পাঁচশ বছরের ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রায় মানুষের ঢল

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কিশোরগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রায় হাজারো মানুষের ঢল, ছবি: বার্তা২৪.কম

ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রায় হাজারো মানুষের ঢল, ছবি: বার্তা২৪.কম

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পাঁচশ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে সকাল থেকে জড়ো হয়েছেন হাজারো ভক্ত। 

রোববার (৭ জুলাই) উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের ভোগবেতালে সনাতন ধর্মের প্রথম পর্বের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বিজ্ঞাপন

কড়া নিরাপত্তায় ৯ দিন ব্যাপী এই উৎসব উল্টো রথের মাধ্যমে শেষ হবে সোমবার (১৫ জুলাই)। রোববার বিকেল পাঁচটায় ভক্তরা রশি টেনে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে রথ নিয়ে যায়৷ এ উপলক্ষে বসেছে মেলা৷ বিভিন্ন রকমের পাখি নিয়ে এসেছেন অনেকেই।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেবতা গোপীনাথ জিউর বিশেষ বাহন রথে চড়ে তার বোন সুভদ্রা দেবী স্বামীর বাড়ি থেকে পিত্রালয়ে নায়রে নিয়ে যাওয়ার জন্য সুভদ্রার ভাই বলরাম, গোপীনাথ জিউর বাড়িতে আসেন। ৯ দিন পর উল্টোরথে চড়ে সুভদ্রাকে নিয়ে আসেন তার স্বামীর বাড়িতে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই বিশ্বাস থেকেই কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ৫ শ বছর যাবৎ পালিত হয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা উৎসব।


কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের ভোগবেতালে ঈঁসাখাঁ ও রাজা নবরঙ্গ রায়ের স্মৃতি বিজড়িত ৫ শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী গোপিনাথ জিউর মন্দির।

কথিত আছে গোপীনাথ জিউর রথের গোড়াপত্তন হয় রাজা নব রঙ্গ রায়ের আমলে। পরবর্তীতে এই মন্দিরে ২ শত একর জমি দান করেন ঈঁসাখাঁ। তবে মন্দিরের গোড়াপত্তন কে করেছিলে এ ব্যাপারে কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। রথযাত্রা উপলক্ষে কটিয়াদী গোপীনাথ জিউর মন্দির প্রাঙ্গনে হাজার হাজার ভক্ত ও ধর্মপ্রাণ লোকের মিলন মেলায় পরিণত হয়। বিভিন্ন ধর্মালম্বী মানুষের পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে মন্দিরের আশপাশ এলাকা। মন্দির এলাকায় লোকজ মেলা, ফলমূল ও বিভিন্ন জাতের পাখির পসরা বসে। উৎসবমুখর পরিবেশে নানা ধর্মীয় আচার- আচরনাদি শেষে হিন্দু রমণীদের অবিরাম উলুধ্বনির মাধ্যমে বিশাল আকৃতির রথের চূড়ায় স্থাপন করা হয় শ্রী শ্রী গোপীনাথ, বলরামও সুভদ্রার মূর্তি। রথের চাকার সাথে বাঁধা হয় পাটের মোটা রশি। হাজার হাজার ভক্তবৃন্দ সামনে থেকে বিকেল পাঁচটায় এই মোটা রশি টানের মধ্য দিয়ে রথ টানা শুরু করেন।

বিশাল আকৃতির কৃত্রিম ঘোড়া টানা বাহন, যাত্রা শুরু করে সুভদ্রার পিত্রালয়ের দিকে। সে সময় এলাকায় হাজারো মহিলার কণ্ঠে উলুধ্বনি খূল-কর্তাল ঢাক-ঢোল ও ব্যান্ডের তালে মুখরিত হয়ে ওঠে মন্দির প্রাঙ্গণ। মন্দিরের নিজস্ব সড়ক দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে বিরাট আকৃতির এই রথটি এক সময় পৌঁছে যায় সুভদ্রার পিত্রালেয়ে। একসময় হাতি দিয়ে টানা হলেও এখন ভক্তরা টেনে নিয়ে যায়৷