সিলেটে কুশিয়ারা আতঙ্ক!



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
সিলেটে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

সিলেটে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ৬ পয়েন্টের পানি এখনও বিপৎসীমার ওপরে। তবে আতঙ্ক বাড়ছে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী উপজেলা বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বালাগঞ্জে।

কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ (ডাইক) ভেঙে পানি প্রবেশ করছে এসব উপজেলায়। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন ওই উপজেলার মানুষ।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ৮টা পর থেকে বৃষ্টি হয়নি। তবে দুপুরের দিকে আকাশে কখনো রোদ কখনো মেঘে ঢাকা পড়েছে। বিকাল ৫টার দিকে সিলেটে বেশ কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত দুই দিন ধরে সিলেটে বৃষ্টিপাত কম হওয়াতে অনেক এলাকা থেকে পানি কিছুটা নেমে গেছে। কিন্তু কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভাঙছে বাঁধ।

জানা যায়, জকিগঞ্জ উপজেলার অন্তত ৪-৫টি স্থানে কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ (ডাইক) ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ৭৩টি গ্রাম। প্লাবিত হয়েছে কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রও। সিলেট-বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কসহ বিয়ানীবাজার -চন্দরপুর বৃষ্টির পানি আর ঢলে কুশিয়ারা নদীর ডাইক অতিক্রম করে পানি ডুকছে লোকালয়ে। কুশিয়ারা নদীর পানিতে বালাগঞ্জ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে প্লাবিত। ৬টি ইউনিয়ের বন্যাক্রান্ত মানুষের জন্য খোলা হয়েছে ৪৯টি আশ্রয় কেন্দ্র। বালাগঞ্জের প্রধান সড়কে হাঁটুর উপরে পানি। উপজেলা পরিষদ, বালাগঞ্জ থানা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নদীর পানি প্রবেশ করেছে। গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন ও এলজিইডি সড়ক ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাজারসহ নিচু এলাকাগুলোতে ইতোমধ্যেই পানি ঢুকে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ৬টি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৭১ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া কুশিয়ারার পানি আমলশীদ পয়েন্টে ১৫২ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ৪৭সে.মি, ফেঞ্চুগঞ্জে ১০৩ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে পানি ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলার ১৩ উপজেলায় ৯৬টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত। ১ হাজার ১৬০টি গ্রামের ৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৯৩ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। জেলার ৬৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ২৩৪ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস জানান, গত কয়েকদিন ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টি হয়নি। সিলেটের নদীগুলো পানিতে পরিপূর্ণ থাকায় উজানের পানি ধীরগতিতে প্রবাহিত হচ্ছে। চলমান বন্যায় সিলেটের ২৫ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মেরামতে ১৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। তবে বন্যার পানি পুরোপুরি না নামলে এসব বাঁধের কাজ করা যাবে না।

বালাগঞ্জ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়া হক বলেন, বালাগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি সময়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণও প্লাবিত। উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে আশ্রয়ণের জন্য। এ পর্যন্ত চলমান বন্যায় প্রায় ১৩১ মেট্রিক টন চাল বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানবৃন্দকে দেওয়া হয়েছে। নগদ অর্থ, শুকনো খাবার ৯৫০ প্যাকেটসহ শিশু খাদ্য, গোখাদ্য দেওয়া হয়েছে ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বন্যার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা তাসনিম জানান, প্রথম দফায় বন্যার পানিতে উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভাঙে এখন সেগুলোর ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নের ৭৩টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। যেসব আশ্রয়কেন্দ্রে পানি উঠেছে সেগুলো থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি।

১০-১৩ জুলাই ঢাকায় শুরু হচ্ছে থাই বাণিজ্য মেলা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ঢাকায় শুরু হচ্ছে থাই বাণিজ্য মেলা, ছবি: বার্তা২৪.কম

ঢাকায় শুরু হচ্ছে থাই বাণিজ্য মেলা, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত হবে টপ থাই ব্র্যান্ডস ২০২৪ বাণিজ্য মেলা।

রোববার (৭ জুলাই) সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশে নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদে সুমিতমোর বলেন, এই মেলায় ৬৪ টি থাই প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশে থাই পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে।

থাইল্যান্ড সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড প্রোমোশন (ডিআইটিপি) এর উদ্যোগে এ মেলায় আয়োজন করা হচ্ছে।

থাইল্যান্ড ট্রেড ফেয়ার উভয় দেশের জন্যই একটি ফলপ্রসূ উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশ থেকে অনেকেই এই মেলার মাধ্যমে থাইল্যান্ড হতে তাদের ব্যাবসা খুজে নিতে সমর্থ হন।

আগামী ১০-১৩ জুলাই ঢাকাস্থ প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রতিদিন সকাল ১০ টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে।

মেলায় খাদ্যপণ্য, জুয়েলারি, স্বাস্থ্যসেবা, প্রসাধনী, বেডিং, স্পা, ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতি, টেক্সটাইল, অন্তর্বাস, স্টেশনারি, গৃহস্থালি পণ্যসহ নানা ধরনের বিশ্বমানের থাই পণ্য প্রদর্শিত হবে।

থাই সংস্কৃতির সাথে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিতে মেলায় থাকবে থাই নৃত্য এবং ব্যাবসায়িক মিটিং। আরও থাকছে র‍্যাফেল ড্র তে ঢাকা ব্যাংকক ঢাকা বিমান টিকেট জেতার সুযোগ।

১০ জুলাই বেলা আড়াইটায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে মেলার শুভ উদ্বোধন করবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, থাই ট্রেড সেন্টার এর মিনিস্টার কাউন্সিলর খেমাতাত আরচাওয়াথাম্রং ও সোনারগাঁও হোটেলের কর্মকর্তাবৃন্দ।

;

ভাড়া দিতে না পারায় অসহায় দম্পতির আশ্রয় শশ্মানঘাটে!



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর
ভিটেমাটিহীন সিরাজুল ইসলাম চা বিক্রি করে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করছেন।  ছবি: বার্তা ২৪

ভিটেমাটিহীন সিরাজুল ইসলাম চা বিক্রি করে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সময়মত ঘর ভাড়া দিতে না পারায় বাড়ি থেকে বের করে দেয়ায় অবশেষে শশ্মানঘাটে আশ্রয় নিয়েছেন এক দম্পতি। মেহেরপুর সদর উপজেলার জুগিন্দা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী গাংনীর ছেউটিয়া নদীর পাশে শশ্মানঘাটে তালের পাতা আর পাটকাঠি দিয়ে ঘর তৈরি করে বসত করছেন। তবে চলমান প্রক্রিয়ায় এ দম্পতিকে ঘর দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। 

জানা গেছে, সিরাজুল ইসলামের ভিটেমাটি বা অন্য কোন সহায় সম্পদ নেই। কখনও ভাঙ্গারির ব্যবসা আবার কখনও ফেরি করে মালামাল বিক্রি জীবিকা নির্বাহ করেন। বসত করতেন গ্রামের একজনের ভাড়া বাড়িতে। ফেরি করে যা আয় করতেন তা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি ঘর ভাড়া দেওয়া ছিল বেশ কষ্টসাধ্য। সময়মত পরিশোধ করতে পারতেন না ভাড়ার টাকা। ভাড়া পরিশোধ না করায় চলতি মাসে তাদেরকে নামিয়ে দেয় বাড়ি থেকে। কোথাও কোন আশ্রয় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত শশ্মানঘাটের পাশে আশ্রয় নেয় এই অসহায় এ দম্পতি।

এই ঝুপড়ি ঘরেই দিন পার করছেন অসহায় দম্পতি। ছবি: বার্তা ২৪

আশেপাশের মানুষের কাছ থেকে বাঁশ, তালের পাতা, পাটকাঠি চেয়ে নিয়ে তৈরি করেন ঝুপড়ি ঘর। সেখানে বসবাস করছেন তারা। স্থানীয়দের সহায়তায় চায়ের দোকান দিয়ে কোনমতে দুবেলা মুঠো ভাতের জোগাড়ে যুদ্ধ করছেন এই অসহায় দম্পতি।

সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি ভূমিহীন সেই সাথে শারিরীক প্রতিবন্ধী। তারপরও জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন স্থান থেকে বোতল কুড়িয়ে ও ভাঙ্গারির ব্যবসা করে কোনমতে দুমুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতেন। স্ত্রীকে নিয়ে বসবাসের জন্য গ্রামের একজনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। বাড়ি ভাড়া পরিশোধ না করায় তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। তাই বসবাসের জন্য সরকারি শশ্মানঘাট বেছে নিয়েছেন তিনি।

আশেপাশের লোকজন সিরাজুল দম্পতিকে আপন করে নিয়েছেন। অর্থনৈতিক বিপ্লবের এই যুগে মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে নানাভাবে। এর মধ্যেও সিরাজুল ইসলামের মত অসহায় দম্পতি এখনও রয়েছেন। সরকারি কিংবা ব্যক্তি পর্যায়ের সহযোগিতাই পারে এসব পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে। তাই শশ্মানঘাটের পাশের এই সরকারি জায়গায় সিরাজুল দম্পত্তির জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়ার আবেদন স্থানীয়দের।

পর্যায়ক্রমে সব ভূমিহীন পরিবারই পাবে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গাসহ পাকাবাড়ি। আবেদন করে থাকলে চলমান প্রকল্পের মাধ্যমেও সিরাজুল ইসলামকে ঘর দেওয়া হবে বলে জানালেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান।

;

ভয়ংকর ভাড়াটিয়া, বাসা ছাড়তে বলায় ধর্ষণ মামলায় কারাগারে বাড়ির মালিক



আল-আমিন রাজু ও রাকিব হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
গ্রাফিক্স, বার্তা২৪.কম

গ্রাফিক্স, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ইট পাথরের রাজধানীতে জীবিকার প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সাময়িক বসতি গড়েন কর্মজীবীরা। অস্থায়ী বসবাসে সবারই ভরসা ভাড়া বাসা। সাধারণত বাড়ির মালিকদের বিভিন্ন অজুহাতে ভাড়া বৃদ্ধিসহ নানা অনিয়মের জালে আটকে যান ভাড়াটিয়ারা। তবু কর্মের কারণে মুখ বুজে সহ্য করে যান তারা। কিন্তু এবার উল্টো ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার থানার পোস্তা এলাকায়। কয়েক মাস ধরে ভাড়া না পেয়ে বাসা ছেড়ে দিতে বলায় ধর্ষণ মামলা ঠুকে দিলেন ভাড়াটিয়া। সেই মামলায় গ্রেফতার হয়ে দুই মাস ধরে জেল খাটছেন ভবন মালিক।

ভুক্তভোগী ভবন মালিকের নাম মোস্তফা নাজমুল হাসান সজিব। তিনি পুরান ঢাকার চকবাজার থানার পোস্তা এলাকার ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের আ. সালামের ছেলে।

ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চকবাজার থানার পোস্তার ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের ৭৬/২ নম্বর বাড়ির মালিক মোস্তফা নাজমুল হাসান সজিব। সাত তলা ভবনের ছয় তলার একটি ফ্ল্যাটে ১২ হাজার টাকা ভাড়ায় বসবাসের চুক্তি করেন জান্নাতুল ফেরদৌস এ্যানি নামের এক নারী। দুই বছর বসবাসের পর ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি বাড়ির মালিকের সঙ্গে ১২ হাজার টাকা ভাড়ার নতুন একটি চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন। নতুন চুক্তির পর প্রতি মাসে ১১ হাজার ২০০ টাকা করে প্রথম সাত মাস ভাড়া পরিশোধ করেন। পরবর্তী সাত মাস কখনো ১০ হাজার আবার কখনো ১১ হাজার করে অনিয়মিত ভাবে ভাড়া পরিশোধ করেন। কিন্তু চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন।

