‘পূজায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে উদ্বুদ্ধ করবেন ইমামরা’

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পূজার সময়ে সবাই যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকে সেজন্য মসজিদে নামাজ পরবর্তী বয়ানে ইমামরা উদ্বুব্ধ করবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সনাতন সম্প্রদায়ের সবচেয়ে প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও শান্তিপূণৃভাবে সম্পন্ন করতে প্রতিমা তৈরির স্থান, মণ্ডপে প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার সময়, পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা ও বিসর্জন পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। দুর্গাপূজা নিয়ে কোনো ধরণের গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ বিসর্জনস্থানে পর্যাপ্ত আলোকায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। শুধুমাত্র আযান ও নামাজের সময় পূজা মন্ডপে উচ্চস্বরে বাদ্য-বাজনা না বাজালে সম্প্রীতি অটুট থাকবে।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত চোরাচালান নিরোধ আঞ্চলিক টাস্কফোর্স সভা ও বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার এসব কথা বলেন। এর পর একই ভেন্যুতে বিভাগীয় রাজস্ব সম্মেলন ও জেলা প্রশাসকগণের মাসিক সমন্বয় সভা বিভাগীয় কমিশনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি-বাঙালীদের মধ্যে সহিংসতায় হতাহতদের ঘটনা অত্যন্ত অনাকাঙ্খিত ও দুঃখজনক। খাগড়াছড়িতে সহিংসতার পর পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও বান্দবানেও অশান্ত বিরাজ করছে। সাজেকে আটকা পড়েছে দেড় হাজার পর্যটক। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা ও আইন-শঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সাজেকে আটকা পড়া পর্যটকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

মনসুরাবাদস্থ বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কারণে সেবাপ্রার্থীরা নিয়মিত হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সমন্বয় সভায় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, পাসপোর্ট অফিসের যাতে দুর্নাম না হয়, সেবা নিতে গিয়ে কেউ যাতে ভোগান্তিতে না পড়েন ও কেউ যাতে কোন ধরণের সুবিধা আদায় করতে না পারেন সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। মাঝে মাঝে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের অবস্থা দেখার জন্য মনসুরাবাদ বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মো. সাইদুল ইসলামকে তাগাদা দেন তিনি।

সমন্বয় সভায় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজের গুনগত মান ঠিক রেখে বিগত দুই মাসের অগ্রগতি ও বাস্তবায়ন কতটুকু তা যথাসময়ে প্রতিবেদন আকারে প্রেরণ করতে হবে। পাহাড় কাটা রোধসহ নদ-নদীগুলোর দখল, দুষণরোধসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

সিডিএর কার্যক্রম প্রসঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, কোনো বিল্ডিং, মার্কেট ও শপিং মলের জন্য গাড়ি পার্কিং সুবিধা ছাড়া সিডিএ প্ল্যান অনুমোদন করা যাবে না। সরকারি-বেসরকারি পাহাড় ও টিলা শ্রেণির জায়গায় আবাসিক ভবন বা স্থাপনা নির্মাণের নকশা অনুমোদন দেয়া যাবেনা। এছাড়া যে সকল আবাসিক ভবনের পার্কিং প্লেস মার্কেট ও ফুড কোড বা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে সেগুলোর তালিকা করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে হবে। এগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ এবং এসব স্থাপনার তালিকা পাওয়ার পর সংশ্রিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাম্প্রতিক সময়ের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো ক্রমান্বয়ে সংস্থারসহ অফিস ও অফিসিয়াল কার্যক্রমে প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার না করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোয়ায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পৃথক সভাগুলোতে অন্যাদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নূরী, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি প্রবীর কুমার রায়, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল মান্নান, বিভাগীয় স্বাস্ত্য পরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, (চট্টগ্রাম), মো. আমিরুল কায়ছার (কুমিল্লা), মোহাম্মদ সালাউদ্দিন (কক্সবাজার), মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন (চাঁদপুর), মোহাম্মদ দিদারুল আলম (ব্রাহ্মণবাড়িয়া),শাহ মোজাহিদ উদ্দিন (বান্দরবান), রাজীব কুমার সরকার (লক্ষীপুর), মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার (ফেনী), বন সংরক্ষক ড. মোল্যা রেজাউল করিম, এফবিসিসিআইর সদস্য মাহফুজুল হক শাহ প্রমুখ।