পানির তোড়ে ভেঙে পড়ল সড়ক, দুর্ভোগে ২ জেলার বাসিন্দা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
পানির তোড়ে ভেঙে পড়ল সড়ক

পানির তোড়ে ভেঙে পড়ল সড়ক

  • Font increase
  • Font Decrease

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণ আর পানির তোড়ে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের সঙ্গে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে দুই জেলার বাসিন্দারা।

বন্যার পানির স্রোতে বুধবার (৩ জুলাই) রাত ৮টার দিকে দেওয়ানগঞ্জের কাঠারবিল বাজার এলাকায় নির্মাণাধীন মহারাণী ব্রিজের এপ্রোচ (বিকল্প সড়ক) সড়ক ভেঙে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের সঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর ও রৌমারী উপজেলার যোগাযোগের প্রধান সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন পার্শ্ববর্তী রাজিবপুর উপজেলার ছাড়াও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার উত্তরে ৪টি ইউনিয়নের মানুষ যাতায়াত করে থাকে। এছাড়াও সড়কটিতে যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, মিনিবাস, পিকআপ, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ শত শত ছোট বড় যানবাহন চলাচল করে।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেলে গিয়ে দেখা গেছে, ব্যস্ততম সড়কটি ভাঙনের ফলে রাজিবপুর-দেওয়ানগঞ্জ-জামালপুরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে ২ জেলার বাসিন্দা

স্থানীয় ব্যবসায়ী লালন মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় আমাদের খুবই কষ্ট হচ্ছে। দোকানের জন্য দুই লাখ টাকার মাল (পণ্য) অর্ডার ছিলো সেটা ফেরত নিয়ে গেছে। এতে ডিলারের গাড়িভাড়া ও আমার লোকসান হয়েছে।

হাতিভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থেকে সানন্দবাড়ী-রাজিবপুর সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিজের বিকল্প রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় উপজেলার ডাংধরা, চর আমখাওয়া, পাররামরামপুর, হাতিভাঙা ইউনিয়নসহ রাজিবপুরবাসী চলাচলে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী তোফায়েল আহাম্মেদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজধানী জুড়ে যানজট থাকবে: ডিএমপি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যানজট সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।

রোববার (৭ জুলাই) সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ এ তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান।

এস এম মেহেদী হাসান বলেন, 'ট্রাফিক মুভমেন্টের আগাম বার্তা আমরা বিভিন্ন সময় দেওয়ার চেষ্টা করি। ঢাকা মহানগরীতে বিভিন্ন প্রোগ্রামকে কেন্দ্র করে ট্রাফিকের অবস্থা কিন্তু উঠানামা করে। এছাড়া সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে ট্রাফিকের অবস্থা উঠানামা করে। রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্ম দিবস। রোববারে অন্যান্য দিনের তুলনায় ট্রাফিক মুভমেন্ট বেশি থাকে। সনাতন ধর্মালম্বীদের একটি প্রোগ্রাম আছে সেটি হল পবিত্র রথযাত্রা। এটি স্বামীবাগ ইসকন মন্দির থেকে শুরু হয়ে লালবাগে গিয়ে শেষ হবে। রথযাত্রা কে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মালম্বীরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে পুরান ঢাকায় যাতায়াত করবেন।'

'আরেকটি বিষয় হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে শিক্ষার্থীদের একটি মুভমেন্ট চলছে। এসব মিলিয়ে বিকেল থেকে পুরান ঢাকা, রমনা, মতিঝিল, শাহবাগ, ধানমন্ডি, গুলিস্তান, লালবাগ ও ওয়ারী এলাকার বিভিন্ন স্থানে অন্যান্য দিনের তুলনায় যানজট বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আজ যারা এসব এলাকায় যাতায়াত করবেন তাদের অনুরোধ জানাবো তারা যেন হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বের হন।'

কোটাবিরোধী আন্দোলন চলমান রয়েছে, এমতাবস্থায় ট্রাফিক পরিকল্পনা কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা ট্রাফিক মুভমেন্ট এর উপরে কাজ করি। সড়কে যেন জনসাধারণের দুর্ভোগ কম হয় সেজন্য আমরা কাজ করি। বেশ কিছুদিন ধরে কোটা বিরোধী আন্দোলন চলমান রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে বিকেলের দিকে শাহবাগ মোড় বন্ধ থাকে। তারপরেও আমরা আমাদের সীমিত জনবল দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি সাধারণ মানুষের যাতায়াত যেন সহজ হয়।'

