ছাইদুর রহমান নাঈম
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
বার্তা২৪.কম
কিশোরগঞ্জ
খোলা আকাশের নিচে ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধার বোন
ছাইদুর রহমান নাঈম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কিশোরগঞ্জ
বৃদ্ধা গুলেছা বানু
জাতীয়
বাবাগো আমারে বাঁচাও। আমার ছেলেডাও আমারে রাইখা চইলা গেলোগা। পাঁচদিন ধইরা খাইয়া না খাইয়া খোলা আকাশের নিচে পইরারা রইছি। আমারে তোমরা বাঁচাও। আমার ভাই দেশের জন্য যুদ্ধ করছে। এভাবেই বিলাপ করছিলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধা গুলেছা বানু।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে পাঁচদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছেন তিনি। খাদ্য-বাসস্থান ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে ধুঁকে ধুঁকে সময় কাটছে তার।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেতাল বাজার সংলগ্ন মসূয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দোকানের বারান্দায় শুয়ে আছেন বৃদ্ধা। পাশেই রাখা মুড়ির পুটলা ও পানি। গতরাতে খোলা স্থানে শুয়ে ছিলেন। বৃষ্টি হওয়ার পর বাজারের পাহারাদার দোকানের বারান্দায় রেখে যায়। স্বাভাবিক কথা বলতে পারলেও বয়সের ভারে চলাফেরা করতে পারেন না। মাঝে মধ্যে মানুষের দেওয়া কিছু খাবার খাচ্ছেন। অধিকাংশ সময় না খেয়েই দিন পার করতে হচ্ছে। দেখভাল করার কেউ নেই।
একই ইউনিয়নের বৈরাগিচর গ্রামে তার বাড়ি। বৃদ্ধা গুলেছা বানুর বড় ভাই মৃত ফালু ফকির ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বামী বাতেন ফকির পাঁচ বছর আগে মারা যান। তিনি ছিলেন ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এরপর থেকে একমাত্র ছেলে হোসেন তার দেখাশোনা করতেন।
পরিত্যক্ত এই ভবনে আগে থাকতেন বৃদ্ধা গুলেছা বানু
ভূমিহীন এই দম্পতি স্বামীর সঙ্গে ৩০ বছর ধরে ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তার পরিত্যক্ত ভবনে বসবাস করতেন। স্বামীর মৃত্যুর পরও এখানেই ছিলেন। ছেলে ভবঘুরে হওয়ায় মাকে সহ্য করতেন না। প্রায় সময় অত্যাচার করতেন। গত বৃহস্পতিবার ছেলে মাকে বলে উধাও হয়ে যায়। এতেই বিপাকে পড়েন এই বৃদ্ধা। পরিত্যক্ত ভবনে বৃষ্টির পানি জমায় সেখানেও থাকতে পারছেন না। বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে কাটছে দিন।
বৃদ্ধা গুলেছা বানু বলেন, একমাত্র ছেলে হোসেন প্রায় সময় আমাকে অত্যাচার করতো। আমি কেন মারা যাচ্ছি না বলতো। ঈদেও একটু ভালো খাবার দেয়নি। আমার সাথে আর নেই বলে পাঁচদিন আগে ফেলে চলে গেলো। এখন আমি কোথায় থাকবো, কী খাবো জানি না। আমি মরলে লাশ যেন এই ছেলে না ধরে।
মসূয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু বাক্কার বলেন, আমি নিজেও অসুস্থ। খোঁজ নিতে পারিনি। কী করা যায় দেখবো। ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাবো বিষয়টি।
সার্বিক বিষয়ে কথা হলে কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ওয়াহিদুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আপনার থেকেই জানলাম বিষয়টি। আমি নিজে গিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় কী করা যায় তাই করবো।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রাইফেলসহ আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেফতার
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী, ছবি: সংগৃহীত
জাতীয়
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার শীর্ষ কমান্ডারসহ ২ সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এসময় বিদেশি রাইফেল ও দেশীয় অস্ত্র-গুলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (৩ জুলাই) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন দাবি করেন, ক্যাম্পে সংঘটিত বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরসার কিলিং গ্রুপ কমান্ডার ও ক্যাম্প-১৭ এর জোন কমান্ডার হাফেজ কামাল। সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের গোয়েন্দা শাখা ও রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে হাফেজ কামালকে ধরতে অভিযান চালানো হয়।
