৪০০ কোটি টাকা প্রসঙ্গে যা বললেন সেই পিয়ন
চীন সফর নিয়ে রোববার (১৪ জুলাই) গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার পিয়নও ৪০০ কোটি টাকার মালিক ছিল। হেলিকপ্টার ছাড়া সে চলতো না। তাকে ধরা হয়েছে।’ পরে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
সংবাদ প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রীর সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসেব জব্দ করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে, এক সাক্ষাৎকারে জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, তিনি মনে করেন না যে, প্রধানমন্ত্রী তাকে ইঙ্গিত করে কথাগুলো বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার পুরো বংশের মিলেও তো এত টাকা হবে না। আর আমার কী আছে, তাতো ট্যাক্স ফাইলেও উল্লেখ করেছি। আমি দুর্নীতি করিনি।’
২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জাহাঙ্গীর আলম সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলমের কোনো সম্পর্ক নেই।’
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের নাহারখিল গ্রামের মৃত রহমত উল্লাহর ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের ব্যাপারে প্রয়োজনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা নিতেও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পক্ষ থেকে সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে বাসসের ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম এখন চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং গত সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে দল থেকে তাকে নমিনেশন দেওয়া হয়নি।
জাহাঙ্গীর নিজেই জানিয়েছেন, তিনি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার অনেক আগে থেকেই দলীয় সভানেত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি।
এর মধ্যেই এলাকার রাজনীতিতে তার জড়িয়ে পড়া এবং হেলিকপ্টারে আসা-যাওয়ার খবরের পাশাপাশি হঠাৎ করে বিপুল অর্থবিত্ত অর্জনের খবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে আসে। এরপর গত বছরের শেষ দিকে তাকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ৪০০ কোটি টাকার বিষয়টি তাকে নিয়ে বলা হয়নি বলেই মনে করেন তিনি। জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমি দুর্নীতি করিনি। আমাকে অব্যাহতি দেওয়ার পর পরিচয়পত্রসহ আমার কাছে যা ছিল তা আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দিয়ে এসেছি। আর চারশ কোটি টাকা আমার চৌদ্দ গোষ্ঠীর টাকা ও সম্পদ মিলালেও তো হবে না।’