ছাগলকাণ্ডের থাবা সাদিক এগ্রোতেও

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছাগলকাণ্ডের থাবা পড়েছে সাদিক এগ্রোতে

ছাগলকাণ্ডের থাবা পড়েছে সাদিক এগ্রোতে

আলোচিত ছাগলকাণ্ডের থাবা পড়েছে সাদিক এগ্রোতেও। রাজধানীর মোহাম্মপুরে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া কথা জানিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বৃহস্পতিবারই এই অভিযান শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে।

সংস্থাটি বলছে, সাদিক অ্যাগ্রো লিমিটেড অবৈধভাবে খাল ও সড়কের জায়গা দখল করে আছে।

বিজ্ঞাপন

অভিযান চালাতে প্রয়োজনীয় পুলিশ ফোর্স মোতায়েন চেয়ে ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে দেওয়া এক চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি জানা গেছে। বুধবার (২৬ জুন) প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহে আলম স্বাক্ষরিত ওই চিঠি ডিএমপিকে দেওয়া হয়।

জানা যায়, সাদিক এগ্রোর কর্ণধার ইমরান হোসেন। সদ্য শেষ হওয়া কোরবানির ঈদে তিনি আলোচনায় আসেন কোটি টাকার বংশীয় গরু ও ১৫ লাখ টাকার খাসি নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মারফতে খবর বের হয় খাসিটি ১২ লাখ টাকায় মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে এক যুবক কিনেছেন। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রেতাকে নিয়ে চলে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা। শেষ মুহূর্তে জানা যায় বুকিং মানি দিলেও খাসিটি নেননি ক্রেতা।

সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক ইমরান হোসেন গবাদিপশুর খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি। আলোচনা আছে, মাঝারি খামারিদের প্রলোভন দেখিয়ে কোরবানির সময় গরুর দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে নানা কৌশল অবলম্বন করে থাকে। ফলে ক্রেতারা গরু কিনতে অনুৎসাহিত হয়ে পড়েন। এতে প্রান্তিক খামারিদের অনেক গরু অবিক্রিত থেকে যায়। পড়ে এই মাঝারি খামারিরা ওই গরু কিনে এনে এক বছর পর বেশি দামে বিক্রি করে।

তবে আলোচনা আছে নিষিদ্ধ ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি করে বিক্রি করতেন বাংলাদেশি কাউবয় নামে খ্যাত ইমরান হোসেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে ব্রাহামা গরুর বীজ এনে অন্যান্য গাভীর সঙ্গে ‘ক্রস’ করানো হয়। তাতে যে গরুর জন্ম হয়, তা ব্রাহামা জাতের ৪০-৫০ শতাংশের কাছাকাছি হয়। তাহলে শতভাগ ব্রাহামা সাদিক এগ্রোর ইমরান কীভাবে পেলেন, আর শতভাগ ব্রাহমা জাতের গরু হলেও তার দাম কি কোটি টাকা হওয়া সম্ভব।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, কোটি টাকা একটি গরুর দাম হতেই পারে। তবে তা কোনোদিনই মাংসের গরুর জন্য হতে পারে না। যদি সেই গরুটি প্রজননের জন্য ব্যবহার করা হয়, তাহলেই শুধু কোটি টাকা হতে পারে দাম।

ক্রেতাদের অভিযোগ, দেশের বাজারে কোরবানির সময় গরুর দাম বৃদ্ধির পেছনে সাদিক এগ্রোর হাত রয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলেন, কি করে একটি মাংসের গরুর দাম কোটি টাকা হয়। তাই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ছিল তাদের।

এদিকে, ছাগলকাণ্ডে সব হারানো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্য সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংবাদমাধ্যমে একের এক মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের সম্পদের খবর বেরিয়ে আসতে থাকলে প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি দেশ ছেড়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার ঘনিষ্ঠ একাধিক কাস্টমস কর্মকর্তা জানান, রোববার (২৩ জুন) বিকেলের দিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মতিউর ভারত পালিয়ে গেছেন।

ইতোমধ্যে মতিউর রহমানের সম্পদ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তিন সদস্যের একটি কমিটিও কাজ শুরু করেছে।

এর মধ্যেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন জানাল সাদিক এগ্রোর অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। তাই মনে করা হচ্ছে ভাইরাল হতে গিয়ে নিজের ফাঁদে আটকে গেল প্রতিষ্ঠানটি।