ভাড়া না পেয়ে একাধিকবার বাড়ির মালিক মোস্তফা নাজমুল হাসান সজিব ভাড়া পরিশোধ ও বাসা ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দেন। পাওনা টাকা পরিশোধ করে বাসা ছাড়ার জন্য ২ মাস সময় চান ভাড়াটিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস এ্যানি। এই সময় পেরিয়ে গেলে বাসা না ছেড়ে উল্টো বাড়ির মালিককে নানাভাবে হুমকি দিতে থাকেন। যার সর্বশেষ শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলার করে বসেন এ্যানি। যদিও এখন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আপস করতে নিজেই ভুক্তভোগীদের চাপ প্রয়োগ করে চলছেন মামলার বাদী।

ছেলেকে নির্দোষ দাবি করে ভবন মালিক সজিবের মা আসগড়ি বেগম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ভাড়াটিয়া কয়েক মাস ধরে ভাড়া দেয় না। চুক্তি অনুযায়ী আমরা তাকে বাসা ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দিয়েছি। এখন সে উল্টো আমার ছেলের নামে মিথ্যা শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা করেছে। এমনকি এই ধর্ষণ মামলায় আমার ছেলের দুই বউ ও বাসার নিরাপত্তাকর্মীকেও আসামি করেছে। এই মামলা কীভাবে পুলিশ নিলো, তারা কি কিছুই বোঝে না?

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে পেশায় ব্যবসায়ী। তার দুই স্ত্রী। তারা এক সঙ্গে একই বাসায় আমার কাছে থাকে। দুই বউকে নিয়ে আমরা অত্যন্ত সুখী পরিবার। আসল সমস্যা হলো আমার ছেলের কোনো সন্তান নেই। সে (বাদী) ভেবেছে ওই ভবন দখল করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হাতিয়ে নেবে। কিন্তু সে তো জানে না, এই ভবনের আসল মালিক আমার ছেলে না। ভবনের মালিকানা আমার দুই ছেলে বউ ও আমার। আপসের নামে ২০ লাখ টাকা দাবি করছে। আমার বাসা এসেও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমার ছেলেকে বাঁচান, আমার ছেলেটা অসুস্থ।

গত ৫ জুলাই বিকেলে নিজ বাসায় কথা হয় জেলে থাকা সজিবের দুই স্ত্রী সাদিয়া আফরিন মুক্তা ও শায়লার সঙ্গে। তারা বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমার স্বামীকে ফাঁসিয়ে বাড়ি দখলের পায়তারা করছে। বাড়ি শাশুড়ি ও আমাদের দুজনের নামে। এটা জানার পরে প্রতিদিন নানা ধরনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এমনকি ওই মহিলা কারাগারে গিয়েও আমার স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে।

মামলা ও হুমকির বিষয়ে জানতে চকবাজার থানার পোস্তা এলাকায় ওয়াটার রোডের সজিবের ভবনের ভাড়াটিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস এ্যানির বাসায় যান এই প্রতিবেদক। সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে দরজা বন্ধ করে বাসার ভেতরে অবস্থান নেন এ্যানি। তার মেজো ছেলে সানাফ দরজার ভেতর থেকে জানান, তার মা বলেছে গেট খোলা যাবে না। তার মা কথা বলতে রাজি না। পরবর্তীতে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে এ্যানির দুটি মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি মিথ্যা মামলা ও ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের বিষয়ে জানতে চাইলে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহিদুজ্জামান বলেন, মামলার তদন্ত চলমান। সত্য না মিথ্যা সেটি তদন্তে প্রমাণ হবে। মামলাটি এখন আমরা তদন্ত করছি না। এটি ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টার তদন্ত করছে। আর ভাড়াটিয়া আমরা নামাতে পারি না।

মামলা তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোদেজা খানম বার্তা২৪.কমকে বলেন, মামলার তদন্ত চলমান, এখন কিছু বলতে চাচ্ছি না।

মামলায় বাদীর অভিযোগের সত্যতার বিষয়ে জানতে চাইলে, আমরা আলামত সংগ্রহ করেছি। ফরেনসিক করতে দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পাইনি। আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি।

;

রংপুরে সাড়া ফেলেছে ২ টাকা ভাড়ায় স্কুটি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
রংপুরে সাড়া ফেলেছে ২ টাকা ভাড়ায় স্কুটি

