গ্রেফতার আতঙ্কে হাসপাতাল ছেড়ে পালাচ্ছে রোগীরা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে চলা আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় আহত দুই শতাধিক রোগী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে গ্রেফতার আতঙ্কে অনেকেই কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে নীরবে হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে হাসপাতালের খাতায় নাম থাকলেও বেডে রোগী নেই।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বেলা ১১টার থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

রোগীর স্বজনরা বলছেন, সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত রোগীদের তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ। রোগী ও তাদের স্বজনদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

এদিকে প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রবেশেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। রোগীর স্বজন ছাড়া কাউকে ওয়ার্ডে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা বলছেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা রয়েছে রোগীর স্বজন ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

রোগীর স্বজন ছদ্মবেশে ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ১৫ জন রোগী গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যার মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু ও কিশোর রয়েছে। ওয়ার্ডের ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন রামপুরা আইডিয়াল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও রামপুরের উলোন এলাকার বাসিন্দা কামরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম। বন্ধুদের সঙ্গে খেলা শেষে বাসায় ফেরার পথে রামপুরা এলাকায় ডান পায়ে গুলি লাগে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

রাজধানীর রায়েরবাগ ও নরসিংদীতে সহিংসতার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় আজ ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- রায়েরবাগ এলাকার বাসিন্দা নির্মাণ শ্রমিক জাকির হোসেন (২৯)। তিনি পটুয়াখালীর দশমিনা এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে। গত ২১ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢামেকে ভর্তি হন। গতকাল রাত ১২টার পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

বুধবার ভোর রাতে মৃত্যু হয়েছে ময়মনসিংহের নান্দাইল এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে মো. জামান (১৭)। তিনি গত ২১ জুলাই নরসিংদীতে সহিংসতার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢামেকে ভর্তি হন। পেশায় গার্মেন্টস শ্রমিক জামানের শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে।

ঢামেকে ভর্তি ও মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ঢামেকের বিভিন্ন ওয়ার্ডে এখন পর্যন্ত ২৭৮ জন ভর্তি রয়েছে। গত কয়েক দিনে মৃতুর সংখ্যা ৭৯ জন।

আহত ও নিহতদের পেশাগত পরিচয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ধরনের তথ্য এখন দেওয়া যাবে না। আমরা এখন রোগীদের সেবা দিতে কাজ করছি।