বাংলা ব্লকেডে অচল রাজধানী, সীমাহীন ভোগান্তি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

যানজটে অচল রাজধানীবাসী

যানজটে অচল রাজধানীবাসী

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়, শাহবাগ, নীলক্ষেত, ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের মোড় ও চানখারপুলে সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এর ফলে রাজধানীজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। একদিকে দীর্ঘ যানজট অন্যদিকে গরমে হাঁসফাঁস করছে নগরবাসী।

রোববার (৭ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়গুলো অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন
যান চলাচল স্থবির হয়ে আছে

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়, দিয়েছি তো রক্ত আরও দেব রক্ত’, ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্র সমাজ জেগেছে’, লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা না মেধা মেধা মেধা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে কোটা প্রথার কবর দে. সহ নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোস্তাফিজুর রহমান বিকেল ৫টার দিকে প্রাইভেটকারে মতিঝিল থেকে খিলক্ষেতের দিকে যাচ্ছিলেন। এই দূরত্ব যেতে তার সাধারণত ৩০-৪০ মিনিট সময় লাগে। কিন্তু আজ সপ্তাহের শুরুর দিনে শাহবাগ থেকে ফার্মগেট রুটে ব্যাপক যানজটে পড়েন তিনি। পরে রুট বদলে অন্য পথে এক ঘণ্টার বেশি সময় পর তিনি গন্তব্যে পৌঁছান।

আজওয়াদ রহমান নিহান। খিলক্ষেত থেকে বাসে বাংলামোটর আসতে তার এক ঘণ্টা লাগলেও আজকে তিনি ২ ঘণ্টাতেও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি। শুধু আজওয়াদ রহমান নয়; এ চিত্র বের হওয়া প্রতিটি মানুষের।

কোটাবিরোধী আন্দোলনে পথশিশুরা

গন্তব্যে পৌঁছানোর প্রায় দেড় থেকে ২ ঘণ্টা হাতে সময় নিয়ে বেরিয়েছিলেন রাসেল আহমেদ। বিমানবন্দর থেকে মহাখালী আসতেই তার ২ ঘণ্টা শেষ। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দিনের বেশিরভাগ সময় এখন রাস্তাতেই কেটে যাচ্ছে। বাসা থেকে অফিস যেতে আর অফিস থেকে বাসায় ফিরতে প্রতিদিন পথেই সময় যায় ৫ ঘণ্টা।

ব্যক্তিগত গাড়ি করে বাসায় ফিরছিলেন আল্পনা আক্তার। তিনি তার এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েকে নিয়ে দীর্ঘ জ্যাম ঠেলে ধানমন্ডি এসেছেন। সাধারণ মানুষের খুব ভোগান্তি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দুপুর দুইটা থেকে রাস্তায় বসে আছি, এখন সাড়ে তিনটা বাজে।

গান আর স্লোগানে মুখর বাংলামোটর মোড়

এয়ারপোর্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পরিবহনের বাসচালক রুবেল বলেন, গাড়ি নিয়ে বাংলামোটর আসতেই দেখি রাস্তা বন্ধ। এখানেই প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। কখন ছাড়বে জানি না।

ডিএমপির ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) নবকুমার বিশ্বাস বলেন, কলাবাগান সাইন্সল্যাব, ধানমন্ডি, নীলক্ষেত আশপাশের এলাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে পুরো সড়ক বন্ধ হয়ে আছে। কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। তবে ধানমন্ডি থেকে গাবতলীর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

যানজটে নাকাল বাস ও সিএনজি চালকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের কয়েকদিন ধরে চলা আন্দোলনে যানজটের মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে অসহনীয় পর্যায়ে।