কুয়াকাটার সৈকত পরিচ্ছন্নতায় 'বৃহন্নলা'

  • উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.ক্‌ (কলাপাড়া-পটুয়াখালী)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বৃহন্নলা’।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রায় ১ ঘন্টা ধরে সৈকতের জিরো পয়েন্টের এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা,প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করেন তারা। এতে 'বৃহন্নলার' সদস্যদের পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরাও অংশগ্রহণ করেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে রবিবার (১৪ জুলাই) বিকেলে সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে সৈকতের তীরে ম্যারাথান অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রতিযোগিতায় তৃতীয় লিঙ্গের ৯ জনসহ 'বৃহন্নলার' ২৫ সদস্য অংশ নেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাদিকুল ইসলাম এবং অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারের পরিচালক ইন্দ্র বংশ ভিক্ষু, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু, সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির সহ সাংবাদিক আসাদুজ্জামান মিরাজ এবং আবুল হোসেন রাজু প্রমুখ।

ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে অংশ নেওয়া তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীর সদস্য পিয়া (হিজড়া) বলেন, ‘কুয়াকাটার মত এত সুন্দর একটি জায়গায় সব শ্রেণির মানুষের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। মনে হয়েছে আমিও এ সমাজের একজন গর্বিত সদস্য। এটা কী যে ভালো লাগার তা বলে শেষ করা যাবে না।’

সমাজে মানুষে-মানুষে বৈষম্য কমাতে তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতে আমাদের এই ব্যতিক্রমী আয়োজন উল্লেখ করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বৃহন্নলার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সবাই মানুষ হিসেবে এই সমাজে বসবাস করতে চাই। কে নারী, কে পুরুষ কিংবা কে তৃতীয় লিঙ্গের—এই পরিচয়ে কেউ যেন অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। এ বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতেই এই আয়োজন।’

সাদিক আরো জানান, একীভূত বাংলাদেশ বিনির্মাণে তৃতীয় লিঙ্গের সম্প্রদায়কে মূলধারায় ফিরিয়ে আনাই ‘বৃহন্নলা’র লক্ষ্য

লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় মানুষদের নিয়ে গবেষণা করা ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের সাবেক সহকারী অধ্যাপক আসিবুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে যদি আমরা সবার সঙ্গে এগিয়ে নিতে চাই, তাহলে তাদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করার বিকল্প নেই। এ কারণে সবার আগে পরিবার, সমাজ এবং সমাজ পরিবর্তনে যারা কাজ করেন তাদের এগিয়ে আসতে হবে। সেই জায়গা থেকে 'বৃহন্নলা' যে কাজগুলো করছে সেগুলো সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।