দৈনিক পত্রিকা প্রকাশের কলাকৌশল জানল ভবিষ্যত সাংবাদিকরা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কমম, চট্টগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

প্রতিদিন সংবাদপত্রের ঝকঝকে পাতায় কীভাবে আসে এত এত সুপাঠ্য খরব? নানামুখী তথ্যের ভারসাম্য রেখে কীভাবেই বা খবরের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থিরচিত্রটি? একাডেমিক পাঠ্যক্রমে সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীদের জন্য অনেকটা অবশ্যম্ভাবী তথ্য এসব। তবে কাগুজে তত্ত্ব-তথ্যের সঙ্গে বাস্তবতার ফারাক বিস্তর। তাই সাংবাদিকতার পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জনে সংবাদপত্রের নাড়ি-নক্ষত্র জানতে হবে হাতে-কলমে। সেজন্যই সরেজমিনে পেশাদার সংবাদপত্রের দৈনন্দিন কর্মযজ্ঞ ঘুরে দেখতে দৈনিক পূর্বকোণ পরিদর্শনে এসেছিল একদল ভবিষ্যৎ সাংবাদিক।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দিনভর দেশসেরা এই আঞ্চলিক দৈনিকটির বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন নগরীর পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের আড়াই ডজন শিক্ষার্থী। গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনা এবং সংবাদপত্রের পৃষ্ঠাসজ্জা কোর্সের অংশ হিসেবে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সংবাদপত্র পরিদর্শনের এই উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের। সংবাদপত্রের নানা বিষয় শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে আত্মস্ত করার এই কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দিলরুবা আক্তার।
শুরুতে দুপুর ১২টায় মুদ্রণ ও অনলাইন সাংবাদিকতার বহুমুখী ধারণা, চ্যালেঞ্জ, সংবাদপত্রের পৃষ্ঠাসজ্জা, মালিকানা ও প্রেষণা, বিজ্ঞাপন কৌশলসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন পূর্বকোণের জ্যেষ্ঠ কর্মীরা। এ সময় সংবাদমাধ্যমটির নগর সম্পাদক নওশের আলী খান বলেন, যারা ভবিষ্যতে সাংবাদিকতায় আসতে চান তাদের সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। চোখ কান খোলা রাখতে হবে। চারপাশে কী ঘটছে সেসব বিষয়ে তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখতে হবে। সবার আগে বাংলা ভাষাটা ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে। যে ভাষায় আপনি জনগণের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করবেন, সে ভাষাটি নখদর্পণে না থাকলে আপনি বেশি দূর এগুততে পারবেন না।
প্রধান প্রতিবেদক ও পূর্বকোণঅনলাইন হেড সাইফুল আলম বলেন, একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা তথ্য সংগ্রহ, সংবাদ তৈরি, প্রমিত উচ্চরণ, কম্পিউটার ও সাধারণ প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতা অর্জন করতে পারলে মাঠের সাংবাদিকতায় ভালো করবে। সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্জন করা জ্ঞানের বাস্তব প্রয়োগের দক্ষতা অর্জন খুবই জরুরি। আবার সাংবাদিকতা শুধু একটি পেশা না, এটা দেশ ও সমাজের প্রতি একটি দায়বদ্ধতাও বটে। তাই যারা সাংবাদিকতায় আসতে চান, সবার আগে তাদের দেশপ্রেম থাকা জরুরি। তাই সবার আগে দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে।
সহকারী অধ্যাপক দিলরুবা আক্তার বলেন, এখনকার এই প্রতিযোগিতার সময়ে খুব বেশি ব্যতিক্রমধর্মী না
হলে যে কোনো গণমাধ্যম অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। পূর্বকোণ সেখানে অনেকটা পথপ্রদর্শক হিসেবেই ভূমিকা রাখছে। নানা ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগের কারণে শুরু থেকেই সব মহলে বেশ সমাদৃত হয়েছে সংবাদপত্রটি। আশা করছি, সরেজমিনে এই পরিদর্শনের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান শিক্ষার্থীরা তাদের একাডেমিক শিক্ষার সঙ্গে সমন্বয় করবে। ভবিষ্যতে এটি তাদের পেশাগত জীবনেও বেশ কাজে আসবে বলে আমার বিশ্বাস।
পরবর্তীতে দুপুর দু’টার দিকে দৈনিক পূর্বকোণের বার্তাকক্ষ, ডিজিটাল বিভাগ, কম্পিউটার বিভাগ, ডিজিটাল স্টুডিও এবং ছাপাখানা ঘুরে দেখেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় পৃষ্ঠাসজ্জার নানা বিষয়ে বিশদ বর্ণনা ও শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন সংবাদমাধ্যমটির বার্তা সম্পাদক হাসনাত মোরশেদ। ডিজিটাল বিভাগ ও স্টুডিও নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন নিজস্ব প্রতিবেদক সরোয়ার আহমদ। বিজ্ঞাপন কৌশল ও ছাপাখানার নানা বিষয় শিক্ষার্র্থীদের বুঝিয়ে দেন মহাব্যবস্থাপক মোজাম্মেল জিলানী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক তাসলিমা আক্তার ইরিন, দৈনিক পূর্বকোণের সহ-সম্পাদক এহসানুল হক, পূর্বকোণের নিজস্ব প্রতিবেদক ও বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সারোয়ার আহমদ, ইমরান বিন সবুর, আরাফাত বিন হাসান প্রমুখ।