রংপুরে সাড়া ফেলেছে ২ টাকা ভাড়ায় স্কুটি

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে এই প্রথম নতুন চমকে ব্যতিক্রম উদ্যোগে ২ টাকা মিনিটে মিলছে স্কুটি ভাড়া। ব্যাটারিচালিত যাতায়াতের ব্যতিক্রম মাধ্যম এটি। রংপুর নগরীতে রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাই মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার একমাত্র আস্থা। তবে এবার যান্ত্রিক শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে চালু হয়েছে বাইক শেয়ারিং সার্ভিস স্কুটি।

নগরীর বীকন মোড়ে ছোট্ট একটি দোকানে ৮টি স্কুটি নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছে স্কুটি লিমিটেডের। এতে নিরাপদে জরুরি কাজে যেতে বেশি উপকৃত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের সামিউল আলম সামি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, 'প্রতিদিন রিকশাভাড়ায় অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। ২ টাকা মিনিটে স্কুটি চালিয়ে এখন খুব সুবিধা, টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। তবে স্কুটি কম থাকায় ঘুরে যেতে হয় মাঝে মাঝে। আরও স্কুটি থাকলে আমাদের জন্য খুব উপকার হতো।'

শহরের বুকে মিনিট হিসেব করে মনের আনন্দে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন যাত্রীরা। হেলমেট মাথায় দিয়ে যেন কালো ও হলুদ রংয়ে নজর কাড়ছে স্কুটিগুলো। শুধু একা নয়, ছোট্ট এই স্কুটিটে সঙ্গী নেয়ারও সিট রয়েছে। স্কুটি ভাড়া নিতে মানতে হচ্ছে নানাবিধ শর্তাবলী। তবেই সর্বনিম্ন ১ ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টায় মিলছে স্কুটি। ভাড়ায় সাশ্রয় হচ্ছে যাত্রীদের।


বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন বলেন, 'মিনিট প্রতি ২টাকায় স্কুটি সেবা চালু করে খুব ভালো হয়েছে। বিশেষ করে আমাদের জন্য। তবে সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধা হচ্ছে। কারণ রংপুর এখন যানজটের শহর। তাই মিনিটের পর মিনিট যানজটে থেকে টাকা নষ্ট হচ্ছে। তাই মিনিট প্রতি ২ টাকা না করে যদি কিলো সিস্টেম করা হতো খুব উপকার হতো।'

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভাড়ায় স্কুটি নিতে পাচ্ছেন আগ্রহীরা। প্রাথমিকভাবে এ স্কুটি চালানোর ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে মিনিটে ২ টাকা। আর ইতিমধ্যেই এই স্কুটি সারা ফেলেছে সব বয়সীদের মাঝে।

ঘণ্টা চুক্তিতে স্কুটি ভাড়া নেওয়ার জন্য যাত্রীদের প্রথমেই নির্ধারিত ফরমে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হচ্ছে ২০ টাকা মূল্যে। নতুন অবস্থায় বেশ সাড়া মিলছে। দৈনিক ২৫ জনের বেশি যাত্রী আসে। নতুন অবস্থায় অনেকেই ঘুরে যায়। আরও সাড়া পেলে স্কুটি বাড়িয়ে বেশ কয়েকটি পয়েন্ট চালুর করার প্রত্যাশা জানান কর্তৃপক্ষ।

শর্তাবলীর অন্যতম নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে নগরীর বাহিরে যাওয়ার চেষ্টা করলে জরিমানা গুনতে হবে ১ হাজার টাকা ৷ বিশেষ করে অ্যাপসের মাধ্যমে এই স্কুটির অবস্থান জানা ও কন্ট্রোল করা যায় ।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় এটি তৈরি করা হয়েছে অত্যাধুনিকভাবে। যা গতিতে প্রতি ঘণ্টায় ছুটতে পারে সর্বোচ্চ ৩৫-৪০ কিলোমিটার। একবার চার্জ দিলেই চলবে ৭০ কিলোমিটার। মিনিট প্রতি ২ টাকায় বেশ প্রসংশা কুড়াচ্ছে এই স্কুটি উদ্যোগটি।

;