নতুন শিক্ষাবর্ষে রাজশাহীতে বই সংকট, সমাধানে কাজ করছে প্রশাসন
রাজশাহীর স্কুলগুলোতে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে যাচ্ছে। তবে বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে সক্ষম হবে না শিক্ষকরা।
রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ১৩ লাখ ৩ হাজার ৩৮৬ কপি বইয়ের চাহিদা রয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা পর্যন্ত রাজশাহী জেলার চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত বই পায়নি।
রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুসারে, রাজশাহী জেলায় মাধ্যমিক (বাংলা ভার্সন) শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ২৮ হাজার ৯৬০ জন। এর বিপরীতে ৩৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৭৫ কপি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে মাত্র দুটি শ্রেণীর জন্য তিনটি করে বই হাতে এসেছে।
এছাড়া, দাখিল শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৬ হাজার ১৫০ জন এবং তাদের জন্য চাহিদা রয়েছে ৭ লাখ ১০ হাজার ১৫০ কপি বই।
মাধ্যমিক (ইংলিশ মিডিয়াম) শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৪০ জন, এবং এর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ১১ হাজার ৩৮৫ কপি বই।
ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৪ হাজার ২০০ জন, এবং তাদের জন্য চাহিদা রয়েছে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৮৮০ কপি বই।
কারিগরি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৬০০ জন, এবং এর বিপরীতে ৩ লাখ ৫১ হাজার ৫০৫ কপি বই চাহিদা রয়েছে।
মোট চাহিদা ৪৭ লাখ ৬৪ হাজার ২৯৫ কপি বই। তবে এখন পর্যন্ত রাজশাহী জেলা অফিসের হাতে মাত্র দুটি শ্রেণীর ৩টি করে বই পৌঁছেছে।
রাজশাহী কলিজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. নূরজাহান বেগম জানান, এখনো নতুন বই হাতে পাইনি, তবে পুরনো বই দিয়েই পাঠদান শুরু করবো। সাধারণত বছরের শুরুতে অতিরিক্ত শিক্ষাক্রম থাকে, তাই পাঠদান চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করছি শিগগিরই বই চলে আসবে।
রাজশাহী সরকারি ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ড. শাহনাজ বেগম বলেন, আমরা এখনও একটিও বই পাইনি, মাধ্যমিক বা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে কোনো বই নেওয়ার জন্য আমাদের ডাকা হয়নি। বই না পাওয়ায় আমরা সাংস্কৃতিক কার্যক্রম শুরু করবো। এগুলো শেষ হতে অন্তত ১৫ দিন সময় লাগবে। এরপর বই পাওয়ার সাথে সাথে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করবো।
রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ.কে.এম আনোয়ার হোসেন জানান, এবার কোনো বই আসেনি, তবে পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে বই আনার চেষ্টা করছি। আগামীকাল প্রথম দিনে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর বই অন্য জেলা থেকে নেওয়া হবে এবং সেগুলো বিতরণ করা হবে।
রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল আজিজ সরদার বলেন, আজ পর্যন্ত মাদ্রাসার বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের সপ্তম শ্রেণীর বই বিতরণ করা হয়েছে, এবং স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর বই বিতরণ করা হচ্ছে। তবে অন্য শ্রেণীর বই আসেনি। মাত্র একটি শ্রেণীর বই এসেছে, বাকি বইগুলো আসতে বেশ সময় লাগবে বলে মনে হচ্ছে।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার বলেন, রাজশাহীতে বই আসছে তবে অল্প অল্প করে। দুটি শ্রেণীর মাধ্যমিক বই এসেছে, তবে প্রথমিকের কোনো বই এখনও হাতে পাইনি। অন্যান্য জেলা থেকে বই সমন্বয়ের কাজ চলছে। কবে নাগাদ বই আসবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, তবে আশা করছি খুব দ্রুত বই পৌঁছাবে। শিগগিরই বই সংকট কাটিয়ে স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে।