এবার দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে তিন হাজার টন ইলিশ রফতানির অনুমতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রফতানির এই অনুমোদন দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞাপন
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আসন্ন দূর্গাপূজা উপলক্ষে বিভিন্ন রফতানিকারকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্ধারিত শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দেওয়া হল।
সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীদেরকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আগামী ২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর (উপসচিব, রফতানি-২ শাখা, কক্ষ নং ১২৭, ভবন নং ৩, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়) আবেদন করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।
বিজ্ঞাপন
তবে উল্লিখিত সময়সীমার পর প্রাপ্ত আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। এছাড়া যারা ইতোমধ্যে আবেদন করেছেন তাদের নতুন করে আবেদনের প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
প্রতিবছর দুর্গাপূজায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ উপহার পাঠানো হয়। তবে এবার ভারতে কোনও ইলিশ যাবে না বলে জানিয়েছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
গত ৩ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরামের (এফএলজেএফ) সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি বলেন, দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে তারপর ইলিশ বিদেশে রফতানি করা হবে। দেশের মানুষ ইলিশ পাবে না, আর রফতানি হবে, সেটা হতে পারে না। ফলে এবার দুর্গাপূজায়ও ভারতে যাতে কোনও ইলিশ না যায়, তার জন্য আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলেছি।
এ সময় ইলিশের দাম নাগালের মধ্যে নিয়ে আনারও প্রতিশ্রুতি দেন উপদেষ্টা।
সেনাসদরের কর্নেল স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার বলেছেন, বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী কত দিন মাঠে থাকবে সেটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। কারণ সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে সরকারের সিদ্ধান্তে। সরকার নির্ধারণ করবে সেনাবাহিনী কত দিন মাঠে থাকবে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ঢাকা সেনানিবাসে ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী প্রশাসনকে ৬০ দিন সহায়তা করতে এই তথ্যটি সঠিক নয়। ৬০ দিনের জন্য নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কত দিন থাকব এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। কারণ সেনাবাহিনী মোতায়েন হয়েছে সরকারের সিদ্ধান্তে, সরকারই এটা নির্ধারণ করবে কত দিন মোতায়েন থাকা প্রয়োজন।
'মানবাধিকার লঙ্ঘন বা বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রতিরোধ করার ব্যাপারে সেনাবাহিনী অত্যন্ত সচেতন। এই ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দিষ্ট আদেশ রয়েছে যে, কোনো ধরনের পরিস্থিতিতে যেন আমরা—সেনাবাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যা সংঘটিত হতে না দেই, সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে এটা প্রতিরোধ করার, বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে এই ধরনের (মানবাধিকার লঙ্ঘন) কোনো যেন ঘটতে না দেই। যে ঘটনাগুলো ঘটছে আপনারা সেগুলো জানতে পারছেন। এর বাইরে আমাদের কার্যক্রমের কারণে কতগুলো পরিস্থিতিতে এই ধরনের কোনো কিছু প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে, এটা হয়তো অনেক সময় জনসম্মুখে আসে না।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। পুলিশের কাছে অপরাধের যে তথ্য থাকে, এটা নিয়ে একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ আমরা করিয়েছি। সে অনুযায়ী, সেনাবাহিনী মোতায়েন হওয়ার পরে বা নির্বাহী ক্ষমতা পাওয়ার পরে আগের তুলনায় অপরাধের সংখ্যা কমেছে। নথিভুক্তি কমেছে। তার মানে পরিস্থিতির অবনতি হয়নি। আমাদের হয়তো প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নতি হয়নি, এটা অনেকে বলতে পারেন।
ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ইন্তেখাব।
দেশব্যাপী আলোচিত সিলেটের কানাইঘাটে প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনকে হত্যা করা হতে পারে ধারণা করছেন তার বাবা শামীম আহমদ। মুনতাহা আক্তার জেরিন কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।
শামীমের দাবি- প্রতিবেশী আব্দুল ওয়াহিদ ওরফে মটরকে ফাঁসাতে মুনতাহকে হত্যা করা হতে পারে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বার্তা২৪.কমের প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এই কথা জানান মুনতাহার বাবা।
শামীম আহমদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, মটর ও মুনতাহার গৃহশিক্ষক মার্জিয়াদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ রয়েছে। যা আশেপাশের সবাই জানেন। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে মুনতাহাকে হত্যা করা হয় ও পরবর্তীতে মটরের পুকুরে মরদেহ ফেলে তাকে ফাঁসাতে চেয়েছিল বলে মনে হচ্ছে। রোববার ভোররাতে পুকুরে মার্জিয়ার মা যখন মুনতাহার মরদেহ পুকুরে ফেলে দিতে চায় তখন মটর দেখে ফেলেন। পরে আলিফজান বিবি পালিয়ে যেতে চাইলে মটরসহ স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে।
মার্জিয়াদের সঙ্গে বিরোধের কথা স্বীকারও করেছেন আব্দুল ওয়াহিদ ওরফে মটর।
মটর বলেন, বেশ কিছুদিন আগে এক লোকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মার্জিয়ার। পরবর্তীতে ওই লোককে মার্জিয়া ও তার মা মারধর করে। তার বিচার করতে গিয়ে দোষী হয় তারা দুজন। তখন থেকে মার্জিয়া ও তার মা দাবি করেন আমার মেয়ের সঙ্গে ওই লোকের বিয়ে দেবে বলে তাদেরকে দোষী বানানো হয়েছে। এই থেকে আমার সঙ্গে তাদের বিরোধ।
তিনি আরও বলেন, মুনতাহা নিখোঁজের ৭ দিনের মাথায় তা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আমার বাড়ির পুকুরে লাশ ফেলার পাঁয়তারা করেছিল মার্জিয়া ও তার মা। আল্লাহর মেহেরবানিতে খুনি মরদেহসহ গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়ে। আমি এই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি চাই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুনতাহার মৃত্যুতে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে মানুষ। পরিবারের লোকজনকে শান্তনা দিচ্ছেন। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখছেন। কথা বলছেন গ্রামের লোকজনের সাথে। সবার একটাই প্রশ্ন কেন মুনতাহাকে হত্যা করা হয়েছে। কি এমন অপরাধ ছিল, যার জন্য এভাবে হত্যা করতে হয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার পর থেকে ঘাতকরা মুনতাহাদের ঘরে যাওয়া আসা করেছিলেন। সাবেক গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবি পূর্বের মতো বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষার জন্য গিয়েছেন। তারাও মুনতাহাকে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে খোঁজাখুজি করেছেন। কিন্তু কারো মুখে ছিল না কোনো দুশ্চিন্তার ছাপ। তারা স্বাভাবিকভাবেই জীবন-যাপন করছিলেন। তাদের আচরণে কেউ বুঝতেই পারেনি এই ঘটনায় তারা সম্পৃক্ত।
স্থানীয়রা বলছেন, মুনতাহাকে প্রাইভেট না পড়াতে নিষেধ ও চুরির ঘটনায় বিরোধে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানায়, শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের কোথাও কোনো খোঁজ না পেয়ে বাবা শামীম আহমদ একটি সাধারণ ডায়েরি করেন থানায়। এরপর বিভিন্ন সময় তার কাছে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে মুঠোফোনে কল দিয়ে টাকা পয়সা চাওয়া ও তথ্য দেয়া হয়। তাদের কথা শুনে সিলেটে নগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি করা হয়। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি মুনতাহাকে। শনিবার (৯ নভেম্বর) মুনতাহার বাবা মার্জিয়ার পরিবারকে কিছুটা সন্দেহ হচ্ছে বলে পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ ওই রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে মার্জিয়াকে। এরমধ্যে ১০ নভেম্বর ভোর ৪ টার সময় খাল থেকে তুলে মুনতাহার প্রতিবেশী আব্দুল ওয়াহিদ ওরফে মটরের পুকুরে মরদেহ ফেলে দেওয়ার সময় মটরসহ স্থানীয় জনতা ধাওয়া দিয়ে মার্জিয়ার মা আলিফজানকে আটক করে।
গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল বলেন, বাড়ি থেকে কাপড় নিয়ে সেগুলো কেটে ফেলে দেয়াকে কেন্দ্র করে মুনতাহার পরিবারের সঙ্গে মার্জিয়ার সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। এই বিরোধের জেরে মুনতাহাকে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলেছে। মুনতাহার জন্য শুধু এলাকার মানুষ কাঁদেনি পুরো দেশের মানুষ কেঁদেছে। আমরা সঠিক বিচার চাই।
আবুল হাসান নামে আরেকজন বলেন, আমাদের গ্রামে এই ঘটনা একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এই ঘটনা কানাইঘাটের জন্য একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এই ধরনের ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের যেন রেহাই না দেওয়া হয়। তাদেরকে আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে সিলেটে জেলা পুলিশের কানাইঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অলক শর্মা বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা সবগুলো বিষয় নিয়ে কাজ করছি। আসামিদের ইতোমধ্যে ৫ দিনের রিমান্ডের জন্য থানা নিয়ে আসা হয়েছে। রিমান্ড শেষে হয়তো আরও কিছু তথ্য পেতে পারি।
প্রসঙ্গত, ৩ নভেম্বর সকালে নিখোঁজের আগে মুনতাহা আক্তার জেরিন তার বাবা শামীম আহমদের সঙ্গে স্থানীয় একটি মাদরাসার ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে বাড়িতে আসে। পরে চিপস খাওয়ার জন্য ৫ টাকা চাইলে তার বাবা চিপস এনে দেন। কিছুসময় পর যোহরের ওয়াক্ত হওয়ায় মসজিদে নামাজে চলে যান শামীম। ওই সময়ে দুটি সবুজ রঙয়ের আপেল হাতে নিয়ে মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে মুনতাহা ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর থেকেই আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত শনিবার (৯ নভেম্বর) কানাইঘাট থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি অপহরণ মামলা করেন। রোববার ভোররাতে মুনতাহার মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ সেটাকে হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করে। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ৪ জনকে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন-কানাইঘাট থানার বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের মৃত ময়না মিয়া আলিফজান (৫৫) ও তার মেয়ে শামীমা বেগম মার্জিয়া (২৫), একই এলাকায় ইসলাম উদ্দিন (৪০) ও নাজমা বেগম (৩৫)।
সোমবার (১১ নভেম্বর) আসামিদের সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী মো.আবু জাহের বাদলের আদালতে তোলার পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শামসুল আরেফিন জিহাদ ভূঁইয়া ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে বিচারক ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
থানা সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের বড় কাশর তার বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ১ কেজি গাঁজা ও ২০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।
ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) হুমায়ুন কবির জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বড় কাশর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মাদক মামলা দিয়ে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।
ছয় একর জায়গা নিয়ে পুরো একটি গ্রাম। আর এ গ্রামে রয়েছে একটিমাত্র বসতি। যেখানে বসবাস করেন গ্রামের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক রানা মোহাম্মদ মাসুদ মল্লিক ও স্ত্রী মাহফুজা বেগম মেরী।
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে উপজেলায় এমন একটি গ্রাম রয়েছে, যার নাম শরীফগঞ্জ। এখানে রয়েছে একটি বাড়ি, সেই বাড়িতে বসবাস করেন এই দম্পতি।
গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা এলাকার দত্তেরবাজার ইউনিয়নে স্বল্পপুনিয়া মৌজায় শরীফগঞ্জ গ্রামটি অবস্থিত। গ্রামের একমাত্র বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক রানা মোহাম্মদ মাসুদ মল্লিক ও স্ত্রী মাহফুজা বেগম মেরী। প্রায় ১৩০ বছর পূর্বে খান সাহেব আলী উনার বাবার নামের সাথে মিল রেখে গ্রামের নামকরণ করেন শরীফগঞ্জ।
বাড়িতে বসবাসকারীরা মূলত মোঘল সেনাপতি রাজা মানসিংহের বংশধর। মানসিংয়ের বংশধর যোজার সিং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এখানে বাড়ি নির্মাণ করে এখানে বসবাস শুরু করেন। স্কুল শিক্ষক রানা মোহাম্মদ মাসুদ মল্লিক যোজার সিংয়ের চতুর্থ বংশধর। তিনি মল্লিক আমীর আলী'র (ডাবল এমএ) ছেলে।
রানা মোহাম্মদ মাসুদ মল্লিক দীর্ঘদিন টাংগাব হাজী ইসমাঈল দাখিল মাদ্রাসা শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে অবসর নিয়ে কান্দিপাড়া আলিমুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করছেন।
ছয় একরের এ গ্রামে রয়েছে গাছ লতাপাতার সবুজের একটি মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ। গ্রামের পূর্ব দিকে আছে স্বল্পপুনিয়া গ্রাম, উত্তর দিকে আছে নয়াবাড়ী গ্রাম, দক্ষিণ দিকে আছে ময়ড়া গ্রাম, পশ্চিমে আছে সতরবাড়ী গ্রাম।
শরীফগঞ্জে রয়েছে ছয়টি পুকুর। রয়েছে শতবর্ষী ২৫ থেকে ৩০ রকমের আম, কাঠাল, জাম, লেচু, আপেল, কমলা, স্ট্রবেড়ী, আঙুরসহ ফলজ ও ঔষধি জাতের বিভিন্ন প্রজাতির এক থেকে দেড় হাজার গাছ। বাড়িতে রয়েছে আমীর আলী নামে ইসলামিক পাঠাগার।
পাশের গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, শরীফগঞ্জ গ্রাম একটি বাড়ি নিয়ে। বাড়িটিতে বর্তমানে শিক্ষক দম্পত্তির বসবাস।
পাশের গ্রামের কলেজ ছাত্র মোহাম্মদ আরমান বলেন, শরীফগঞ্জ গ্রামের পরিবেশ খুব সুন্দর। এই গ্রামের দুইজন মানুষ বসবাস করেন। তাদের দুই সন্তান ঢাকায় থাকেন। তারা সবাই উচ্চ শিক্ষিত।
বর্তমানে বাড়িতে বসবাসকারী রানা মোহাম্মদ মাসুদ মল্লিক বলেন, খান সাহেব আলী ময়মনসিংহ পৌরসভার প্রথম মুসলিম ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। উনার বাবার নামের সাথে মিল রেখে শরীফগঞ্জ নামকরণ করেন। উনি আমার দাদা হন। ১৯২২ সালে রাজা পঞ্চাদশ উনাকে রোপ্য পদক প্রদান করে খান সাহেব উপাধি প্রধান করেন। সৌদি আরবের প্রথম কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার আবদুল্লাহ আমার ভাতিজা হন। ত্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আমার ভাগিনা হয়। মাহমুদউল্লাহ বিয়াদ খান সাহেব আলীর তৃতীয় মেয়ের নাতি। আমাদের বংশে বর্তমানে ৮ জন মাস্টার্স ও ৫ জন ইঞ্জিনিয়ার রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত বিষয়ে অনার্স মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণিতে পাস করেছি। আমার বড় ছেলে ইউনাইটেড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সাইন্সে মাস্টার্সে গোল্ড মেডেল পেয়েছে। দ্বিতীয় ছেলে ডুয়েট থেকে আর্কিটেডে পড়াশোনা করছেন।
গফরগাঁও আদর্শ বিদ্যা নিকেতনের প্রিন্সিপাল এইচ কবীর টিটু বলেন, শত বছর পূর্বে উপজেলার টাংগাব ইউনিয়নে ঈশা-খাঁ ও মানসিংহের মধ্যে যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। যুদ্ধে ঈশা-খাঁ জয় লাভ করে। ময়মনসিংহের কিছু লোক জন এখানে থেকে যায়। তাদেরই বংশধর একটি বাড়ির গ্রাম শরীফগঞ্জ। এই বাড়ির সবাই উচ্চ শিক্ষিত।