বিদায়ী অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে ২২ লাখ পাসপোর্টধারীর ভারতে যাতায়াত
বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে বিদায়ী অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন ২২ লাখ ৫ হাজার ৪৭৮ জন পাসপোর্টধারী। এর মধ্যে ভারতে গেছেন ১১ লাখ ২৫ হাজার ৪ জন এবং ভারত থেকে এসেছেন ১০ লাখ ৮০ হাজার ৪৭৪ জন। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে যাত্রীর যাতায়াতের সংখ্যা ছিল ২১ লাখ ২৯ হাজার।
এ সময় ভ্রমণ কর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের আয় হয়েছে প্রায় ১২০ কোটি টাকা। আর ভারত সরকারের আয় ১০০ কেটির উপরে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যাত্রী যাতায়াতের পরিমাণ বেড়েছে ৭৬,৪৭৮ জন।
তবে যাত্রী যাতায়াতে সরকারের আয় বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত সেবা বাড়েনি অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, সেবা বাড়াতে বন্দরে যাত্রী ছাউনির জন্য জায়গা অধিগ্রহণের কাজ চলছে, আর ভারতে অংশে ইমিগ্রেশনকেও সেবা বাড়াতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জানা যায়, বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতের অন্যতম বাণিজ্যিক শহর ও পর্যটন কেন্দ্র কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৫ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ার বেশিরভাগ পাসপোর্টধারী চিকিৎসা, ব্যবসা, উচ্চশিক্ষা গ্রহণ আর দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করতে বেনাপোল সীমান্ত ব্যবহার করে থাকেন। পদ্মা সেতু ব্যবহারে এ যাত্রা আরও সহজ হয়েছে।
তবে দুই পারের ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও বন্দর ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ভুক্তভোগী যাত্রীদের, রয়েছে দালাল চক্রের কবলে পড়ে পাসপোর্টধারীদের ছিনতাই ও প্রতারণার ঘটনা। এসব বিষয় বিভিন্ন সময় পাসপোর্টধারীরা প্রতিবাদ জানালেও প্রতিকার মেলেনি। বেনাপোল ও ভারত ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম সারতে একজন যাত্রীতে রোদ, বৃষ্টি ও মশার কামড় উপেক্ষা করে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। অথচ যাত্রী সেবার নামে বন্দর ৫৫ টাকা, সোনালী ব্যাংক ১০০০ টাকা আদায় করে। এছাড়া ভিসা প্রদানের জন্য ভারতীয় দূতাবাস ৮৪০ টাকা প্রতিজনে জমা নেয়।
বেনাপোল আমদানি, রফতানি সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জানান, বেশি হয়রানির শিকার হতে হয় ভারত অংশে। বিভিন্ন বৈঠকে যাত্রী সেবা বাড়াতে অনুরোধ জানালেও কাঙ্ক্ষিত সেবা মেলেনি।
পাসপোর্টধারী রতন সরকার জানান, ভ্রমণ কর বাড়লেও সেবা বাড়েনি। রোদ, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ৬ ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়াতে হয়।
অপর এক পাসপোর্টধারী পলাশ জানান, পদ্মা সেতুর সুবিধায় ঢাকা থেকে ৫ ঘণ্টায় বেনাপোল আসা যায়। তবে বন্দর ভোর সাড়ে ৬টার পর খোলায় দুর্ভোগ রয়ে গেছে।
বেনাপোল পরিচালক রেজাউল করিম জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যাত্রী যাতায়াতের পরিমাণ বেড়েছে। যাত্রীদের দালালদের থেকে সাবধান থাকতে বলা হয়েছে। যাত্রী সুবিধা বাড়াতে বন্দরে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের জায়গা অধিগ্রহণের কাজ চলমান চয়েছে। ভারত অংশেও তাদের সেবা বাড়াতে বলা হয়েছে।