লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য ও খবরের কাগজ প্রতিনিধি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের বাড়িতে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন দাউদপুরে তার গ্রামের বাড়িতে এ হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে। চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনা নিশ্চিত করেন।
সাংবাদিক রফিকের স্বজনরা জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে একটি মোটরসাইকেল ও একটি সিএনজি অটো রিকশা করে 8 জন সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রফিকুল ইসলামের বাড়িতে হানা দেয়। সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি টের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়।
এসময় তারা রফিকুল ইসলামের সাথে জরুরী কথা আছে বলে ঘর থেকে বাইরে ডেকে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। রফিকুল ইসলাম ঘর থেকে বের হতে অস্বীকৃতি জানালে সন্ত্রাসীরা ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। পরবর্তীতে রফিকুল ইসলাম থানা পুলিশ ও প্রতিবেশীদের ফোনে খবর দিলে প্রতিবেশীরা রফিকুল ইসলামের বাড়িতে ছুটে আসছে জেনে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলায় নিহত তার প্রতিবেশী বন্ধু মোহাম্মদ নুর আলম নুরু টেইলারের মামলার তদারকি করায় মামলার এজাহার নামীয় ও খুনের সাথে জড়িত আসামি নিকু ও তার গ্রুপের সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালাতে পারে।
এদিকে এ ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হোসাইন আহমদ হেলাল, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেল, লক্ষ্মীপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক গাজী মমিন উল্লাহ, যুগ্ন সম্পাদক আব্দুল মালেক নিরব, লক্ষ্মীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি জহির উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্বাছ হোসেন, চন্দ্রগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন পৃথক পৃথক বিবৃতিতে সাংবাদিক রফিকুল ইসলামের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানান।
তারা অবিলম্বে হামলার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও সাংবাদিক পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কায়সার হামিদ জানান, হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামে রাতের আঁধারে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এতে একদিকে নদী ভাঙনের কবলে পড়ছে গ্রামের ফসলি জমিসহ মানুষের বসত বাড়ি। ইতোমধ্যে ভিটেমাটি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শতাধিক পরিবার।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) ভোরে রামপ্রসাদের চর গ্রামের পাড় ঘেঁষে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের নলচর গ্রামের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এই ড্রেজিং কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে দিনের পরিবর্তে রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, নলচর গ্রামের আঃ বারেক, তার ছেলে মহসিন, আলী হোসেন ও হাসনাত প্রধান, হাবিবুল্লার ছেলে মো. রবিউল ইসলাম রবি, সোবহান মিয়ার ছেলে মো. জোয়েল এবং আক্কাস আলীর ছেলে মো. টিটু এই কার্যক্রমে সরাসরি যুক্ত। ব্যবহৃত ড্রেজারগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম হলো ‘এমবি তানসিল জিসান এন্টারপ্রাইজ’, ‘আল-মদিনা এন্টারপ্রাইজ’, ‘এমবি সরকার এন্টারপ্রাইজ’, ‘আল্লাহর রাসূল এন্টারপ্রাইজ’, ‘রিয়া সুপার-১,২,৩,৪’ এবং ‘এমবি তোহা লোডিং ড্রেজার’।
৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ১২ অক্টোবর চালিভাঙ্গা নৌপুলিশ একটি ড্রেজার জব্দ করে। এরপর ১৩ অক্টোবর দিবাগত রাতে যৌথবাহিনীর অভিযানে দুজনকে আটক করা হলেও অপরাধীদের কার্যক্রম থামেনি।
রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা হোসাইন মোহাম্মদ মহসিন বলেন, কয়েক বছর আগে সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় আবার রাতের আঁধারে ড্রেজিং শুরু হয়েছে। নদীর এক তৃতীয়াংশ ইতোমধ্যেই বিলীন হয়ে গেছে। শতাধিক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে শহরে আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত কয়েকদিন ধরে চালিভাঙ্গা ও রামপ্রসাদের চর এলাকায় ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে। তারা সরকারি আইন অমান্য করে প্রভাব খাটিয়ে নিজেদেরে ইচ্ছেমত বালু উত্তোলন করছে। পাশাপাশি নদীপথে চাঁদাবাজির মতো গুরুতর অপরাধেও তারা জড়িত।
এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে অভিযুক্ত মো. রবিউল ইসলাম রবি এবং অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা কল রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনের ইজারা বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর বিগত দুই বছর বালু উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও বর্তমানে তা আবার পুরোদমে শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে মুসলিমা বলেন, মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনের জন্য সরকারি কোনো অনুমোদন নেই। যেকোনো ধরনের বালু উত্তোলনই অবৈধ। যারা ইতোমধ্যে এই কাজের সঙ্গে জড়িত বা ভবিষ্যতে জড়াবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসন এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে এবং অবৈধ কার্যক্রম প্রতিহত করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংক সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের জন্য দেশের ছাত্র, তরুণ ও যুব সমাজের আশা ও আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রিক অনুপ্রেরণামূলক দেয়াল লিখন ও দেয়ালচিত্র বা গ্রাফিতির এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত দৃকপাঠ ভবনে 'পেইন্ট দ্য স্কাই, মেক ইট ইওরস: ফিউচার বাংলাদেশ ইন দ্য আইজ অব দ্য ইয়ুথ' শীর্ষক এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে তিনি একটি প্রকাশনার মোড়কও উন্মোচন করেন। এ সময় সেখানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ ও ভুটান) আবদৌলায়ে সেক, কান্ট্রি ডিরেক্টর ও প্রতিনিধি (এশিয়া ও প্যাসিফিক) ড. ভ্যালেন্টাইন আচানচো এবং বিশ্বব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ গঠনে তরুণরা যে মূল ভূমিকা পালন করে তার স্বীকৃতি বিশ্বব্যাংক বরাবরই দিয়ে এসেছে।
একটি অভূতপূর্ব ত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে সে বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে বাংলাদেশি ছাত্র ও তরুণরা তাদের সৃজনশীলতা এবং শিল্পকে ব্যবহার করেছে। ছবিগুলো তরুণদের পরিবর্তন আনয়নকারী হওয়ার সীমাহীন সম্ভাবনার কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয়।
প্রদর্শনীতে উপস্থিত জনপ্রিয় কার্টুনিস্ট ও কমিক বুক আর্টিস্ট সৈয়দ রাশাদ ইমাম তন্ময় বলেন, একটি বিপ্লবের পর এই দেয়াল লিখন বা গ্রাফিতিগুলো আমাদের বাংলা সংস্কৃতির ও ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠে। ম্যুরাল, গ্রাফিতি কিংবা কার্টুন যেহেতু সমাজের নেতিবাচক দিকগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করে থাকে তাই এগুলো নিয়ে এতদিন সেভাবে কোন উৎসব হয়নি। কিন্ত এখন হচ্ছে। আর তা তরুণদের ব্যাপারে আমাদের ধারণা একেবারে পাল্টে দিয়েছে, এ বিষয়টি খুব ভালো লাগছে।
প্রদর্শনীতে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, কুমিল্লা, রংপুর, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানসহ ১২টি জেলার তরুণ-যুবাদের আঁকা শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত দেয়াল লিখন ও দেয়ালচিত্র স্থান পেয়েছে, যা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী দেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে তুলে ধরেছে।
প্রদর্শনীটি আজ শুরু হয়েছে। এটি আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বিশ্বব্যাংক আয়োজিত এ প্রদর্শনী।
টানা ৮ ঘণ্টা চেষ্টার পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে রাজধানীর ফার্মগেটের মানসি প্লাজা নামের একটি বণিজ্যিক ভবনে লাগা আগুন। বিকাল ৫টা ১০ মিনিট নাগাদ ফায়ার সার্ভিসের ৫ ইউনিটের চেষ্টায় এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এর আগে শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
বেলা ২টার দিকে আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম।
তিনি বলেন, আজ সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে ফার্মগেটের মানসি প্লাজা নামে একটি ভবনের বেজমেন্টে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে আগুন নিয়ন্ত্রণে।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ভবনটির বেজমেন্টে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রচুর নথিপত্র রয়েছে। আগুনে এসব নথিপত্র পুড়ছে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এছাড়া আগুনে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
লিমা খানম বলেন, বেজমেন্টে রাখা বিভিন্ন জিনিসপত্র ওই জায়গা থেকে আগুন লাগতে পারে। পরে আস্তে আস্তে সেটি বেড়ে যায়। এই পর্যন্ত মোট পাঁচটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
এদিকে ছোট এই আগুনের ঘটনা হলেও নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিডিয়া সেলের দ্বায়িত্বরত এক কর্মকর্তা বলেন, ফার্ম গেইট মানসি প্লাজা ৭ তলা ভবনের বেইজমেন্টে পুরাতন মালামালে আগুন লেগেছে। সকালে আগুন লাগলেও বেজমেন্টে আগুন হওয়ার কারনে চারিদিকে ধোঁয়া আটকে যায়। যার ফলে তখন ভেতরে প্রবেশ করে আগুন নির্বাপন সম্ভব হয়নি। তখনও ৫টি ইউনিট অগ্নিনির্বাপণে কাজ করছে বলেে জানিয়েছিলেন তিনি।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন হতাহত নেই বলেও জানায় এই কর্মকর্তা।