটক আটকা পড়েছে। এতে আতঙ্ক বোধ করছেন আটকে পড়া পর্যটকরা ।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে বাঘাইছড়ি-বাঘাইহাট সড়ক উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায়। ফলে সাজেকে ছোটবড় মিলে ১২৫ গাড়ির পর্যটক আটকা পড়ে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাজেক কটেজ মালিক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিজয় ত্রিপুরা। তিনি আরও জানান, সোমবার যেসব গাড়ি এসেছে তাদের সবাই সাজেকে অবস্থান করছে। পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে আজকে গাড়ি চলাচল করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। অন্যদিকে সকালে খাগড়াছড়ি থেকেও কোনো গাড়ি সাজেকে প্রবেশ করতে পারেনি।

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার জানান, বাঘাইছড়িতে টানা ভারীবর্ষণের ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যাতে প্রায় দুই হাজার পরিবার পানি বন্দি। ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হলেও এখনো কেউ আসেনি। আর বাঘাইহাট সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাজেকে ৭ শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছে। পানি না সরা পর্যন্ত কেউ বের হতে পারবে না।

প্রসঙ্গত, প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের কারণে খাগড়াছড়ি সাজেক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

;