পালংখালীর রোহিঙ্গা বাজার থেকে হাফেজ কামালের সহযোগী মোহাম্মদ সাইফুলকে গ্রেফতার করা। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে উখিয়ার ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুনরায় অভিযান পরিচালনা করে হাফেজ কামালকে তার দেহরক্ষী আনসার উল্লাহসহ গ্রেফতার করা হয় বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, একের পর এক আরসার শীর্ষ কমান্ডারদের গ্রেফতার করলেও শক্তিশালী সশস্ত্র সংগঠন হওয়ায় পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বলে দাবি র্যাবের।
র্যাব জানায়, র্যাব বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসী বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে এ পর্যন্ত আরসার কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডারসহ ১১৮ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রায় ৫৪ কেজি বিস্ফোরক, ৫টি গ্রেনেড, ৩টি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশীয় তৈরি হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৭টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১৮৩ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ, ৬৭ রাউন্ড খালি খোসা, ৪টি হাত বোমা, ৪টি আইডি ও ৪৮টি ককটেল রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে উদ্ধার করে র্যাব।
ছবি: বার্তা২৪, ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে নেমে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পিবিআই
জাতীয়
৮ মাসের চেষ্টার পর ক্লুলেস একটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। জানা গেছে, মাদক ও অনলাইনে জুয়ার টাকা জোগাড় করতে পরিকল্পনা করা হয় ছিনতাইয়ের। এরপর ছিনতাইয়ে বাধার মুখোমুখি হতে হবে না এমন একজনকে নির্বাচন করে আসামিরা।
তারপর বন্ধুরা মিলে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে নির্দিষ্ট সময়ে নির্জন স্থানে ডেকে নেওয়া হয় ভিকটিমকে। বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে হত্যার উপযুক্ত স্থান খুঁজে হত্যা করা হয় ১৮ বছর বয়েসি তরুণ রবিউল ইসলামকে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় তার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাটি।
এ ঘটনায় হত্যায় সরাসরি জড়িত ৩ জন আসামির ২ জনকে এবং বিক্রি চক্র ও রং পরিবর্তন চক্রের ৫ জনসহ মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)।এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ১ জন এখনো পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।
বুধবার (৩ জুলা্ই) রাজধানীর ধানমণ্ডির পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সে আয়োজিত ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নরসিংদী জেলার পিবিআই পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মো.এনায়েত হোসেন মান্নান।
গ্রেফতাররা হলেন, নাহিদ শেখ (২২), মো. হুমায়ুন (৪০), মো. লিটন খান (৪৫), জুবায়ের হাসান অমি (১৯), শাজিদুল ইসলাম হাসিব (১৯), রাকিবুল (২০) ও জুয়েল (২০)।
ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে মো.এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর সকালে জানা যায় যে, নরসিংদী জেলার শিবপুর থানা এলাকার সাতপাইকা পাকা রাস্তার পাশে ধানক্ষেতে অজ্ঞাতপরিচয় এক কিশোরের গলাকাটা মরদেহ পড়ে রয়েছে।
খবর পেয়ে নরসিংদী জেলার পিবিআই ও ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ভিকটিমের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে ভিকটিম রবিউল ইসলামের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। গুরুত্ব বিবেচনায় মামলাটি নরসিংদীর পিবিআই গ্রহণ করে। তদন্তকালে ঘটনার সম্ভাব্য কারণ, ঘটনার প্রকৃতি এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সম্ভাব্য আসামিদের শনাক্ত করার বিষয়ে নানান তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়।
ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে নেমে পিবিআই জানতে পারে যে, নেশার টাকার জোগাড় করতে এই অটোরিকশাটি ছিনতাই করা হয়, ছবি- বার্তা২৪.কম
জানা যায় যে, ভিকটিম একজন অটোরিকশা চালক। আসামিরা নেশার টাকা জোগাড় করতে ভিকটিম রবিউল ইসলামকে হত্যা করে তার ভাড়া করা অটোরিকশাটি নিয়ে যায়। ভিকটিম কোনো মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন না। ঘটনাস্থল থেকে সম্ভাব্য যেসব দিকে ছিনতাই করা অটোরিকশাটি নিয়ে যেতে পারে, অনুমান করে সম্ভাব্য ও সন্দেহজনক কিছু অটো গ্যারেজের প্রতি নজরদারি বাড়ানো হয়।
ঘটনার কোনো ক্লু না থাকায় শিবপুর অঞ্চলে যাদের চোরাই অটো বাইক/গাড়ি কেনাবেচার দুর্নাম রয়েছে, তাদের যাচাই করার পর সন্দেহভাজন আসামি রাকিবুলকে (২০) গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে রাকিবুল ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অটোরিকশাটি নাহিদের মাধ্যমে বিক্রিতে সহায়তা করেছে বলে জানা যায়। কিন্তু হত্যার বিষয়ে কোনো কথা স্বীকার করেনি সে। রাকিবুলের দেওয়া তথ্যমতে, মো. নাহিদ শেখকে (২২) গ্রেফতার করা হয়।
নাহিদ অটোরিকশাটি বিক্রির কথা স্বীকার করে এবং যে গ্যারেজে বেচাকেনা হয়েছে, তা দূর থেকে শনাক্ত করে দেয়।
এরপর শিবপুর কলেজ গেট এলাকায় এধরনের একটি অটোরিকশা দেখেছে বলে সোর্স জানালে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ওই সব এলাকার একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে অটোচালককে শনাক্ত করে মো. হুমায়ুনকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়।
তার দেওয়া তথ্যমতে, হত্যাকাণ্ডের পরে ছিনতাই করা অটোরিকশাটি গ্যারেজ মালিক আসামি মো. লিটন খাঁনের (৪৫) গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করা হয়।
ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের বর্ণনা দিচ্ছেন পিবিআই কর্মকর্তারা, ছবি- বার্তা২৪.কম
পুলিশ সুপার মো.এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, জানা যায়, অটোরিকশাটি যাতে কেউ চিনতে না পারেন, সে কারণে এর রং ও কিছু পার্টস পরিবর্তন করা হয় এবং তা গ্যারেজ মালিক মো. লিটন খাঁনের কাছে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়
পরে আসামি নাহিদকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এসময় যারা নাহিদের কাছে ছিনতাই করা অটোরিকশাটি নিয়ে এসেছিল তাদের নাম জানা যায়।
তিনি বলেন, হত্যার পর আসামিরা গা ঢাকা দেয়। মামলার ঘটনার তদন্তে তদন্তকারী একাধিক টিম নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ভৈরব, কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
তিনি আরো বলেন, হত্যাকারী ২ জনসহ অটোরিকশা কেনাবেচা, রং ও মডেল পরিবর্তন ও সংরক্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মোট ৫ জন আসাম নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
তাদের দেওয়া তথ্যমতে জানা যায় যে, ভিকটিম রবিউল হত্যাকাণ্ড ও অটোরিকশা ছিনতাইয়ে প্রত্যেক্ষভাবে জড়িত অমি, নিহাল, হাসিব একই সঙ্গে চলাফেরা করতো। তারা নিয়মিত মাদক সেবন করা ছাড়াও অনলাইনে জুয়া খেলতো। একপর্যায়ে আসামিরা মাদক ও জুয়ার টাকা সংগ্রহের জন্য অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। তারা সহজ-সরল অটোচালক ভিকটিম রবিউল ইসলামকে চিনতো এবং তাকে হত্যা করে অটোরিকশাটি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে।
ঘটনার দিন ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর দুপুর ২টার দিকে আসামি অমি, নিহাল, হাসিব শিবপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ভিকটিম রবিউল ইসলামকে পেয়ে তার অটোরিকশা নিয়ে বিকেল ৪টার দিকে শাজিদুল ইসলাম হাসিবের বাড়ির সামনে থাকতে বলে।
অমি ও নিহাল বিকেল ৪টার আগেই হাসিবের বাড়ির সামনে উপস্থিত হয়। রবিউল ইসলাম বিকেল ৪টার দিকে হাসিবের বাড়ির সামনে এলে অমি, নিহাল, হাসিব ভিকটিম রবিউল ইসলামের অটোরিকশা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে এবং বিভিন্ন জায়গায় আড্ডা দেয়।
