হত্যার হুমকি পাওয়া হবিগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের নিরাপত্তার গানম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৮ জুলাই) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির হলরুমে ব্যারিস্টার সুমনের সাথে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মীর পাশাপাশি সাদা পোষাকে একজন গানম্যান দেখা যায়।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, হত্যার হুমকির প্রেক্ষাপটে আমাকে এই গানম্যান দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (ডিএসবি) স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়, সংসদ সদস্য সুমনের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য ডিএসবি হবিগঞ্জে কর্মরত কনস্টেবল মো. রিফাদ ধানিয়েলকে অস্ত্রসহ (সাদা পোশাকে) গানম্যান নিয়োগ করা হলো।
এর আগে গত ৩০ জুন নিজের নিরাপত্তার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমাকে হত্যার হুমকির কথা আমি আমার এলাকার ওসির মাধ্যমে আমি জেনেছি। এরপর আমি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় জিডি করেছি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আমি একজন মেম্বার অফ পার্লামেন্ট (এমপি) আমাকে কেন জিডি করতে হলো? যেহেতু পুলিশই বিষয়টি আমার আগে জেনেছেন। তাহলে কেন পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিলেন না? তদন্ত করলেন না? যেখানে আমার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে।
‘অজ্ঞাতনামা একটি শক্তিশালী মহল তাকে হত্যার জন্য টিম নিয়ে মাঠে নামিয়েছে’ জেনে সম্প্রতি শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ব্যারিস্টার সুমন। ওই সাধারণ ডায়েরিতে ব্যারিস্টার সুমন উল্লেখ করেন যে, গত ২৭ জুন ঢাকায় অবস্থানকালে রাত আনুমানিক ২টার সময় আমার নির্বাচনী এলাকার চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তার সরকারি মোবাইল থেকে আমার হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে জানান যে, আপনাকে হত্যার জন্য অজ্ঞাতনামা একটি শক্তিশালী মহল গত তিন দিন আগে ৪-৫ জনের একটি টিম নিয়ে মাঠে নামিয়েছে। আপনি রাতে বাইরে বের হবেন না এবং সাবধানে থাকবেন। তখন আমি ওসির কাছে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি ওই ব্যক্তির পরিচয় জানাতে অস্বীকার করেন এবং আমাকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন। এই বিষয়টি জানার পরে আমি মারাত্মকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটর ছিলেন। এই পদ থেকে তিনি ২০১২ সালের ১৩ নভেম্বর পদত্যাগ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অসঙ্গতি তুলে ধরার পাশাপাশি মানবিক কাজ করে জনপ্রিয়তা পান ব্যারিস্টার সুমন। সেই সঙ্গে দেশের প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে আইনী লড়াইয়ে নামেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।
একপর্যায়ে যুবলীগের কেন্দ্রীয় আইন সম্পাদকের পদ পান ব্যারিস্টার সুমন। তবে পরবর্তীতে তাকে এই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন ব্যারিস্টার সুমন।