কিছু কিছু এলাকায় স্থায়ী যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এর প্রতিকার কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'স্থায়ী যানজট নিরসনেও আমরা বেশ কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। দুই মাস আগে মহাখালী বাস টার্মিনালের চিত্র আর এখন এর চিত্র কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে আমরা মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার কিংবা বাস আমরা এই ধরনের ক্লাসিফিকেশন করি না। যারা আইন ভঙ্গ করে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইন প্রয়োগ করে থাকি। তবে শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ করে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব না। আমরা আইন প্রয়োগ করি কতজন মানুষ আনুমানিক ৩০০০ জন। এই তিন হাজার জন আইন প্রয়োগ করছে দুই কোটি মানুষের উপর। এই দুই কোটি সড়ক ব্যবহারকারীর একটা সচেতনতার বিষয় আছে। তারা সচেতন থাকলে আমাদের কার্যক্রম সহজ হয়।'

;

১০-১৩ জুলাই ঢাকায় শুরু হচ্ছে থাই বাণিজ্য মেলা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ঢাকায় শুরু হচ্ছে থাই বাণিজ্য মেলা, ছবি: বার্তা২৪.কম

ঢাকায় শুরু হচ্ছে থাই বাণিজ্য মেলা, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত হবে টপ থাই ব্র্যান্ডস ২০২৪ বাণিজ্য মেলা।

রোববার (৭ জুলাই) সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশে নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদে সুমিতমোর বলেন, এই মেলায় ৬৪টি থাই প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশে থাই পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে।

থাইল্যান্ড সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড প্রমোশন (ডিআইটিপি) এর উদ্যোগে এ মেলায় আয়োজন করা হচ্ছে।

থাইল্যান্ড ট্রেড ফেয়ার উভয় দেশের জন্যই একটি ফলপ্রসূ উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশ থেকে অনেকেই এই মেলার মাধ্যমে থাইল্যান্ড থেকে তাদের ব্যবসা খুঁজে নিতে সমর্থ হন।

আগামী ১০-১৩ জুলাই ঢাকাস্থ প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রতিদিন সকাল ১০ টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে।

মেলায় খাদ্যপণ্য, জুয়েলারি, স্বাস্থ্যসেবা, প্রসাধনী, বেডিং, স্পা, ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতি, টেক্সটাইল, অন্তর্বাস, স্টেশনারি, গৃহস্থালি পণ্যসহ নানা ধরনের বিশ্বমানের থাই পণ্য প্রদর্শিত হবে।

থাই সংস্কৃতির সাথে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিতে মেলায় থাকবে থাই নৃত্য এবং ব্যবসায়িক মিটিং। আরও থাকছে র‍্যাফেল ড্র তে ঢাকা ব্যাংকক ঢাকা বিমান টিকেট জেতার সুযোগ।

১০ জুলাই বেলা আড়াইটায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে মেলার শুভ উদ্বোধন করবেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, থাই ট্রেড সেন্টার এর মিনিস্টার কাউন্সিলর খেমাতাত আরচাওয়াথাম্রং ও সোনারগাঁও হোটেলের কর্মকর্তাবৃন্দ।

;

ভাড়া দিতে না পারায় অসহায় দম্পতির আশ্রয় শশ্মানঘাটে!



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর
ভিটেমাটিহীন সিরাজুল ইসলাম চা বিক্রি করে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করছেন।  ছবি: বার্তা ২৪

ভিটেমাটিহীন সিরাজুল ইসলাম চা বিক্রি করে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সময়মত ঘর ভাড়া দিতে না পারায় বাড়ি থেকে বের করে দেয়ায় অবশেষে শশ্মানঘাটে আশ্রয় নিয়েছেন এক দম্পতি। মেহেরপুর সদর উপজেলার জুগিন্দা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী গাংনীর ছেউটিয়া নদীর পাশে শশ্মানঘাটে তালের পাতা আর পাটকাঠি দিয়ে ঘর তৈরি করে বসত করছেন। তবে চলমান প্রক্রিয়ায় এ দম্পতিকে ঘর দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। 