একপর্যায়ে শিবপুর থানার সাতপাইকার ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১০ থেকে ১৫ মিনিট আড্ডা দেয়। আড্ডা শেষে বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হওয়ার কথা বলে আসামিদের দুইজন পেছনে এবং একজন সামনের আসনে চালক রবিউল ইসলামের পাশে বসে।
পরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, গোপনে নিয়ে আসা চাপাতি বের করে এবং আসামি হাসিব ও নেহাল ভিকটিম রবিউলের হাত পা জাপটে ধরে রাখে। এ সময় অমি চাপাতি দিয়ে বেপরোয়াভাবে গলায় কোপাতে থাকে। ঘটনাস্থলেই রবিউলের মৃত্যু নিশ্চিত করে মৃতদেহটি ধাক্কা দিয়ে রাস্তার পাশে থাকা ধানক্ষেতে ফেলে দিয়ে অটোরিকশাটি নিয়ে চলে যায়।
পরবর্তীতে রাকিব, নাহিদ, জুয়েল ও হুমায়ুন অটোরিকশাটির রং ও মডেল পরিবর্তন করে লিটন মিয়ার কাছে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়।
মো.এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, আসামি অমির স্বীকারোক্তি মতে নাহিদের চাচাতো ভাই বিশালের বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতিটি উদ্ধার করা হয়েছে। পলাতক আসামি নেহালকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
অটোরিকশা ছিনতাই প্রতিরোধে পরামর্শ পিবিআইয়ের
ভয়ঙ্কর নেশা থেকে জুয়া, ছিনতাই, হত্যা প্রতিরোধে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানান পুলিশ সুপার মো.এনায়েত হোসেন মান্নান। মো.এনায়েত হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে অটোরিকশা ছিনতাই করে চালককে হত্যা করার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এজন্য তিনি বেশ কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলি হচ্ছে-
ছিনতাই ও হত্যা প্রতিরোধে- ১. প্রতিটি অটোরিকশার ৩ দিকে গ্রিলের তৈরি গেট নির্মাণ করতে হবে। ২. চালকের পাশে কোনো ধরনের যাত্রী তোলা যাবে না। ৩. প্রয়োজনে গাড়িতে জিপিএস ট্রাকার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং ৪. এই সমস্ত গাড়িগুলি রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনতে হবে।
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে নূর মোহাম্মদ (৩১) নামের এক রোহিঙ্গা যুবককে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে।
বুধবার (৩ জুলাই) ভোরে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশন ডি ব্লকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নূর মোহাম্মদ উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ক্যাম্প ৪ এক্সটেনশন ডি-৪ ব্লকের বাসিন্দা অলি আহমেদের ছেলে।
জানা যায়, আজ ভোরে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশনের ডি ব্লকের বাসিন্দা নূর মোহাম্মদকে একদল সন্ত্রাসীরা ধরে নিয়ে গিয়ে জবাই করে হত্যা করে। হত্যার পর পার্শ্ববর্তী একটি পাহাড়ে মরদেহ রেখে যান তারা।
ক্যাম্প প্রশাসনের সহযোগিতায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন।
তিনি বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ক্যাম্পে পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লী ইউনিয়নে এক রাতে দুই খামারির সাতটি গরু চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা দুই সাব ইন্সপেক্টর ও দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে।
বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে কামরুল হাসান বলেন, সাটুরিয়া থানার সাব ইন্সপেক্টর আল আমিন, কনস্টেবল দোলন ও কনস্টেবল হালিম ২৬ জুন রাতে তিল্লী ইউনিয়নে ডিউটিতে ছিলো। আর ওই ইউনিয়নের বিট পুলিশিং অফিসার হচ্ছেন সাব ইন্সপেক্টর জালাল উদ্দীন।
ওই রাতে তিল্লী এলাকার দুই খামারির সাতটি গরু চুরি হয়। এতে তাদের ডিউটি পালনে কোন গাফলতি ছিলো কিনা তাদের নিকট জানতে চাওয়া হয়েছে। যে কারণে তাদেরকে থানা থেকে ক্লোজড করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।