জানা গেছে, সিরাজুল ইসলামের ভিটেমাটি বা অন্য কোন সহায় সম্পদ নেই। কখনও ভাঙ্গারির ব্যবসা আবার কখনও ফেরি করে মালামাল বিক্রি জীবিকা নির্বাহ করেন। বসত করতেন গ্রামের একজনের ভাড়া বাড়িতে। ফেরি করে যা আয় করতেন তা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি ঘর ভাড়া দেওয়া ছিল বেশ কষ্টসাধ্য। সময়মত পরিশোধ করতে পারতেন না ভাড়ার টাকা। ভাড়া পরিশোধ না করায় চলতি মাসে তাদেরকে নামিয়ে দেয় বাড়ি থেকে। কোথাও কোন আশ্রয় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত শশ্মানঘাটের পাশে আশ্রয় নেয় এই অসহায় এ দম্পতি।

এই ঝুপড়ি ঘরেই দিন পার করছেন অসহায় দম্পতি। ছবি: বার্তা ২৪

আশেপাশের মানুষের কাছ থেকে বাঁশ, তালের পাতা, পাটকাঠি চেয়ে নিয়ে তৈরি করেন ঝুপড়ি ঘর। সেখানে বসবাস করছেন তারা। স্থানীয়দের সহায়তায় চায়ের দোকান দিয়ে কোনমতে দুবেলা মুঠো ভাতের জোগাড়ে যুদ্ধ করছেন এই অসহায় দম্পতি।

সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি ভূমিহীন সেই সাথে শারিরীক প্রতিবন্ধী। তারপরও জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন স্থান থেকে বোতল কুড়িয়ে ও ভাঙ্গারির ব্যবসা করে কোনমতে দুমুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতেন। স্ত্রীকে নিয়ে বসবাসের জন্য গ্রামের একজনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। বাড়ি ভাড়া পরিশোধ না করায় তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। তাই বসবাসের জন্য সরকারি শশ্মানঘাট বেছে নিয়েছেন তিনি।

আশেপাশের লোকজন সিরাজুল দম্পতিকে আপন করে নিয়েছেন। অর্থনৈতিক বিপ্লবের এই যুগে মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে নানাভাবে। এর মধ্যেও সিরাজুল ইসলামের মত অসহায় দম্পতি এখনও রয়েছেন। সরকারি কিংবা ব্যক্তি পর্যায়ের সহযোগিতাই পারে এসব পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে। তাই শশ্মানঘাটের পাশের এই সরকারি জায়গায় সিরাজুল দম্পত্তির জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়ার আবেদন স্থানীয়দের।

পর্যায়ক্রমে সব ভূমিহীন পরিবারই পাবে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গাসহ পাকাবাড়ি। আবেদন করে থাকলে চলমান প্রকল্পের মাধ্যমেও সিরাজুল ইসলামকে ঘর দেওয়া হবে বলে জানালেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান।

;

ভয়ংকর ভাড়াটিয়া, বাসা ছাড়তে বলায় ধর্ষণ মামলায় কারাগারে বাড়ির মালিক



আল-আমিন রাজু ও রাকিব হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
গ্রাফিক্স, বার্তা২৪.কম

গ্রাফিক্স, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ইট পাথরের রাজধানীতে জীবিকার প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সাময়িক বসতি গড়েন কর্মজীবীরা। অস্থায়ী বসবাসে সবারই ভরসা ভাড়া বাসা। সাধারণত বাড়ির মালিকদের বিভিন্ন অজুহাতে ভাড়া বৃদ্ধিসহ নানা অনিয়মের জালে আটকে যান ভাড়াটিয়ারা। তবু কর্মের কারণে মুখ বুজে সহ্য করে যান তারা। কিন্তু এবার উল্টো ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার থানার পোস্তা এলাকায়। কয়েক মাস ধরে ভাড়া না পেয়ে বাসা ছেড়ে দিতে বলায় ধর্ষণ মামলা ঠুকে দিলেন ভাড়াটিয়া। সেই মামলায় গ্রেফতার হয়ে দুই মাস ধরে জেল খাটছেন ভবন মালিক।

ভুক্তভোগী ভবন মালিকের নাম মোস্তফা নাজমুল হাসান সজিব। তিনি পুরান ঢাকার চকবাজার থানার পোস্তা এলাকার ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের আ. সালামের ছেলে।

ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চকবাজার থানার পোস্তার ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের ৭৬/২ নম্বর বাড়ির মালিক মোস্তফা নাজমুল হাসান সজিব। সাত তলা ভবনের ছয় তলার একটি ফ্ল্যাটে ১২ হাজার টাকা ভাড়ায় বসবাসের চুক্তি করেন জান্নাতুল ফেরদৌস এ্যানি নামের এক নারী। দুই বছর বসবাসের পর ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি বাড়ির মালিকের সঙ্গে ১২ হাজার টাকা ভাড়ার নতুন একটি চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন। নতুন চুক্তির পর প্রতি মাসে ১১ হাজার ২০০ টাকা করে প্রথম সাত মাস ভাড়া পরিশোধ করেন। পরবর্তী সাত মাস কখনো ১০ হাজার আবার কখনো ১১ হাজার করে অনিয়মিত ভাবে ভাড়া পরিশোধ করেন। কিন্তু চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন।

ভাড়া না পেয়ে একাধিকবার বাড়ির মালিক মোস্তফা নাজমুল হাসান সজিব ভাড়া পরিশোধ ও বাসা ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দেন। পাওনা টাকা পরিশোধ করে বাসা ছাড়ার জন্য ২ মাস সময় চান ভাড়াটিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস এ্যানি। এই সময় পেরিয়ে গেলে বাসা না ছেড়ে উল্টো বাড়ির মালিককে নানাভাবে হুমকি দিতে থাকেন। যার সর্বশেষ শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলার করে বসেন এ্যানি। যদিও এখন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আপস করতে নিজেই ভুক্তভোগীদের চাপ প্রয়োগ করে চলছেন মামলার বাদী।

ছেলেকে নির্দোষ দাবি করে ভবন মালিক সজিবের মা আসগড়ি বেগম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ভাড়াটিয়া কয়েক মাস ধরে ভাড়া দেয় না। চুক্তি অনুযায়ী আমরা তাকে বাসা ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দিয়েছি। এখন সে উল্টো আমার ছেলের নামে মিথ্যা শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা করেছে। এমনকি এই ধর্ষণ মামলায় আমার ছেলের দুই বউ ও বাসার নিরাপত্তাকর্মীকেও আসামি করেছে। এই মামলা কীভাবে পুলিশ নিলো, তারা কি কিছুই বোঝে না?

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে পেশায় ব্যবসায়ী। তার দুই স্ত্রী। তারা এক সঙ্গে একই বাসায় আমার কাছে থাকে। দুই বউকে নিয়ে আমরা অত্যন্ত সুখী পরিবার। আসল সমস্যা হলো আমার ছেলের কোনো সন্তান নেই। সে (বাদী) ভেবেছে ওই ভবন দখল করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হাতিয়ে নেবে। কিন্তু সে তো জানে না, এই ভবনের আসল মালিক আমার ছেলে না। ভবনের মালিকানা আমার দুই ছেলে বউ ও আমার। আপসের নামে ২০ লাখ টাকা দাবি করছে। আমার বাসা এসেও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমার ছেলেকে বাঁচান, আমার ছেলেটা অসুস্থ।

গত ৫ জুলাই বিকেলে নিজ বাসায় কথা হয় জেলে থাকা সজিবের দুই স্ত্রী সাদিয়া আফরিন মুক্তা ও শায়লার সঙ্গে। তারা বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমার স্বামীকে ফাঁসিয়ে বাড়ি দখলের পায়তারা করছে। বাড়ি শাশুড়ি ও আমাদের দুজনের নামে। এটা জানার পরে প্রতিদিন নানা ধরনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এমনকি ওই মহিলা কারাগারে গিয়েও আমার স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে।

মামলা ও হুমকির বিষয়ে জানতে চকবাজার থানার পোস্তা এলাকায় ওয়াটার রোডের সজিবের ভবনের ভাড়াটিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস এ্যানির বাসায় যান এই প্রতিবেদক। সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে দরজা বন্ধ করে বাসার ভেতরে অবস্থান নেন এ্যানি। তার মেজো ছেলে সানাফ দরজার ভেতর থেকে জানান, তার মা বলেছে গেট খোলা যাবে না। তার মা কথা বলতে রাজি না। পরবর্তীতে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে এ্যানির দুটি মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি মিথ্যা মামলা ও ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের বিষয়ে জানতে চাইলে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহিদুজ্জামান বলেন, মামলার তদন্ত চলমান। সত্য না মিথ্যা সেটি তদন্তে প্রমাণ হবে। মামলাটি এখন আমরা তদন্ত করছি না। এটি ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টার তদন্ত করছে। আর ভাড়াটিয়া আমরা নামাতে পারি না।

মামলা তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোদেজা খানম বার্তা২৪.কমকে বলেন, মামলার তদন্ত চলমান, এখন কিছু বলতে চাচ্ছি না।

মামলায় বাদীর অভিযোগের সত্যতার বিষয়ে জানতে চাইলে, আমরা আলামত সংগ্রহ করেছি। ফরেনসিক করতে দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পাইনি। আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি।

;